Dengue In Child: শিশুদের হার্টের সমস্যা থেকে লিভার বিকল, ডেঙ্গিতে চিকিৎসায় দেরি ভয়ঙ্কর বিপদে ফেলতে পারে
শরীরে ভাইরাস ঢোকার উপসর্গ দেখা যায় তিন থেকে ১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা যায়। আর তখন কী কী করতে হবে, পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক অগ্নিমিতা গিরি সরকার।
কলকাতা : নিম্নচাপের জেরে দফায় দফায় চলছে বৃষ্টি। পুজোতেও রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। আর বৃষ্টির জমা জলই ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গির মশার আঁতুড়ঘর। এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যেই শিশুমৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। হাসপাতালে ভর্তি শিশুর সংখ্যাও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে আপনার শিশুকে এই মশাবাহিত অসুখ থেকে রক্ষা করবেন, পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক অগ্নিমিতা গিরি সরকার।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সরকার জানালেন, ডেঙ্গি শিশুদের মধ্য ছড়াচ্ছে তিনভাবে
- মশার কামড় থেকে
- খুব কম ক্ষেত্রে ব্লাড ট্রান্সফিউশন ও ভার্টিকল ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে ডেঙ্গি ছড়াতে পারে। অর্থাৎ গর্ভবতী মায়ের ডেঙ্গি হলে শিশু সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে।
ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার কতদিনের মধ্যে উপসর্গ ? - শরীরে ভাইরাস ঢোকার উপসর্গ দেখা যায় তিন থেকে ১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা যায়। কী সেই লক্ষণগুলি -
- জ্বর
- মাথা যন্ত্রণা
- চোখের পিছনে ব্যথা
- শিশুদের জ্বর উঠে যাচ্ছে ১০৪-১০৫ ডিগ্রিও
- হাতে-পায়ে গুটি গুটি ব়্যাশ আক্রান্ত হওয়ার ২-৩ দিনের মধ্যে দেখা যেতে পারে। একে বলে Isles of white in a sea of red।
- শিশুদেরও মাসলে যন্ত্রণা হয়।
- পেটের গোলমাল, গ্যাস, ডায়ারিয়া
শিশুদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গি কখন বিপজ্জনক - জ্বর ছাড়ার পর রক্তনালী কিংবা ব্লাড ভেসেল থেকে প্লাসমা বাইরে লিক করে বেরিয়ে আসা। এরফলে হাইপোভলিউমিয়া হতে পারে । তার ফলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমতে পারে ।
- যেহেতু ব্লাড ভেসেল থেকে প্লাসমা বাইরে বেরিয়ে গেল তাই বিভিন্ন অর্গানে ব্লাড সাপ্লাই কমে যেতে পারে এবং অর্গান ডিসফাংসন অথবা বিভিন্ন অঙ্গের কর্মক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। একে বলা হয় ডেঙ্গু শক সিনড্রোম অথবা ডেঙ্গু হ্যামারেজিক ফিভার।
- খুব কম ক্ষেত্রে হলেও এই সমস্যা কিন্তু দেখা যায় । এক্ষেত্রে যে শিশুদের আগে একবার ডেঙ্গি হয়েছে, তাদের পরের বার এই ডেঙ্গি হেমোরেজিক ফিভার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
রিকভারি পর্বে কী ঘটতে পারে ? তখনও কিন্তু শিশুরা ভয়ংকর বিপদে পড়তে পারে ! - রিকভারি স্টেজ বা সেরে ওঠার পর্বে, আগে রক্তনালী থেকে লিক করে বেরিয়ে আসা ফ্লুইড রক্তে ফের শোষিত হয়।
- এই সময় শরীরে ফ্লুইড ওভারলোড হতে পারে। ব্লাড সার্কুলেশনে ফ্লুইড এর মাত্রা বেড়ে যেতে পারে । তার ফলে হার্টের ক্ষতি হতে পারে । হার্ট রেট কমে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। শিশুদের খিচুনি হতে পারে। শিশুরা জ্ঞান হারাতে পারে ।
- তাই যখন শিশুর এই সময়ে চিকিৎসা করা হয়, সেসময় কিন্তু শিশুকে কতটা ফ্লুইড দিতে হবে, চিকিৎসকের কাছে এটা কিন্তু ভীষণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ।
- নিউরোলজিক্যাল সমস্যা হতে পারে ।
- ট্রান্সভার্স মাইলাইটিস লিভারের সমস্যা হতে পারে ।
- লিভার ফেইলিওর হতে পারে ।
- গর্ভবতী মায়েদের গর্ভপাত হতে পারে ।
- সন্তানের ওজন কম হতে পারে।
- প্রিম্যাচিওর ব্যর্থ হতে পারে।
ডেঙ্গু চিকিৎসা করতে সাধারণত সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট দরকার হয়। সিস্টেমেটিক ট্রিটমেন্ট করা হয় । যেহেতু এর বিরুদ্ধে কোনও অ্যান্টিভাইরাস নেই, তাই কোনও ওষুধ দেওয়া হয় না। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল। শরীরে জলের মাত্রা যাতে না কমে যায়, তার জন্য ওআরএস দেওয়া হয়। রোগী যদি খুব ক্রিটিকাল অবস্থায় থাকে তাহলে সেই ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন । জটিল ক্ষেত্রে আইসিইউ-এরও দরকার হতে পারে । কিন্তু যেহেতু এচা একটা ভাইরাল ফিভার, তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতাই অনেক ঝুঁকি কমাতে পারে। জ্বর হলে ফেলে না রাখা, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ও সবকটি রক্তপরীক্ষা করিয়ে ফেলা জরুরি। তাহলে বাড়িতেই কিন্তু আক্রান্ত শিশুদের সুস্থ করে তোলা সম্ভব বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )