International Mother Language Day: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শিকড় ছিল দেশভাগেই, কীভাবে ইতিহাস হল ২১ ফেব্রুয়ারি
International Mother Language Day 2024 History: দেশভাগের সময় থেকেই ভাষা নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। যার ফলস্বরূপ ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা।
![International Mother Language Day: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শিকড় ছিল দেশভাগেই, কীভাবে ইতিহাস হল ২১ ফেব্রুয়ারি International Mother Language Day 2024 Bangladesh started language movement right from 1947 International Mother Language Day: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শিকড় ছিল দেশভাগেই, কীভাবে ইতিহাস হল ২১ ফেব্রুয়ারি](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2024/02/21/1a6fd0add4d3f49df754f9cecd5dcb531708495001471928_original.png?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: শতাব্দীর শেষ বছর অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সম্মেলনে স্বীকৃতি পায়। নভেম্বর মাসে ওই স্বীকৃতির পর ২০০০ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। রাষ্ট্রসংঘে এই দিনটির প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল বাংলাদেশই। মাতৃভাষার জন্য তাদের রক্তক্ষয়ী ইতিহাস স্মরণ করেই এই দিনের আয়োজন। সেই প্রস্তাব ‘গ্রহণ’ করেছিল অন্যান্য সদস্য দেশগুলি। তার ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
শিকড় ছিল দেশভাগেই
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছিল রক্তের মূল্যে অর্জিত। তবে এই দিনটি হঠাৎ জ্বলে ওঠা কোনও স্ফুলিঙ্গ ছিল না। বরং ইতিহাসের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল দেশভাগের সময় থেকেই। ভারতের স্বাধীনতা ও দেশভাগ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। একদিকে চোখ ঝলসানো অপ্রত্যাশিত সুখ, তো অন্যদিকে গভীর বিষাদ। ভূখন্ডের ভাগাভাগি মেনে নিতে হয়েছিল আপামর বাংলাবাসীকে। কিন্তু রাষ্ট্রের ‘ভাষাশাসন’ মেনে নিতে পারেনি ওপার বাংলা। দেশভাগের বছর থেকেই সে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ও অধ্যাপক ‘তমদ্দুন মজলিস’ সংগঠন তৈরি করেন। রাষ্ট্রভাষা নিয়ে বৃহত্তর আলোচনার পরিসর গড়াই ছিল এর উদ্দেশ্য।
রাষ্ট্রের ভাষা শাসনের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা
দেশভাগ অনেকের অমতে হলেও ভাষার প্রশ্নে বরাবর সচেতন ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের আপামর নাগরিক। সেই প্রশ্নকে কোনও রাষ্ট্রভাষার জোয়ার এসে ভাসিয়ে দিতে পারেনি। ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ মহম্মদ আলি জিন্নাহ প্রথম ও শেষবারের মতো বাংলাদেশে আসেন। ভাষা নিয়ে বিক্ষোভের আঁচ আগেই পেয়েছিলেন। জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন ‘উর্দুই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। অন্য কোনও ভাষা নয়। যারা ভাষা নিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে তারা পাকিস্তানের শত্রু।’ কিন্তু আন্দোলন স্তিমিত হয়নি। দ্বিগুণ ক্ষোভ আছড়ে পড়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক ভরকেন্দ্রে। সেই আন্দোলন, ক্ষোভ ও বিপ্লব নির্মাণের পুরোভাগে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অগণিত মুক্তমনা তরুণ পড়়ুয়া ও অধ্যাপকেরা। জিন্নাহর ঘোষিত উর্দু ও ইংরেজিকে সচেতনভাবেই তারা বর্জন করেন। আপন করেন, ‘মোদের গরব মোদের আশা’... বাংলাভাষা।
আগামী প্রজন্মের জন্য সেদিন যারা শহিদ হলেন....
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি ওই বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ ছিল। রাষ্ট্রের অস্ত্র ছিল পুুলিশ। তাদের গুলিতেই ছাত্ররা শহিদ হন। ইতিহাস হয়ে ওঠে ২১ ফেব্রুয়ারি। মাতৃভাষাকে ভালবেসে আগামী প্রজন্মগুলি বাঁচবে বলে মৃত্যুবরণ করেন রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউর, সালামের মতো ছাত্রেরা। সরকারের হিসেবে মৃত্যু চারজনের হলেও আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতরা জানান, আরও অনেকেই ওই দিন ভাষা শহিদ হয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলন থেকেই পাকিস্তান বাহিনীর নির্মম হত্যালীলা শুরু হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলন দমেনি। বরং সে আন্দোলন জন্ম দেয় নতুন এক স্বাধীনতা যুদ্ধের । যুদ্ধের প্রথম ধাপ ছিল সাধারণ ঘরের ছাপোষা নাগরিক বনাম সেনাদের যুদ্ধ। খুব সামান্য কয়েক মাসের প্রশিক্ষণকে সম্বল করে হাতে অস্ত্র ধরে 'দুধে-ভাতে' সন্তানেরা। আলাদা রাষ্ট্রের জন্য। পাকিস্তান ও উর্দুর শাসন থেকে মুক্তি পেতে। আধুনিক বিশ্বে জন্ম হয় এক নতুন দেশের - বাংলাদেশের। ভাষার ভিত্তিতে এক আস্ত দেশের জন্ম আজও তাই মাতৃভাষার বাঁচিয়ে রাখার প্রেরণা জোগায়। ভাষা শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে ২১ ফেব্রুয়ারি।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)