World Sleep Day: রাতে রোজই কম ঘুম? হতে পারে হার্টের অসুখের থেকে ভয়ঙ্কর পরিণতি
Sleep deprivation : ইউরোপীয় হার্ট জার্নালে প্রকাশিত ওয়ারউইক মেডিকেল স্কুলের গবেষণা বলছে, ঘুমের অভাবে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিসঅর্ডার ঘটতেই পারে।
কলকাতা: কেউ কি মেসেজ পাঠাল? সদ্য আপলোড করা ডিপিটায় কটা লাইক পড়ল? কমেন্ট করল কি কেউ? এই ভাবতে ভাবতেই রাতের ঘুমের দফারফা? এইভাবেই অর্ধেক এনার্জি সোর্সে কামড় বসাচ্ছে মোবাইল ফোন। শিশু থেকে বৃদ্ধ, বয়স যাই হোক, শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে, একটানা ভাল ঘুমের কোনও বিকল্প নেই, বলছেন চিকিৎসকরাই। শুধু তাই নয়, ঘুমের সমস্যা ডেকে আনতে পারে ভয়ঙ্কর বিপদ। হতে পারে সাডেন স্ট্রোকও। তাই রাতের ঘুমের সঙ্গে নো কম্প্রোমাইজ।
২৫ থেকে ৪৫ । এই বয়সের মধ্যেই মোবাইল ব্যবহারের প্রবণতা সবথেকে বেশি। কাজের জন্য স্ট্রেসও উত্তুঙ্গ। তা থেকে রেহাই পেতে অনেকেই মোবাইলে মন সঁপে দেন ঘুমোতে যাওয়ার আগে। আর তাতেই সাড়ে সর্বনাশ। এর সঙ্গী ভয়ঙ্কর মানসিক চাপ। এই দুইয়ের প্রভাবে ঘুমের ক্ষতি অনিবার্য। তাই রাতে এড়িয়ে চলুন মোবাইল ফোন। আকর্ষণ এড়াতে হাতের নাগালের বাইরেই রেখে দিন মোবাইল। অনেকেই মোবাইল ফোনে গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েন, যা মস্তিষ্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। রাতের অন্ধকারে ফোনের স্ক্রিনের আলো চোখের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। যা ঘুম আসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কম ঘুমের জন্য সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ!
ইউরোপীয় হার্ট জার্নালে প্রকাশিত ওয়ারউইক মেডিকেল স্কুলের গবেষণা বলছে, ঘুমের অভাবে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিসঅর্ডার ঘটতেই পারে। তার ফলে প্রায়শই প্রাথমিক মৃত্যু ঘটায়। সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট অর্পণ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ‘রাতের ঘুমের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হার্টের। রাতে ৭ ঘণ্টা ঘুম যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য আবশ্যিক। কম ঘুম হলে বেড়ে যায় কার্ডিও-ভ্যাসকুলার ডিসিজের সমস্যা। তবে যে কোনও সময় ঘুম নয়। সম্ভব হলে ডিনারের পর আধঘণ্টা সময় কাটিয়ে বিছানায় যান ঠাণ্ডা মাথায়। চোখ বুজে শুয়ে ভাল চিন্তা করতে করতে ঘুমের অপেক্ষা করুন। উচ্চ রক্তচাপ বা সুগার থাকলে ঘুমের সময়ের সঙ্গে কোনও আপস করা যাবে না। সমীক্ষা বলছে, কম ঘুমের কারণে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে। দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ঘুম কম হলে সেরিব্রাল স্ট্রোকের সম্ভাবনাও বাড়ে।
খেয়াল রাখতে হবে, যে সময়টা ঘুমোচ্ছেন, সেটা ভাল মতো হচ্ছে কি না। ঘুমের সময় নাক ডাকছেন না তো? তবে সতর্ক হন। নাক ডেকে ঘুম মানে কিন্তু গভীর ঘুম নয়, বরং রোগের লক্ষণ।
এরাও ঘুমের ভিলেন!
চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Consultant of Internal Medicine) মতে, গত এক বছরে মানুষের স্ট্রেস, টেনশন উভয়ই বেড়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে বেড়েছে কর্মহীনতা, কাজে অনিশ্চয়তাও। তার উপরে ওয়ার্ক ফ্রম হোমে কাজের সময়ও বেড়ে গেছে। ফলে কোপ পড়েছে ঘুমের সময় ও পরিবেশে। যে কারণে ঘুম আসতেও দেরি হচ্ছে। ঘুমের কোয়ালিটিতেও প্রভাব ফেলছে দৈনন্দিন জীবনের টেনশন। এই পরিস্থিতিতে ঘুমের শুরুটা যেন নিশ্চন্তে হয়, সেটা খেয়াল রাখা জরুরি। তাই ঘুমের আগে যে কোনো মন চঞ্চল করা বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে। তার মধ্যে অবশ্যই পড়ে মোবাইল। ঘুমে ঘাটতি যেমন বড় রোগের অনুঘটক হয়ে উঠতে পারে, তেমন যে কোনও বড় রোগের সিম্পটমও হতে পারে ঘুম না আসা বা দুঃস্বপ্ন দেখা। যেমনটি হয় সিরোসিস অফ লিভারের রোগীদের ক্ষেত্রে। তাই ঘুমের কোনও সমস্যা হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ভাল ঘুমের টিপস-
-
অন্য ঘরে চার্জ করার জন্য ফোন রাখুন। নিজেকে আপনার ফোন ছাড়াই বিছানায় যেতে দিন। যদি কোন জরুরী অবস্থা হয়, আপনি সকালে এটি সম্পর্কে জানতে পারবেন। বেডরুম থেকে ফোনটি সরিয়ে অন্য ঘরে যেমন রান্নাঘরে চার্জ করার জন্য রাখলে আপনার ঘুমের উপর এর প্রভাব কমানো সম্ভব।
-
আপনার ফোনের অ্যালার্ম ব্যবহার করার পরিবর্তে একটি অ্যালার্ম ঘড়ি পান।
-
রাতের খাবার খাওয়ার আধ ঘণ্টা পর ঘুমোতে যান।
-
ঘুমের আগে মোবাইলে খুটখাট বা সিনেমা দেখা এড়িয়ে যান।
-
ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
-
অ্যাসিড ফর্ম করতে পারে এমন খাবার রাতে খাবেন না। এতে ঘুমে ব্যাঘাত হয়। অনেকেরই শুয়ে পড়লে খাবার মুখ দিয়ে উঠে আসে।
-
যাঁদের ঘুমের সমস্যা আছে তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হালকা ডোজের ওষুধ খেতে পারেন।
-
ঘুমোতে যাওয়ার আগে চা কফি খাবেন না।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )