TMC Manifesto Highlights: প্রথম দফার প্রচার শেষ, কাউন্টডাউন শুরু, তৃণমূলের ইস্তেহার হাইলাইটস
West Bengal Assembly Election 2021: তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহারে ন্যূনতম রোজগারের ব্যবস্থা করা সহ একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা: ২০১১ সালে পরিবর্তনের পর ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরে তৃণমূল কংগ্রেস। এবারও ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। সেই লক্ষ্যে তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহারে ন্যূনতম রোজগারের ব্যবস্থা করা সহ একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
বিধানসভা ভোট শুরুর ১০ দিন আগে ১৭ মার্চ দলের ইস্তেহার প্রকাশ করে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ক্ষমতায় এলে সাধারণ পরিবারকে মাসে পাঁচশো টাকা এবং তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির আওতাভুক্ত পরিবারগুলিকে মাসে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরলে বাড়ানো হবে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ভাতা।’
এবারের ভোটের আগে তৃণমূলের ইস্তেহারে চমক, বাংলার প্রত্যেক পরিবারের ন্যূনতম মাসিক আয় সুনিশ্চিত করার জন্য প্রকল্প। তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাঁরা ক্ষমতা ফিরলে নতুন প্রকল্প শুরু করা হবে। যেখানে ১ কোটি ৬০ লক্ষ যোগ্য জেনারেল ক্যাটেগরির পরিবারের কর্ত্রীকে মাসিক ৫০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি পরিবারের কর্ত্রীকে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। অর্থ্যাৎ যোগ্য জেনারেল কাস্ট পরিবার বছরে ৬ হাজার টাকা এবং এসসি, এসটি এবং ওবিসি পরিবার বছরে ১২ হাজার টাকা করে পাবে।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রাজ্যের সমস্ত মানুষকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের আগে সেই প্রকল্পে বিপুল সাড়া মিলেছে। এবার প্রতিটি পরিবারের জন্য ন্যূনতম মাসিক আয় নিশ্চিত করতে নতুন প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি কি বিধানসভা ভোটে মাস্টারস্ট্রোক হতে পারে? বিরোধীরা অবশ্য একে ভোট গিমিক বলে মনে করছে।
‘সর্বজনীন ন্যূনতম আয়, বা ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম’। সংক্ষেপে ইউবিআই। ইউবিআই-এর মূল নীতি হল, কোনও শর্ত ছাড়াই প্রতিটি নাগরিকের কাছে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সরকারি অর্থ হস্তান্তর। এর ধাঁচেই প্রকল্প বাংলায় চালু করার প্রতিশ্রুতি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৭১ সালের লোকসভা নির্বাচনে গরিবি হঠাওয়ের ডাক দিয়েছিলেন ইন্দিরা গাঁধী। গত লোকসভা ভোটের আগে দারিদ্র দূরীকরণের বার্তা দিয়ে ময়দানে নেমেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের ইস্তেহারে মূল অস্ত্র ছিল ন্যায় প্রকল্প। যার উদ্দেশ্য ছিল গরিবের ন্যূনতম রোজগার নিশ্চিত করা। কংগ্রেস প্রতিশ্রুতি দেয়, ক্ষমতায় এলে গরিব পরিবারের অ্যাকাউন্টে বছরে সর্বোচ্চ ৭২ হাজার টাকা পর্যন্ত সরাসরি ট্রান্সফার করা হবে। দেশের ২০ শতাংশ গরিব পরিবার এর ফলে উপকৃত হবে বলে দাবি করেছিলেন রাহুল গাঁধী। শেষমেশ অবশ্য লোকসভা ভোটে মোদি-ঝড়ে কংগ্রেস উড়ে যায়। এবার ন্যূনতম রোজগার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি বাংলার বিধানসভা ভোটে বাজিমাত করতে পারবেন?
মোদি সরকারের পিএম কিষাণ সম্মান নিধি, না মমতা সরকারের কৃষক বন্ধু? কোন প্রকল্প বেশি ভাল? তা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত দীর্ঘদিনের। ৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে এসে নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বকেয়া-সহ মিটিয়ে দেওয়া হবে। তৃণমূলের ইস্তেহার প্রকাশ করতে গিয়ে এর পাল্টা চাল দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রতিশ্রুতি, তৃণমূল ক্ষমতায় এলে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে টাকার পরিমাণ বাড়ানো হবে। যদিও, বিরোধীরা এই ঘোষণায় গুরুত্ব দিতে নারাজ।
ভোটের আগে তৃণমূল সরকারের দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। সেকথা মাথায় রেখে, তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তারা ক্ষমতায় ফিরলে বছরে চার মাস করে এই কর্মসূচি চালানো হবে। তৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করেছেন, ‘কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, দুয়ারের সরকার প্রকল্প চলবে। বছরে ৪ বার করে দুয়ারে সরকার হবে। অগাস্ট সেপ্টেম্বর এবং নভেম্বর ডিসেম্বরে দুয়ারে সরকার হবে।’
পাশাপাশি স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, বিধবা ভাতা থেকে কর্মসংস্থান নিয়েও একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি রয়েছে তৃণমূলের ইস্তেহারে।