Aindrila Sharma: 'মা অসুস্থ হলে, বাবা যেমন দৌড়াদৌড়ি করেন', তেমনই তো ঐন্দ্রিলার পাশে সব্যসাচী, তাঁদের 'গ্লোরিফাই' করা বন্ধের আর্জি অভিনেতার
Sabyasachi Chowdhury Post: অভিনেতার কথায়, কত সাধারণ মানুষকে, কত সাধারণ জুটিকেই তো দিনের পর দিন হাসপাতালের বাইরে ফুটপাথে রাত কাটাতে দেখা যায়। তাঁরাও একে অপরকে ভালবাসে বলেই তো সেটা করে।
কলকাতা: ২ সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এখনও হাসপাতালে ভর্তি অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)। তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতির আশায় সকলে। ইন্ডাস্ট্রির মানুষ, অনুরাগী সকলেই অপেক্ষায়, কবে ঐন্দ্রিলা ফিরে আসবে। আর ঐন্দ্রিলার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে তাঁকে নিয়ে বাড়ি ফেরার জেদ ধরে যিনি রয়েছেন, তিনি সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)। প্রত্যেক মুহূর্তে চোখে চোখে রাখছেন প্রিয় মানুষটিকে। ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্য নিয়ে যখন উত্তাল গোটা সোশ্যাল মিডিয়া, তখন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি দীর্ঘ পোস্ট করলেন অভিনেতা। তুলে ধরলেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। জানালেন দীর্ঘ এবং এখনও চলতে থাকা লড়াইয়ের কাহিনি। দিলেন গভীর শিক্ষা।
'বিপদে পড়লে খড়কুটো অবধি আঁকড়ে ধরতে' হয়
শুক্রবার রাতের দিকে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট লেখেন সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের খবর দেন। কোন অবস্থা থেকে ফিরে আসার লড়াই চালাচ্ছেন তিনি, জানান। কারা কারা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেই কথা জানিয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপনও করেন। তবে কিছু জিনিসে খানিক দুঃখ বা রাগ প্রকাশও করেন বলা চলে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্য নিয়ে গুজব ছড়ানো এবং সেই নিয়ে সমালোচনার ঘটনা আমাদের সকলের জানা। সেই প্রসঙ্গে উষ্মা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই অভিনেতার কথায় তাঁদের দুজনকে নিয়ে 'মাতামাতি'ও এবার কমুক। অভিনেতার কথায়, 'একটা সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ চেষ্টা করে তার কাছের মানুষের পাশে থাকতে, বিপদে পড়লে খড়কুটো অবধি আঁকড়ে ধরতে। সেটাই তো এতদিন স্বাভাবিক বলে জেনে এসেছি।' তাহলে প্রিয় মানুষের দুর্দিনে তাঁর পাশে যে দাঁড়াতে হবে, সেটাই তো স্বাভাবিক! ঐন্দ্রিলা তো সব্যসাচীর প্রাণের প্রিয়, তাঁর এমন অসুখে সে যে ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকবে, তাতে অবাক-বিস্মিত-উচ্ছ্বসিত-অভিভূত কোনওটা হওয়ারই কোনও দরকার থাকে কি? এটা তো মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। উপমা টেনে অভিনেতা লেখেন, 'আমার মা অসুস্থ হলে, বাবা যেমন দৌড়াদৌড়ি করেন, গত দুই বছর ধরে আমিও সেটাই করেছি।... ইহ জীবনে কয়েক শত জুটিকে দেখেছি এসএসকেএম’এর বাইরের ফুটপাথে রাত কাটাতে, ভালোবাসে বলেই তারা থাকে।'
সব্যসাচী চৌধুরী ও ঐন্দ্রিলা শর্মা, এই নাম দুটি যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁদের সম্পর্কের কথা বিনোদন প্রেমী সকলেই জানেন। ঐন্দ্রিলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া থেকে তাঁকে হাতে ধরে সুস্থ করে সেটে ফেরানো, পুরোটার অবিচ্ছেদ্য অংশ সব্যসাচী। তাঁদের একে অপরের প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা, বন্ধন মানুষকে মুগ্ধ করেছে বারবার। খুব স্বাভাবিকভাবেই ঐন্দ্রিলা আবার অসুস্থ হতেই সব্যসাচী রয়েছেন তাঁর সঙ্গে। আর তাঁদের একসঙ্গে করে সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে জয়জয়কার। নেটিজেনরা তাঁদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু সব্যসাচীর পোস্টের শেষের দিকে এসে মনে হল, এই উচ্ছ্বাসে এবার ভাটা পড়ুক, সেটাই চাইছেন অভিনেতা। তাঁর কথায়, 'কিছু পুরোনো ছবি আর ভিডিও সাজিয়ে, গান বাজিয়ে সেটাকে গ্লোরিফাই করা বন্ধ করা উচিত। এমন কি একটা লকডাউনের সময়কার তারাপীঠের ভিডিও পর্যন্ত ঐন্দ্রিলার নাম করে ঘুরপাক খাচ্ছে দেখলাম। আমি ঠিক জানি না, এগুলো করে বোধহয় তোমাদের চ্যানেল বা পেজ পয়সা পায় কিন্তু বিষয়টা আমার চোখে খুবই দৃষ্টিকটু লাগে।'
অভিনেতার কথায়, কত সাধারণ মানুষকে, কত সাধারণ জুটিকেই তো দিনের পর দিন হাসপাতালের বাইরে ফুটপাথে রাত কাটাতে দেখা যায়। তাঁরাও একে অপরকে ভালবাসে বলেই তো সেটা করে। তাঁদের চেষ্টায় এতটুকু খামতি তো থাকে না। কিন্তু তাঁদের নিয়ে চর্চা হয় না। 'তবু পরিচিত মুখ বলে আমরা চর্চিত হই, তারা নয়। আসলে কি জানো, সে খবর বিক্রি হয় না।'
আরও পড়ুন: Aindrila Sharma Update: মিরাকল হয়! অবস্থার উন্নতি, ভেন্টিলেশন থেকে বেরোতে চেষ্টা করছেন ঐন্দ্রিলা
কেমন আছেন ঐন্দ্রিলা?
ওই পোস্টেই ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের খোঁজ দিয়েছেন অভিনেতা। লেখেন, 'এই মুহূর্তে ঐন্দ্রিলা একপ্রকার সাপোর্ট ছাড়াই আছে, এমন কি ভেন্টিলেশন থেকেও বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। আগে ক্লিনিক্যালি সুস্থ হোক, নিউরোর কথা পরে ভাববো।' তিনি যেন দ্রুতি ফিরে আসেন, এটাই কাম্য।