Mothers Day 2021: 'মম বা মাম্মা নয়, কৃশব যেন আমায় মা বলে ডাকতে শেখে'
'মা হও তখন বুঝবে'... কথাটা বহুবার শুনেছি। কিন্তু কোনওদিনও উপলব্ধি করিনি আগে। মাতৃত্বের অনুভূতি আমায় বুঝিয়েছে কৃশব। অন্য কারও কোল থেকে আমায় দেখলেই ও কেঁদে ওঠে। আমার কাছে আসার জন্য ছটফট করে। এখনও ঠিক করে মা বলতে শেখেনি, কিন্তু আমার মনে হয়, কৃশব যেন ডাকছে.. মা..' থামলেন পূজা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা: 'মা হও তখন বুঝবে'... কথাটা বহুবার শুনেছি। কিন্তু কোনওদিনও উপলব্ধি করিনি আগে। মাতৃত্বের অনুভূতি আমায় বুঝিয়েছে কৃশব। অন্য কারও কোল থেকে আমায় দেখলেই ও কেঁদে ওঠে। আমার কাছে আসার জন্য ছটফট করে। এখনও ঠিক করে মা বলতে শেখেনি, কিন্তু আমার মনে হয়, কৃশব যেন ডাকছে.. মা..' থামলেন পূজা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একরত্তিকে নিয়ে তাঁর কত স্বপ্ন, কত আশা। সবকিছু যেন ফিকে করে দিয়েছে অতিমারী পরিস্থিতি। প্রথম মাতৃদিবসে ছোট্ট কৃশবের দিকে তাকিয়ে আনন্দের সঙ্গে একটা ভয় হয় পূজার। জন্ম থেকেই ঘরবন্দি ছেলে। করোনার একের পর এক ঢেউয়ে বিপর্যস্ত সবকিছু। স্বাভাবিক শৈশব পাবে তো ও?
আজ সাত মাস বয়স হল ছেলের। পূজার মাতৃত্বেরও সাত মাস বয়স হল। কেমন করে সময় কাটে কৃশবের সঙ্গে? পূজা বলছেন, 'ওর জন্ম থেকেই আমি ওর কাছে থাকতে পেরেছি। তখন লকডাউন চলছে। আমি আর কুণাল (কুণাল বর্মা) চেষ্টা করি পুরো সময়টাই ওকে দিতে। এখন ওর সুবিধা মতই রোজকার রুটিন হয়। ও রাত্রে ৩-৪ ঘণ্টা ঘুমায়। একটা সময় আমি খুব ঘুমকাতুরে ছিলাম। না ঘুমিয়ে থাকতে পারতাম না। কৃশব আমার সব অভ্যাস বদলে দিয়েছে। এখন মনে হয় গোটা একদিনও না ঘুমিয়ে থাকতে পারি। কষ্ট হবে না। এখন ও খাওয়া নিয়ে একটু ঝামেলা করে। সবকিছু খেতে চায় না। আমি আর কুণাল কখনও চাই না ওর টিভি বা মোবাইলের অভ্যাস হোক। গান গেয়ে ওকে খাওয়াই, কান্না থামাই।'
করোনা পরিস্থিতিতে আপাতত স্থগিত সমস্ত শ্যুটিং। কিন্তু মা হওয়ার পর ওয়ের সিরিজের শ্যুট করেছেন পূজা। হাতে আরও কাজ রয়েছে। ছোট্ট কৃশবকে বাড়িতে ছেড়ে যেতে হয় নায়িকাকে। পূজা বলছেন, 'কৃশব এখনও কিছু বলতে পারে না। কিন্তু আমি আশেপাশে না থাকলে সেটা ও অনুভব করতে পারে। ও যত বড় হচ্ছে, আমার কাজে বেরনো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কৃশবকে ছেড়ে বেরোলে নিজেকে দোষী মনে হয়। মন খারাপ করে। শ্যুট করতাম ঠিকই কিন্তু মন পড়ে থাকত বাড়িতে। মা-বাবা আছেন.. তাও।' তাহলে কাজ? হাসতে হাসতে পূজা বললেন, 'সেটাও কৃশবের হিসেব মতই হবে। টানা শ্যুটিং করা আমার পক্ষে এখন সম্ভব নয়। অল্প কিছুদিন কাজ করব, ১০-১৫ দিন। বাকি সময়টা ছেলের। এখনই আমি খুব ভারি কোনও কাজ শুরু করব না।'
ছেলেকে নিয়ে কী কী স্বপ্ন দেখেন পূজা? 'দেখতাম' হতাশ গলায় উত্তর পূজার। তারপর বললেন, 'আমরা যে শৈশবটা পেয়েছি, ২০২০ তে যারা জন্মেছে তারা সেটা পাবে তো? নাকি বাকি জীবনটা এইভাবে ভয়ে ভয়ে ঘরবন্দি হয়ে থাকবে! খেলতে যাওয়া নেই, বন্ধুরা নেই, স্কুলের মজা নেই.. ভয় লাগে খুব। এখন শুধু মনে হয় ওরা একটা স্বাভাবিক শৈশব পাক। তারপর সব হয়ে যাবে। আর হ্যাঁ, আমার ইচ্ছা, কৃশব আমায় মা বলে ডাকুক। মাম্মা বা মম নয়। মায়ের মত মিষ্টি শব্দ পৃথিবীতে আর নেই।'