World Sleep Day 2023 : ঘুম আসে না ? ওষুধ-নির্ভর হওয়ার আগে খেয়ে দেখুন এই খাবারগুলি, বদলে ফেলুন এই অভ্য়েস
পুষ্টিবিদ ড. অনন্যা ভৌমিক জানালেন, এর ফলে ভয়ানক কিছু রোগ জাঁকিয়ে বসছে আমাদের শরীরে। তাহলে কী উপায় ?
সারাদিনে ঠিক কতক্ষণ ঘুমের প্রয়োজন? দৌড়ঝাঁপের জীবনে এই প্রশ্নটা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে টার্গেটের দৌড়ে রাতের ঘুমের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করে ফেলছেন বহু মানুষই। এছাড়া নানা কারণে স্ট্রেসও আষ্টেপৃষ্টে চেপে ধরছে নাগরিক জীবন। ফলে ঘাটতি পড়ছে ঘুমে। পুষ্টিবিদ ড. অনন্যা ভৌমিক জানালেন, এর ফলে ভয়ানক কিছু রোগ জাঁকিয়ে বসছে আমাদের শরীরে। স্থূলতা (obesity), হার্টের অসুখ (heart disease), উচ্চ রক্ত চাপ ( High BP) , মধুমেহ ( diabetes ) , মানসিক অস্থিরতা ( Mental Stress) ইত্যাদির সমস্যা বাড়ছে। মনে রাখতে হবে, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ৬-৮ ঘণ্টার কম ঘুম হলে চলবেই না। তবে ছোট্ট শিশুদের কম ঘুম হলে চিন্তা করবেন না। ১ বছরের থেকে একটু বড় শিশুরা ১০-১২ ঘণ্টা ঘুমোতেই পারে।
আরও পড়ুন :
ভাঙা ভাঙা ঘুম? শুয়ে থেকেও ঘুম আসছে না? এই অভ্যাসগুলোয় নজর দিন
কারণ এখন দ্রুত জীবনযাত্রায় হয় প্রত্যেকেই কিছুটা ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। আর এই ঘুম কম হওয়ার সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে সার্বিক সুস্থতার বিষয়টি। ঘুমের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শরীরে কিছু হরমোন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য অ্যাডিনোসিন, মেলাটোনিন । এই দুই হরমোনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুষ্টির বিষয়টিও। কিছু কিছু খাবার আছে, যা এই হরমোনগুলি ক্ষরণে সাহায্য করে। ঘুমের আগে কয়েকটি খাবার ঘুম তাড়াতাড়ি আসতে সাহায্য করে। তাছাড়া কিছু অভ্যেস রয়েছে, যা ঘুমের সহায়ক। সামগ্রিক ভাবে বলতে গেলে খাবার ও জীবনযাপন - এই দুটি জিনিস কিন্তু স্লিপং ডিজঅর্ডারের সমাধান করতে পারে অনেকটাই। যেমন-
- নির্দিষ্ট একটি সময়ে ঘুমনোর অভ্যেস করা ঘুমের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব জরুরি। ঠিক সময়ে শুয়ে পড়া, সেই অনুসারে ডিনার সারা ও নিয়মমাফিক আপনি যদি কোনও ওষুধ খেয়ে থাকেন, তা খেয়ে নেওয়া খুব জরুরি।
- ঘুমোতে যাওয়ার আগে কিছু খাবার খেলে ঘুম ভাল হয়। তার মধ্যে পালং-এর জুস খেতে পারেন। টার্ট চেরিও ভাল ঘুমের অনুঘটক।
- টানা ঘুমোতে পারছেন না। তাহলে কাজের ফাঁকে অন্তত দেড় ঘণ্টা ছোট্ট একটা ঘুম দিন। তাহলে শরীর চাঙ্গা থাকবে।
- বিছানায় শুয়েই আছেন, অথচ ঘুম আসছে না আর আপনিও ঘুমের অপেক্ষায় এপাশ ওপাশ করছেন। তাহলে কিন্তু ক্ষতি হতে পারে। বরং সেই সময়টায় পছন্দের গান শুনুন। বই পড়ার অভ্যেস থাকলে পড়ুন। হয়ত ঘুম চলে আসবে। চেয়ে চেয়ে ঘুমের অপেক্ষা করলে, স্ট্রেস তৈরি হতে পারে।
- ঘুমের সময়ের ঠিক আগে পর্যন্ত মোবাইল বা টিভি দেখবেন না। তাহলে সেই উত্তেজনা থেকে মন সরিয়ে ঘুম আসতে সময় তো লাগবেই।
- পারলে ঘুমে ২-৩ ঘণ্টা আগে আধ ঘণ্টা কোনও এক্সারসাইজ করুন, ঘুমে সাহায্য হবে ।
- ঘুমের ঠিক আধ ঘণ্টা আগে থেকে এমন কোনও কাজ করুন, যা আপনার মনকে শান্ত করে, সেটা ভাল বই পড়া হতে পারে, গান শোনা হতে পারে।
- ঘুম আসছে না, আর তাই জেগে জেগে অহেতুক স্ন্যাকস খাবেন না কিংবা কফি কাপে চুমুক দেবেন না। তাহলে ঘুম আরও দূরে সরে যাবে !
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারাদিনের এক তৃতীয়াংশ সময় ঘুমের প্রয়োজন। নইলে শরীরে নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। ভাল ঘুম না হওয়ার সমস্যা যদি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে, তাহলে কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ করতে হবে। তবে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে আপনার ডায়েটে কিছু পরিবর্তন এনে দেখতে পারেন। উপকার পাবেন।
পুষ্টিবিদ ড. অনন্যা ভৌমিক জানালেন, কীভাবে জীবন শৈলিতে অল্প বিস্তর পরিবর্তন এনে ঘুমের কোয়ালিটিটা ভাল রাখা যেতে পারে। বড়রকমের স্লিপিং ডিজঅর্ডার বা অন্য কোনও অন্তর্নিহিত রোগ না থাকলে, জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনলেও ভাল ঘুম সম্ভব।কিছু নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি
- কফি অতিরিক্ত খেলে ঘুমের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। ক্যাফেইন আছে এমন যে কোনও খাবারই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যেমন, এনার্জি ড্রিঙ্ক, কোল্ড ড্রিঙ্ক ।
- ডিম দুধ মাছে আছে মেলাটোনিন, যা ঘুমের সহায়ক। আমন্ড , পেস্তাতেও মেলাটোনিন থাকে। ঘুমের আগে খেলে ঘুম আসতে সাহায্য করবে।
- ম্যাগনেশিয়াম যুক্ত খাবার শরীরকে আরাম দেয়। ঘুম আসতে সাহায্য করে। ডার্ক চকোলেট ভাল ঘুমের সহায়ক। সেই সঙ্গে ম্যাগনেশিয়ামের ভাল উৎস হল - পাম্পকিন সিড, আমন্ড, কলা, পালং শাক, ব্রাউন রাইস, চকোলেট।
- তৈলাক্ত মাছ ভাল ঘুমের অনুঘটক। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস এই তৈলযুক্ত মাছগুলি। সেই সঙ্গে আবার মেলাটোনিনের উৎসও বটে। তাই ডিনারে রাখতে পারেন এই মাছ।
- তবে হ্যাঁ রাতের খাবার খেয়ে ফেলুন ঘুমনোর সময়ের অনেকটা আগেই। যাতে হজমের সমস্যা আপনার ঘুমের দফারফা না করতে পারে।
- ডিনার হাল্কা হওয়া জরুরি, যাতে হজমের সমস্যা ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটায় ।
- ঈষৎ উষ্ণ দুধ খাওয়াও স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। রাতে শোওয়ার আগে হালকা গরম সহজপাচ্য একগ্লাস দুধ খেতে পারেন।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )