শারদ আনন্দ ২০২০: পুজো রসনা | 'করোনা থেকে কড়া সুরক্ষা', শহরের এই ৫ রেস্তোরাঁয় না খেলে মিস করবেন! জেনে নিন ফেস্টিভ-মেনু

পুজো থেকে পেটপুজো বাদ? এমনটা বোধ হয় ভাবতেই পারে না বাঙালি। তাই তো রীতিমতো কড়া কোভিড সুরক্ষাবিধি মেনেই সুস্বাদু খাবার পরিবেশনের জন্য তৈরি শহরের রেস্তোরাঁগুলি।

কলকাতা: আর মাত্র সপ্তাহ দুয়েকের অপেক্ষা। কাশফুল, নীল আকাশ, সোনা রোদ বলছে মা এলেন বলে। অতিমারী আতঙ্কের মধ্যেও বাজছে আগমনী সুর। করোনা বিধি মেনেই দেবীবরণের অপেক্ষায় আপামর বাঙালি। ঠাকুর দেখা থেকে শুরু করে অঞ্জলি, আড্ডা থেকে প্রসাদ বিতরণ, অন্যান্য বছরের থেকে এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। পুজোর অনেকটা সময়ই কাটবে হয়ত টিভিতে পুজো পরিক্রমা দেখে বা ভার্চুয়াল আড্ডায়। তবে পুজো থেকে পেটপুজো বাদ? এমনটা বোধ হয় ভাবতেই পারে না বাঙালি। তাই তো রীতিমতো কড়া কোভিড সুরক্ষাবিধি মেনেই সুস্বাদু খাবার পরিবেশনের জন্য তৈরি শহরের রেস্তোরাঁগুলি। বাঙালি বাড়িতে পুজোয় ঢালাও খানাপিনার বন্দোবস্ত তো থাকেই, তবে মণ্ডপ পরিদর্শনের মাঝেই রেস্তোরাঁয় পেটপুজো সেরে নেন অনেকেই। কোভিড পরিস্থিতিতে বাইরে খাওয়া-দাওয়ার অভ্যেসে রাশ টেনেছেন অনেকেই। কিন্তু পুজোয় ভালমন্দ খেতে কলকাতার বিখ্যাত রেস্টুরেন্টগুলিতে মানুষ আসবেনই, আশায় কর্তৃপক্ষ। সেই কথা ভেবেই প্রতিবারের মতোই পুজোয় দুর্দান্ত কিছু মেনু ঘোষণা করেছে তারা। ওহ ক্যালকাটা (Oh! Calcutta) স্পেশ্যালিটি গ্রুপের রেস্তোরাঁ ওহ ক্যালকাটা। বাঙালি-খাবারের স্বর্গরাজ্য। প্রতিবছরের মতো এ বছরও এই রেস্তোরাঁয় থাকছে জিভে জল আনা অনবদ্য কিছু বাঙালি পদ। পুজোর সময় দুপুর ১২ টা থেকে বিকেল ৪টে, আবার সন্ধে ৭ টা থেকে রাত সাড়ে ১১ টা অবধি খোলা থাকবে রেস্তোরাঁ। দুপুরের বাফেতে মিলবে ফিশ ফ্রাই, পাবদা সর্ষে বাটা, মাটন কষা, দই কাতলার মতো লোভনীয় পদ। ওহ ক্যালকাটার সিগনেচার ডিশ আম কাসুন্দি ফুলকপি, লাল লঙ্কা মুরগিও থাকছে বাফেতে। ট্যাক্স বাদ দিয়ে লাঞ্চ বাফের জন্য খরচ মাথাপিছু ১১৬৬ টাকা। বাফেতে না থাকলেও আলা কার্ত মেনু থেকে অর্ডার করা যেতে পারে সর্ষে-নারকেল দিয়ে রান্না করা লবস্টার। গ্রিলড্ লেমন-মাস্টার্ড পমফ্রেট। মধুরেণ সমাপয়েৎ হতে পারে ভাপা সন্দেশ দিয়ে। তবে এগুলি শুধুই হাইলাইটস। সম্ভারে থাকছে রকমারি হরেক পদ। আলা কার্তের জন্য খরচ পড়বে দুজনের গড়ে ১৮০০ টাকা + ট্যাক্স। আরও জানতে যোগাযোগ করতে পারেন, ৯৩৩০৬২৭৫১০ নম্বরে। এই রেস্তোরাঁর দুটি আউটলেট আছে শহরে। একটি ফোরাম কোর্টইয়ার্ড মলে। আরেকটি হ্যালডেন অ্যাভিনিউয়ের সিলভার আর্কেডে। ৬ বালিগঞ্জ প্লেস (6 Ballygunge Place) দক্ষিণ কলকাতার বাঙালি ভোজনরসিকদের চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে এই রেস্তোরাঁ। ষষ্ঠী থেকে দশমী, আলাদা আলাদা বাফে সাজাচ্ছে এই রেস্তোরাঁ। ষষ্ঠীতে বড়ি দিয়ে শাক ভাজা দিয়ে ভোজন শুরু। থালিতে থাকছে কড়াইশুটির কচুরি, রাজনন্দিনী পোলাও, ভেটকি মাছের ফ্রাই, দই মুরগি চিত্রকূট, আরও কত কী! সপ্তমীর আকর্ষণ নারকেল দিয়ে কচু শাক, ভেটকি পাতুরি, আম-কাসুন্দি মুরগি, বেকড মিহিদানা রাবড়ি, সহ আরও হরেক পদ। মহাঅষ্টমীর আকর্ষণ লাল মুরগি, ভুনা চিংড়ি, মাটন ডাকবাংলো...আরও হরেক পদ। নবমী-দশমীতে ভোজন রসিকদের রসনাতৃপ্তি করতে পাতে পড়বে কড়াইশুটির কচুরি, ভাজা মুগ ডাল, ঢাকাই পোড়া মাংস, টমেটো পোস্ত মুরগি সহ নানা জিভে জল আনা পদ। যাঁরা নিরামিষ খান, তাঁদেরও আক্ষেপ করার কারণ নেই। ছানা মটরশুটির চপ, আলু ঝিঙে পোস্ত, ফুলকপির রোস্ট প্রভৃতি। আমিষভোজীদের প্লেট প্রতি পড়বে ১১০০ টাকা, নিরামিষ খেলে ৯০০ টাকা প্লেট প্রতি, শিশুদের জন্য প্লেট প্রতি ৭৫০ টাকা (ট্যক্স সহ)। আরও কোনও প্রশ্ন থেকে থাকলে যোগাযোগ করুন এই ফোন নম্বরে- 9903975614/ 2460 3922 রেস্তোরাঁর মূল শাখাটি বালিগঞ্জে হলেও এখন রাজারহাট, সল্টলেকেও আছে শাখা। জানতে ফোন করুন 91 33 2441 4125 / 4129 নম্বরে। হোটেল হিন্দুস্তান ইন্টারন্যাশনাল (কলস, মিথ)(HHI) পাঁচতারায় গিয়ে যদি পুজোর দুপুরে রসনা তৃপ্তি করতে চান, তবে ঢুঁ মারতে পারেন এজেসি বোস রোডের হোটেল হিন্দুস্তান ইন্টারন্যাশনালে। এর কলসের বাফেতে বাঙালি ভোজের অফুরান আয়োজন রয়েছে উৎসবের দিনগুলিতে। আমিষভোজের শুরুটা আমপোড়া সরবত দিয়ে। তারপর একে একে মন জুড়াতে আসবে বাসন্তী পোলাও, কড়াইশুটির কচুরি, তপসে ভাজা, পদ্মার সর্ষে বাটা ইলিশ, চট্টগ্রামের চিকেন কারি, পাবদার ঝোল সহ হরেক পদ। মালপোয়া রাবড়ি সহযোগে মধুরেণ সমাপয়েত। নিরামিষ ভোজেও আছে নানা চমক। ধনেপাতা বাটা বাঁধাকপির চপ দিয়ে শুরু করে পটলের দোলমা, ধোকার কালিয়া ঢাকাই আলুর দম , আরও অনেককিছু। কলসে শুধু নয়, মিথেও থাকছে ঢালাও বাঙালি খানার আয়োজন। মিথের বাড়তি আকর্ষণ লাইভ ব্যান্ডের পারফর্ম্যান্স ও ম্যাজিক শো। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন, 91 33 2280 2323 / 2283 0505 / 4001 8000 / 4001 8080 টেবিল বুক করতে যোগাযোগ করুন 8013058598 নম্বরে। সপ্তপদী (Saptapadi) দক্ষিণ কলকাতার মন জয় করার পর সপ্তপদী এখন সল্টলেকেও। উত্তম-সুচিত্রার কালজয়ী ছবিই এই রেস্তোরাঁর থিম। এই জুটি যেমন এখনও বাঙালির হৃদমাঝারে, তেমনই মনমাঝারে থাকুক সপ্তপদীর খাবার, এটাই এই রেস্তোরাঁর লক্ষ্য। রেস্টুরেন্টের কোনায় কোনায় মহানায়কের হাসি ছড়িয়ে। সপ্তপদী পুজোর দিনগুলিতে পাত সাজিয়ে দেবে অসাধারণ কিছু পদে। ভুরিভোজ থালিতে থাকবে পোলাও, ভেটকি-চিংড়ি কয়েন, লেবু মরিচ মুরগি, কষা মাটন সহ অজস্র পদ। থাকছে মন ভাল করা মিষ্টির পদও। থালির দাম ৮৫০ টাকা। মহাভোজ থালিতে থাকছে, পোলাও, চিংড়ি, ইলিশ, মুরগি, ভেটকি, মাটনের অসাধারণ কিছু পদ। দাম ১১০০ টাকা। এছাড়া অলটাইম হিট আইটেমের মধ্যে থাকছে লিচু লঙ্কার সরবত, মুড়ি ফিশ স্টিক, ক্রিসপি চিলি মৌরলা, গোটা মশলা মুরগি, সপ্তপদী অভিনব মাংস প্রভৃতি। ট্রাই করতেই পারেন গন্ধরাজ ক্যারামেল কাস্টার্ড। যোগাযোগ করুন 9007912433/+91 90518 81732 ঔধ ১৫৯০ (Oudh 1590) বাঙালি পদের পাশাপাশি পুজোয় বঙ্গবাসীর অমোঘ আকর্ষণ বিরিয়ানি। আর বিরিয়ানিতে ঔধের জনপ্রিয়তা অসামান্য। মুঘলাই খানা খেতে মন চাইলে ট্রাই করাই যায় ঔধ। পুজোর দিনগুলিতে থাকছে অজস্র পদ। বাদাম সরবত দিয়ে শুরু। স্টার্টারে থাকছে মুর্গ জাফরানি কাবাব, শাহি তন্দুরি কাবাব, কাকরি কাবাব সহ আরও অনেক কিছু। মেন কোর্সের আকর্ষণ ঔধের হাণ্ডি বিরিয়ানি, রাণ বিরিয়ানি, মুর্গ বিরিয়ানি, গোস্ত বিরিয়ানি, নিহারি খাস, কিমা কলেজি, মুর্গ ইরানি, মুর্গ রেজালা সহ অনেককিছু। মিষ্টিমুখ করতে পারেন ফিরনি, গাজরের হালুয়া দিয়ে। ঔধের স্পেশ্যালিটি হল জাফরানি কাবাব, গালৌটি কাবাব, কলমি কাবাব, মাহি কালিয়া প্রভৃতি। ঔধের সবকটি আউটলেটেই থাকবে এই সবকটি পদ। দেশপ্রিয় পার্ক, সল্টলেক, বিবেকানন্দ পার্ক, নাকতলা, যশোর রোডে আছে রেস্তোরাঁর আউটলেট। দুজনের খাওয়া-দাওয়ায় খরচ হতে পারে ১২০০ টাকার কিছু বেশি। প্রতিটি পদক্ষেপে খেয়াল রাখা হচ্ছে করোনা-সুরক্ষার বিষয়টি। কিচেন থেকে টেবিল সব জায়গাতেই সেই ছাপ স্পষ্ট। পরিবেশকরা মাস্ক তো পরছেনই, পরছেন ফেস শিল্ডও। ব্যবহার হচ্ছে  ডিসপোজেবল থালা-বাটি, ঢোকার আগে জুতো স্যানিটাইজ করা হচ্ছে, মাপা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা৷ হোম ডেলিভারিও চলছে সমানতালে, সমস্ত সতর্কতা মেনে৷ যোগাযোগ করুন সাদার্ন অ্যাভিনিউ 8961556551 সল্টলেক 8274056652 যশোর রোড 7596088080 দেশপ্রিয় পার্ক 7604035764 নাকতলা 9903767626