Kangana Ranaut: 'বাংলাদেশ নিয়ে এখানে কোনও আন্দোলন হচ্ছে না, এটা আমায় ভাবাচ্ছে', কলকাতায় এসে বলে গেলেন কঙ্গনা
Kangana Ranaut on Bangladesh: আজ বিমানবন্দরে নেমে কঙ্গনা বলেন, 'বাংলাদেশে যা হচ্ছে, হিন্দুদের জন্য তা রীতিমতো চিন্তার'
কলকাতা: কলকাতায় পা রেখেই তাঁর গলায় শোনা গেল বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তার সুর। আজই একটি কাজে কলকাতায় এসেছিলেন কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut)। সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস পাঁচ দিন ধরে জেলবন্দি। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উত্তাল পরিস্থিতি হয়েছে বাংলাদেশে। একের পর এক হিন্দুদের আক্রমণ হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসছে। আর এই পরিস্থিতিতেই বাংলাদেশ নিয়ে মুখ খুললেন কঙ্গনা। বললেন, তিনি কী ভাবছেন বাংলাদেশ নিয়ে।
আজ বিমানবন্দরে নেমে কঙ্গনা বলেন, 'বাংলাদেশে যা হচ্ছে, হিন্দুদের জন্য তা রীতিমতো চিন্তার। ওখানে হিন্দুদের হত্যা করা হচ্ছে, সাধু-সন্তদের যে দুর্দশা হচ্ছে সেটা আমাদের সবার জন্য ভীষণ চিন্তাজনক। কিন্তু এইসব নিয়ে এখানে কোনও আন্দোলন হচ্ছে না। 'অল আইজ় অন বাংলাদেশ' বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও আন্দোলন হচ্ছে না। সেটাও আমায় খুব ভাবাচ্ছে। এটুকুই বলতে পারি যে এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমি বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছি। ওখানে যে হিন্দুরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে রয়েছি। জয় শ্রী রাম। শ্রীকৃষ্ণ ওঁদের রক্ষা করুন'।
কোনও সংস্থাকে নিষিদ্ধ করার কোনও আলোচনা সরকারের মধ্যে হয়নি। ইসকনকে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে এমনই দাবি করা হল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে। চাপে পড়ে সুর নরম করছে ঢাকা? উঠছে প্রশ্ন। অন্যদিকে তাদের সম্পর্কে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশের ইসকন। হিন্দু অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর লাগাতার আক্রমণের কারণে, আন্তর্জাতিক স্তরে চাপ বাড়ছিলই... তারপর ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছে দেশ থেকে বিদেশ... এরই মধ্যে বাংলাদেশে ইসকনকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিষিদ্ধ করার আবেদনের মামলা খারিজ করে দিয়েছে, সেদেশের হাইকোর্ট।
সাঁড়াশি চাপে শেষমেশ কি ইসকন প্রসঙ্গে সুর নরম করছে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার? না কি তলেতলে ইনসকনকে নিষিদ্ধ করতে শলাপরামর্শ করছে তারা? বৃহস্পতিবার রাতে ইউনূস সরকারের তরফে জানানো হয়েছে... কোনও সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে আলোচনা হয়নি। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলছেন, 'দাবি অনেকই উঠতে পারে। দাবির সপক্ষে মানুষ অনেক কর্মসূচিও দিতে পারে। ব্যক্তির অপরাধের সাথে সংস্থার অপরাধকে আমরা জড়িয়ে ফেলছি না। এখন একটা সুর্নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর ব্যাপারে একটা আইনি প্রক্রিয়া চলছে। তিনি অভিযুক্ত হতেও পারেন, অভিযুক্ত নাও হতে পারেন, সেটা আদালত দেখবে।'
কিন্তু উল্টোদিকে যে বৈষম্য়বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ইউনূস সরকারের উপদেষ্টা হয়ে বসে আছেন, বাংলাদেশ চালাচ্ছেন, সেই সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লা প্রকাশ্য় সভা থেকে ইসকনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমাদের দেশে সব ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। আমরা সবার অধিকার রক্ষায় কাজ করব। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করলে বাংলাদেশে এক হাত জায়গাও দেওয়া হবে না। আমার ভাই সাইফুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ইসকনকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে।...এই ইসকন জঙ্গি, তারা স্বৈরাচারের সঙ্গী...আমরা ভুলে যাইনি, কীভাবে এই ইসকন স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের সহায়তায় ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করা হোক, আমরা বাংলাদেশের মানুষ সেই ষড়যন্ত্র রুখে দেব।
আইনজীবীর মৃত্য়ুকে হাতিয়ার করে ইসকনের ওপর মিথ্য়া দোষ চাপিয়ে কট্টরপন্থী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজিদুর রহমান হুমকির সুরে বলেছেন, প্রকাশ্য দিবালোকে আদালত প্রাঙ্গণে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার বিচার হলো ফাঁসি। শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে। কার্যত ইসকনের ঘাড়েই বিশৃঙ্খলার দোষ চাপিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ইসকন সমর্থকদের এসব কর্মকাণ্ডের পেছনে দেশের বাইরের ইন্ধন থাকতে পারে। এ ছাড়া, দেশের ভেতরে বিভিন্ন পার্টি আছে—তাদেরও ইন্ধন থাকতে পারে।
অর্থাৎ একটা বিষয় স্পষ্ট প্রকাশ্য়ে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন মহম্মদ ইউনূস সরকার কিছু না বললেও, পরোক্ষে তাদের একাংশ ইসকনের ঘাড়েই দোষ চাপানোর মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে!
এমনকী সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় গ্রেফতারের নেপথ্য়েও যুক্তি সাজাচ্ছে তারা। যদিও ইসকন প্রথম দিন থেকে বলে আসছে, আইনজীবী হত্য়ার সঙ্গে কিংবা কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ ইসকন নিয়ে মহম্মদ ইউনূস সরকার শেষ অবধি কী করবে, মোল্লাতন্ত্রের কাছে মাথা নত করবে না কি শেষ অবধি নিরপেক্ষ অবস্থান নেবে, তা কিন্তু এখনও স্পষ্ট নয়।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।