'Maidaan' Review: প্রেক্ষাগৃহই যেন স্টেডিয়াম, অজয় দেবগণের 'ময়দান' কতটা সফল হল?
'Maidaan': সৈয়দ আব্দুল রহিমের গল্প বলে এই ছবি, যিনি ভারতীয় ফুটবল দলকে গড়ে তুলে বিশ্বের দরবারে মেলে ধরেন। প্রথম ভাগটি ধীরগতির মনে হলেও, দ্বিতীয় ভাগটি আসন থেকে উঠতে দেবে না দর্শককে।
অমিত শর্মা
অজয় দেবগণ, গজরাজ রাও, প্রিয়মণি, রুদ্রনীল ঘোষ, অভিলাষ থপলিয়াল
প্রেক্ষাগৃহ
নয়াদিল্লি: এই ছবি কি 'চক দে ইন্ডিয়া'র (Chak De India) মতো, কোনও ক্রীড়া সংক্রান্ত ছবি (Sports Film) মুক্তি পেলেই প্রথমে এই কথাই মাথায় আসে। কিন্তু রিভিউ শুরুর আগেই বলে দেওয়া ভাল যে এই ছবি 'চক দে ইন্ডিয়া' নয়, তবে অবশ্যই এই ছবি দেখা উচিত। এই ছবি অর্থাৎ 'ময়দান' (Maidaan) ৩ ঘণ্টার, প্রথমার্ধ খুব দারুণ নয়। তবুও এই ছবি দেখা উচিত কারণ এর ঘণ্টা দু'য়েকের দ্বিতীয় ভাগ আসন ছেড়ে উঠতে দেবে না, সেই সঙ্গে সৈয়দ আব্দুল রহিমের এই কাহিনি আপনাকে অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়ে যাবে।
ছবির কাহিনি
এই ছবির গল্প, ১৯৫২ থেকে ১৯৬২ সাল সময়কালে ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ সৈয়দ আব্দুল রহিমের, যিনি নিজের গোটা জীবনই ফুটবলকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর চেষ্টাতেই ভারতীয় ফুটবল টিম 'ব্রাজিল অফ এশিয়া' খেতাব পায়, ভারতীয় দল এশিয়াল গেমসে সোনা যেতে। কীভাবে তিনি ক্যান্সার ও ফুটবল ফেডারেশনের রাজনীতির সঙ্গে লড়াই করে ভারতীয় দলের সাফল্যের নয়া কাহিনি লিখলেন, সেই গল্পই বলবে এই ছবি।
কেমন হয়েছে এই ছবি?
সিনেমার প্রথম ভাগ ধীর গতির মনে হতে পারে, কখনও কখনও একঘেয়েও লাগতে পারে, কীভাবে যেন তাড়াতাড়ি টিম তৈরি হয়ে যায়, এবং সবকিছু হয়ে যায়, মনে হতে পারে যে চরিত্রদের ঠিক করে বিকাশ করতে দেওয়া হয়নি। ৩ ঘণ্টার সিনেমায় ১ ঘণ্টার মাথায় বিরতি হয়ে যায়, আর তাতে খটকা লাগতে পারে। কিন্তু যখন ছবির দ্বিতীয় ভাগ শুরু হয়, আর আপনি নড়তে পারবেন না। টিম ইন্ডিয়ার ম্যাচের দৃশ্য গোটা প্রেক্ষাগৃহকে যেন স্টেডিয়ামে পরিণত করে দেয়। ফিল্মের মাধ্যমে রহিম সাহেবের কাহিনি খুব সুন্দরভাবে বুঝতে পারবেন। ওই মানুষটির জেদ ও আবেগের সঙ্গে একাত্ম হতে পারবেন যে ভারতীয় ফুটবলকে সবচেয়ে উঁচুতে পৌঁছে দিয়েছে। সিনেমায় খামতিও আছে, প্রথম ভাগ দুর্বলও বটে, সেই সঙ্গে খেলোয়াড়দের সঙ্গে একাত্মও হতে সমস্যা হতে পারে, 'চক দে ইন্ডিয়া'র মতো আবেগ অনুভূত নাও হতে পারে। কিন্তু দল হিসেবে অবশ্যই একাত্ম হবেন। সব শেষে যখন টিমের আসল খেলোয়াড় এবং চরিত্রাভিনেতাদের ছবি একসঙ্গে দেখানো হয়, তখন কাস্টিংয়ের তারিফ না করে পারবেন না। কিন্তু তাও আবেগ কোথাও গিয়ে যেন একটু কম। কিন্তু সব মিলিয়ে ছবির দ্বিতীয়ার্ধ আপনার অন্দরে ভারতীয় দলের জন্য আবেগ, উন্মাদনার সঞ্চার করবে।
অভিনয় দক্ষতা
পুরো সিনেমাজুড়ে অজয় দেবগণ (Ajay Devgn) দাপিয়ে বেরিয়েছেন। এই ছবি তাঁর দুর্দান্ত কাজগুলির অন্যতম। এই চরিত্রের প্রতি সুবিচার করেছেন অজয়। রহিম সাহেবের আবেগকে পর্দায় খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। টিমের প্রত্যেক অভিনেতার কাজই খুব ভাল। ক্রীড়া সাংবাদিকের চরিত্রে গজরাজ রাও দুর্দান্ত। অজয়ের স্ত্রীর চরিত্রে প্রিয়মণি দারুণ। অভিলাষ থপলিয়াল কমেন্টেটর হয়েছেন এবং খুব ভাল মানিয়েছেন। এখানে তাঁর অভিনয় দক্ষতা আবারও প্রকাশ পাবে।
পরিচালনা
অমিত শর্মার পরিচালনা ভাল, তিনি 'বধাই হো'র মতো সফল ছবির পরিচালনা করেছেন। এক্ষেত্রে ছবির দৈর্ঘ্যের ব্যাপারে তিনি সামাল দিতে পারেননি। ফিল্ম আরও ছোট হতে পারত, আরও খানিক ইমোশন দেওয়া উচিত ছিল, তবে টিম ইন্ডিয়ার ম্যাচের দৃশ্যায়ন অত্যন্ত সুন্দরভাবে দেখানো হয়েছে। দর্শকের মধ্যে উত্তেজনার সঞ্চার করে।
আরও পড়ুন: 'Crew' Review: সিনেমাজুড়ে তব্বু-করিনা-কৃতির জোট অসাধারণ, হাসি-মজা-ঠাট্টায় ভরা 'ক্রু'র খামতি কোথায়?
ছবির মিউজিক
ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন এ আর রহমান ও লিখেছেন মনোজ মুন্তাশির। দারুণ। এই ছবির মাধ্যমে টিম ইন্ডিয়া নয়া অ্যান্থেমও পেতে পারে। সব মিলিয়ে এই কাহিনি মানুষের জানা উচিত এবং ছবিটাও দেখা উচিত। ছবিটি বেশ ভাল, যা গোটা পরিবারের সঙ্গে দেখা যেতে পারে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।