Covid19 and Health: পজিটিভ অবস্থায় 'পজিটিভ' থাকুন, একাকিত্বকে বলুন গুড বাই
আইসোলেশনে কাটানো সময়ই হয়ে উঠুক নিজের সঙ্গে কাটানো একান্ত মুহূর্ত।
কলকাতা: করোনা পজিটিভ। এই শব্দ দুটো শুনলেই বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতি মুহূর্তে ভিড় করে আসে আশঙ্কার মেঘ। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতাল নয় তো নিজের বাড়িতেই গৃহবন্দি দশা। নিজের বাড়িতেই বিচ্ছিন্ন অবস্থান। একদিকে শারীরিক সমস্যা, অন্যদিকে ক্রমেই ভাঙতে থাকে মনোবল। কিন্তু এই আইসোলেশনে কাটানো সময়ই হয়ে উঠতে পারে নিজের সঙ্গে কাটানো একান্ত মুহূর্ত।
রোজকার জীবন, অফিসের কাজের চাপ, সংসারে নানা কর্তব্য পালন বা লেখাপড়ার রুটিন। এই সব কিছুর মাঝে নিজের পছন্দের জিনিসগুলো অবহেলায় পড়ে থাকে। করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকলে নিজের পছন্দের কাজগুলো করে ফেললে মন থাকবে ভাল। তাতে মানসিক উদ্বেগও কমবে। এমনটাই পরামর্শ দিচ্ছেন মনোবিদ ডা. সব্যসাচী মিত্র।
কী করবেন? কী করবেন না?
- গল্পের বই পড়ুন, গান শুনুন
- নিজের যত্ন নিন এবং সুন্দর রাখার চেষ্টা করুন
- ঘরের মধ্যেই হালকা শরীরচর্চা করুন
- দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হবেন না
- সব সময় শুয়ে থাকা নয়
- নেতিবাচক ভাবনা দূরে রাখুন
ডা. সব্যসাচী মিত্র বলেন, করোনা আক্রান্ত হওয়া মানেই জীবন শেষ নয়। কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও একেবারেই দৈনন্দিন অভ্যাসের সঙ্গে বিচ্ছেদ না করার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়, দৈনন্দিন জীবনযাপন যেভাবে চলছিল আইসোলেশনে থাকাকালীন সেইভাবেই চলা উচিত। নিজের মন ভাল রাখতে পছন্দের জিনিসগুলি করে ফেলা উচিত এই সময়ে। যে ঘরে কোয়ারেন্টিন হয়ে থাকছেন, সেখানেই বসে টিভি দেখা, গান শোনা, বা পছন্দের গল্পের বই পড়ে ফেলুন। মহিলা হলে মেক আপ কিট, পুরুষ হলে শেভিং কিট সঙ্গে রাখুন। নিজেকে সুন্দর রাখার চেষ্টা করুন এই পর্বে। ইতিবাচক খবর দেখুন বা শুনুন। তাতে নেতিবাচক ভাবনা দূরে থাকবে। পাশাপাশি কমেডি সংক্রান্ত কোনও সিনেমা, মজার ওয়েবসিরিজ, কার্টুন দেখলে মন ভাল থাকবে। মন ভাল রাখার তালিকায় অবশ্যই থাকতে পারে পছন্দের খাবার। যাঁরা শরীরচর্চায় অভ্যস্থ তাঁরা ঘরের মধ্যে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটতে পারেন। কারণ এই সময় রক্ত তরল রাখা প্রয়োজন। সব সময় শুয়ে থাকলে রক্ত চলাচলে সমস্যা হবে।
করোনা একইসঙ্গে শরীরের উপর এবং মনের উপর প্রভাব ফেলে। দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট হাঁটাচলা বা দৈনন্দিন কাজে বাধা দিয়ে থাকে। নেতিবাচক ভাবনা, মানসিক উদ্বেগ, ভয়, একইসঙ্গে শরীর এবং মনের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। জন হপকিনস মেডিসিন রিহ্যাবিলিটেশন নেটওয়ার্কও করোনা আক্রান্তদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার কিছু উপায় বলেছে। তারা বলছে, আইসোলেশনে থাকাকালীন সাধারণ শরীরচর্চার মাধ্যমে করোনা আক্রান্তের ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করতে হবে। এর মধ্যে গভীর প্রশ্বাস, ধীরে ধীরে চলা, সাধারণ হাঁটাচলার কথা বলছে তারা।
ছোটবেলা থেকেই আমাদের গতিবিধির একটা নির্দিষ্ট ধরন তৈরি হয়ে যায়। শরীরের চলাফেরা বা গতিবিধির ৫টি স্তর রয়েছে। গভীরভাবে প্রশ্বাস নেওয়া, ভেস্টিবুলার সিস্টেমকে উন্মুক্ত রাখা, ধীরে ধীরে চলা বা হাঁটা, পেশির শক্তি বাড়ানো, শরীরকে সচল রাখা। শরীরচর্চা করলে ফুসফুস এবং হার্ট ঠিক মতো কাজ করে। দেহে সমন্বয় বজায় থাকে, পেশি সচল থাকে, মস্তিষ্কের বিকাশ হয়। এমনটাই জানাচ্ছে জন হপকিনস মেডিসিন রিহ্যাবিলিটেশন নেটওয়ার্ক।
কেউ করোনা আক্রান্ত হওয়া মানেই সেটা তাঁর অপরাধ নয়, আক্রান্তের পরিবার বা পরিচিতদের এটা বোঝাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমনটাই বলছেন চিকিৎসক সব্যসাচী মিত্র। তিনি বলেন, বাইরে থেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আইসোলেশনে থাকলেও পরিবার বা পরিচিতদের সবসময় যোগাযোগ রাখতে হবে। আলাদা ঘরে থাকলেও তিনি যে বিচ্ছিন্ন না, সেটা বোঝাতে হবে তাঁর প্রিয়জনদের। এমন কিছু কথা বলা, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির ভাল রাখবে। একটু বেশি খেয়াল রাখলে আক্রান্ত ব্যক্তি অবহেলিত বলে নিজেকে মনে করবেন না। এই সময় করোনা আক্রান্তের অক্সিজেন স্যাচুরেশন সহ শারীরিক অবস্থা তাও প্রতিনিয়ত খোঁজ নেওয়া উচিত পরিবার বা প্রিয়জনদের। অসহায় বোধ নয়, বরং বাড়িতে কেউ করোনা আক্রান্ত হলে সেতুবন্ধনের কাজ করতে হবে অন্যদের।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )