Dengue : ডেঙ্গি রোগীকে কখন প্লেটলেট দিতেই হবে ? প্রয়োজন ছাড়া দিলে কি ক্ষতি ?
Dengue Treatment & platelet transfusion : ' প্লেটলেট কিন্তু আপনার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স নয়, সামান্য কমলেই সেটা কিনে বাড়াতে হবে। ' বিস্তারিত জানালেন হেমাটোলজিস্ট ডা. প্রান্তর চক্রবর্তী
কলকাতা : দিনে দিনে আতঙ্কের অপর নাম হয়ে উঠছে ডেঙ্গি! ঝড়ের গতিতে ছড়াচ্ছে মশাবাহিত এই রোগ। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুধু মঙ্গলবারই রাজ্যে ৯৬৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১৯ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। তবে কি ফিরছে আবার আতঙ্কের দিন ? ফের কি শুরু হয়ে যাবে ব্লাড ব্যাঙ্কে দৌড়াদৌড়ি ? প্লেটলেটের জন্য হাহাকার ? এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন হেমাটোলজিস্ট ডা. প্রান্তর চক্রবর্তী (Dr. Prantar Chakrabarti , Haematology Specialist)
প্রয়োজন ছাড়াই প্লেটলেট দিচ্ছেন ?
পুজোর মুখে মশাবাহিত এই রোগের বাড়বাড়ন্ত রীতিমতো কপালে ভাঁজ ফেলছে রাজ্যবাসীর। বেশিরভাগ মানুষের মনেই একটা প্রশ্ন, ডেঙ্গি আক্রান্তর ক্ষেত্রে কোন স্টেজে বাইরে থেকে প্লেটলেট বা রক্তের অন্য উপাদান দেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়ে ? এই নিয়ে আমাদের দেশে সঠিক কোনও গাইডলাইন নেই। তাই অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসককে ডেঙ্গির ধরন, রোগীর শরীরের গতিবিধি দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, ব্লাড ট্রান্সফিউশনের প্রয়োজন আছে কি না। ডা. চক্রবর্তী প্রথমেই জানালেন, ' প্লেটলেট কিন্তু আপনার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স নয়, সামান্য কমলেই সেটা কিনে বাড়াতে হবে। বরং প্রয়োজন ছাড়া প্লেটলেট দিলে লাভ তো হয়ই না, উল্টে ক্ষতি হবে পারে। ফুসফুসের ভয়ঙ্কর ক্ষতি থেকে প্লেটলেটের বিরুদ্ধে শরীর অ্যান্টিবডিও তৈরি করে ফেলতে পারে। তাই সাবধান ! '
কার কখন প্লেটলেট প্রয়োজন
ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই প্লেটলেটের বিষয়টি সকলের মাথায় বেশি করে ঘোরাফেরা করে। ডেঙ্গির সবথেকে ভয়াবহ বিষয়টিই হল দ্রুত গতিতে প্লেটলেট কমে যাওয়া। এই প্লেটলেট বা অনুচক্রিকা কমে যাওয়া মানেই শরীরে বাইরে ও ভিতরে রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া। সাধারণত অনুচক্রিকার স্বাভাবিক মাত্রা দেড় লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ। চিকিৎসকরা মনে করেন , যদি কখনও কাউন্ট ২০ হাজারের নিচে নেমে যায়; তখন ইন্টারনাল ব্লিডিংয়ের সম্ভাবনা থাকে। প্লেটলেট যদি ৫ হাজারের কম হয়; তখন ব্রেন, কিডনি, হার্টের মধ্য রক্তক্ষরণের ভয় থাকে। তবে এমন হতেই পারে এর থেকে প্লেটলেট কাউন্ট বেশি থাকা সত্ত্বেও শরীরের বিভিন্ন অর্গ্যান থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হল। তাই রোগীর ভিত্তিতে বিষয়টা আলাদা। রক্তের মধ্যে শ্বেতকণিকা, লোহিত কণিকার সঙ্গে থাকে অনুচক্রিকা। যা, রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। প্লেটলেট কমে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে অতিরিক্ত সময় নেয় । এ রাজ্যে দেখা গিয়েছে, অনেকের প্লেটলেটের ব্যাস বেশি। তাঁরা ১ লক্ষ ২০ হাজারেরও কম প্লেটলেট নিয়ে দিব্য ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছেন, কোনও অসুবিধে হচ্ছ না। তাই কেউ ডেঙ্গি আক্রান্ত হলে এটা জানাও জরুরি স্বাভাবিক অবস্থায় সেই ব্যক্তির প্লেটলেট কাউন্ট ।
এক জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হলে প্লেটলেট কমতে শুরু করলে চিকিৎসক নজর রাখেন -
- ব্যক্তির প্লেটলেট কমার হার কেমন
- কারও হয়ত আবার প্লেটলেট কাউন্ট কমলেও, শরীরে কোথাও রক্তক্ষরণ হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ব্লাড ট্রান্সফিউশন করার প্রয়োজন নেই।
- কারও আবার হ্যামারেজ বা রক্তক্ষরণ তাড়াতাড়ি শুরু হয়। সেক্ষেত্রে ব্লাড ট্রান্সফিউশনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
- এছাড়া চিকিৎসককে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, রক্তের কোন উপাদানের ঘাটতি হচ্ছে শরীরে। অর্থাৎ প্লেটলেটের ঘাটতি নাকি fresh frozen Plasmaর ঘাটতি।
- জ্বর কমার পর কিন্তু প্লেটলেট কমতে পারে। তাই জ্বর কমার পর নিয়মিত রক্তপরীক্ষা করাতে হবে। রিপোর্ট মনিটর করতে হবে।
- খেয়াল রাখতে হয় ডেঙ্গি রোগীর লিভারের ক্ষতি করছে কি না। কারণ লিভারই সেই উপাদানগুলি তৈরি করে যেগুলি রক্ত জমাট বাঁধতে ( coagulation ) সাহায্য করে।
- প্লেটলেট স্বাভাবিক মাত্রার থেকে কমল মানেই ব্লাডব্যাঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেওয়ার অর্থ নেই।
- ডেঙ্গি হলেও বাড়িতে রেখেও চিকিৎসা সম্ভব। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। ফলো করুন। ক্লিক করুন।
- হাসপাতালের বেড অযথা ভর্তি করে রাখবেন না। যাঁর সত্যিকারের প্রয়োজন , তিনি হয়ত পাবেন না ।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )