Rudranil Ghosh Exclusive: 'ময়দান'-এর জন্য যে ভালবাসা পাচ্ছি, তার জন্য টলিউডকেই কৃতজ্ঞতা জানাব: রুদ্রনীল ঘোষ
Maidan Exclusive: রাজনীতির ময়দান, নাকি ময়দানের রাজনীতি... ছবি মুক্তির পরে কোনটাকে এগিয়ে রাখতে চান রুদ্রনীল?
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: সামনেই লোকসভা ভোট, কাজেই সরগরম রাজনীতির ময়দান। ভোটে লড়ার টিকিট তিনি পাননি বটে, আপাতত 'ময়দান'-এ তাঁকে দেখতেই টিকিট কিনছেন দর্শক! অজয় দেবগণ (Ajay Devgan) অভিনীত 'ময়দান' ছবিতে আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন, প্রশংসিত হয়েছেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। ছবি মুক্তির পরে, তাঁরই বাড়িতে, অভিনেতা-রাজনীতিবিদের মনের কথা শুনতে হাজির এবিপি আনন্দ।
রাজনীতির ময়দান, নাকি ময়দানের রাজনীতি... ছবি মুক্তির পরে কোনটাকে এগিয়ে রাখতে চান রুদ্রনীল? অভিনেতা বলছেন, 'ময়দান সারা দেশে মানুষের ভালবাসা ও শুভেচ্ছা কুড়োচ্ছে। আসলে ময়দান একটা গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস যেটা ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। এই ছবিতে অজয় দেবগণ যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তা সৈয়দ আবদুল রহিমের। তিনি ফুটবলের একজন কোচ। তিনি কীভাবে, কত বাধা কাটিয়ে, নিজের সবটা দিয়ে, পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনী গোস্বামীদের মতো মানুষজনকে নিয়ে সোনা জিতলেন, সেই গল্পই বলা হয়েছে। আমার চরিত্র একজন ক্রীড়া প্রশাসকের। আমি কৃতজ্ঞ আমার প্রযোজক ও পরিচালকের ওপরে যাঁরা আমায় কাস্ট করেছেন। অজয় দেবগণ, গজরাজ রাওয়ের মতো দুঁদে অভিনেতাদের সঙ্গে টানা অভিনয় করে গিয়েছি। সেই কাজ দেখে যদি মানুষ আমায় পছন্দ করেন, আমার নিজের মনে হয় এই প্রশংসার অধিকারী আমার টলিউডের সমস্ত মানুষ যাঁরা আমায় বাঁচিয়ে রেখেছেন। নাহলে এই কাজটাই করা হত না।'
'ময়দান'-এর সাফল্য কী রাজনীতির অভিমান মিটিয়ে দিল? একটু হেসে রুদ্রনীল বললেন, 'আমি ঠিক অভিমানী নই। তবে অস্বীকার করব না যে মনখারাপ হয়েছিল। দলের মধ্যে থেকেই আমার লড়াই চলছে। দল যা দায়িত্ব দিচ্ছে সেগুলো পালন করার চেষ্টা করছি। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে আমি একজন শিল্পী। তবে আমি রাজনৈতিকভাবে দেখতে সবটা ভালবাসি। 'ময়দান' ছবিতে রহিম সাবকে বাধা দেওয়ার জন্য যে বড় বড় দুটি পাথর সামনে ছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম গজরাজ রাও ও রুদ্রনীল ঘোষ। আমার চরিত্রের নাম শুভঙ্কর সেনগুপ্ত। তবে আমার মনে হয়, টিকিট না দিয়েও দল আমায় শেখবার জন্য আরও বড় সুযোগ করে দিল। আমায় অনেক বিজেপি নেতার সঙ্গেই সঙ্গেই স্টার ক্যাম্পেনার রাখা হয়েছে। আর ছবির ক্ষেত্রে দর্শক আমায় স্টার ক্যাম্পেনার হিসেবে দেখছেন। প্রশংসা জোর করে পাওয়া যায় না, যোগ্যতা সব জায়গাতেই অর্জন করতে হয়। মাঠ ছাড়লে চলবে না, ময়দান ছাড়লে চলবে না।'
একসময়ে রুদ্রনীল বলেছিলেন, তিনি নাকি টলিউডে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। কিন্তু টলিউডে কাজের সুযোগ না পেয়ে যদি বলিউডে যেতে হয়, তা কি শাপে বর নয়? রুদ্রনীল বলছেন, 'সাপে বর না সাপে পাইথন তা আমি জানি না। তবে একটা কথা আমি সবসময়ে বলে এসেছি, শুধু সিনেমা নয়, থিয়েটারের ক্ষেত্রেও অনেক স্বৈরাচারী বিষয় চলছে। সেটা বন্ধ হয়ে গিয়ে যোগ্যরা সুযোগ পাক। মুম্বইতেও বহু মানুষ বহু রাজনৈতিক মত-পথকে পছন্দ করেন। তবে তার প্রভাব কাজে পড়তে দেন না। কূপমন্ডুকতা একটা ইন্ডাস্ট্রিকেই পিছিয়ে দেয় কেবল। 'ময়দান'-এর সফরটা ৭ বছরের। আমি পাকাপাকিভাবে ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরেই আমার কাজ অদ্ভুতভাবে কমতে শুরু করে। এগুলো ছোট মনের পরিচয়। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ২০১৯ সালে যখন যশরাজ ফিল্মসের দরজা ঠেলে আমি ভিতরে ঢুকছি তখন মনে হচ্ছিল আমার কাঁধে অনেক দায়িত্ব। সেই মিঠুনদা থেকে শুরু করে বর্তমানে যীশু, শাশ্বত আমার বন্ধুরা.. সবাই বলিউডে বাংলার ঐতিহ্যকে বয়ে নিয়ে গিয়েছে। বাংলার শিল্পী, লেখকদের নিয়ে যে ভাল ধারণা রয়েছে, তাকে আমি কখনও ম্লান না করে ফেলি যেন। প্রথম শটই ছিল অজয় দেবগণজীর সঙ্গে, তর্ক-বিতর্ক ঝগড়ার একটা দৃশ্য। এ যেন বাঘের মুখে পড়া। ভগবানের অশেষ কৃপা দর্শকদের ছবিটা ভাল লেগেছে। আমি আবার বলছি, যতটুকু ভালবাসা আমি পাচ্ছি তার কৃতিত্ব টলিউডেরই। গজরাজ রাও দারুণ বাংলা বলেন। আমায় প্রথমদিনই বলেছিলেন, 'শাশ্বত আ গ্যায়া থা। আমি অপেক্ষা করছিলাম রুদ্রনীল ঘোষ কবে আসবে।' আমি চমকে গিয়েছিলাম। উনি পরে আমায় বলেছিলেন, 'শুধু বাংলা বলতে কেন, আমি মাছ-ভাতও খাই।' প্রিমিয়ারেও আমি ভীষণ ভালবাসা পেয়েছি। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি তার ময়দানে আমার যেভাবে পরীক্ষা নিয়েছেন, আমায় যেভাবে বাঁচিয়ে রেখেছে, তার গৌরব বাড়াতে যেন সামান্য হলেও আমি কিছু করতে পারলাম।'
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।