'Crew' Review: সিনেমাজুড়ে তব্বু-করিনা-কৃতির জোট অসাধারণ, হাসি-মজা-ঠাট্টায় ভরা 'ক্রু'র খামতি কোথায়?
'Crew': রাজেশ এ কৃষ্ণণের পরিচালনায় তৈরি এই ছবি। পরিচালক নিশ্চিত জানতেন যে তাঁর ইউএসপি এই তিন নারী, এবং তাঁদের গ্ল্যামার পুরোপুরি ব্যবহার করেছেন পরিচালক। যদিও চিত্রনাট্য় আরও খানিকটা ভাল হতে পারত।
রাজেশ এ কৃষ্ণণ
তব্বু, করিনা কপূর খান, কৃতি শ্যানন, দিলজিৎ দোসানজ, কপিল শর্মা,
প্রেক্ষাগৃহ
নয়াদিল্লি: যে সিনেমায় বলিউডের ৩ সুন্দরী একসঙ্গে থাকেন, যাঁদের অত্যন্ত সুন্দর দেখতে লাগে, কিছুক্ষণ পরে পরেই যাঁরা দুর্দান্ত জামাকাপড় পরে গ্ল্যামার ছড়াতে থাকেন, যাঁদের সংলাপজুড়ে 'ওয়ান লাইনার'-এর (one liners) ছড়াছড়ি, এবং সেই সঙ্গে সিনেমার গল্পও মোটামুটি ভালই, সেই ছবি অনায়াসে দেখে ফেলা যায়। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত 'ক্রু'র ('Crew' Review) ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে।
ছবির কাহিনি এক ঝলকে
তব্বু (Tabu), করিনা কপূর খান (Kareena Kapoor Khan) ও কৃতি শ্যানন (Kriti Sanon) 'কোহিনূর এয়ারলাইন্স' নামক এক বিমান সংস্থায় বিমানসেবিকা। তিনজনেরই টাকাপয়সার অত্যন্ত প্রয়োজন, কিন্তু বিমান সংস্থা ধীরে ধীরে দেউলিয়া হওয়ার পথে। এমন পরিস্থিতিতে এক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে তাঁরা তিনজন, আর তাতে ফেঁসেও যায় তিনজনই। এবার নিজেদের বাঁচাতে, আর স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে তাঁরা আরও একটি কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে। অবশ্যই এগুলো কী কাণ্ড, তা জানতে হলে প্রেক্ষাগৃহে পৌঁছে যেতে হবে।
কেমন হয়েছে সিনেমাটি?
এই ফিল্মটি মজাদার। এই ফিল্মের সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে যে এতে তিন বড় অভিনেত্রীকে একসঙ্গে পাশাপাশি দেখা যায় যা সাধারণত কোনও সিনেমায় থাকে না, এবং তিনজনকেই এক নতুন রূপে দেখা যাচ্ছে। সিনেমায় একাধিক বেশ প্রশংসনীয় 'ওয়ান লাইনার' অর্থাৎ এক বাক্যের হাস্যরসপূর্ণ সংলাপ ব্যবহার করা হয়েছে। নায়িকাদের কমিক টাইমিং বেশ ভাল যার ফলে এগুলি শুনতে বেশ মজাও লাগে, হাসিও পায়। সিনেমার প্রথম পর্ব দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলে, এবং কোনও সময় নষ্ট না করে মূল বক্তব্যে এসে পৌঁছয়। দ্বিতীয় ভাগে কিছু কিছু স্থানে বিরক্ত লাগতে পারে। কিন্তু সেখানেও পরিস্থিতি সামাল দেবে এই তিন নারীর দারুণ অভিনয়। এমনকী দ্বিতীয় ভাগ খানিকটা ছোট হলেও মন্দ হত না। সিনেমাটি নারীদের নিয়ে তৈরি হলেও কোনও জ্ঞান প্রদান করার ইচ্ছা নিয়ে তৈরি হয়নি। এই ছবি শুধুমাত্র মনোরঞ্জন করে, এবং বেশ ভাল মতো করে।
অভিনয় কেমন?
তব্বু একজন দুর্দান্ত অভিনেত্রী, কিন্তু শেষ কয়েকটি কাজে তাঁকে পুলিশ অফিসারের চরিত্রেই দেখা গিয়েছে। এখানে বিমানসেবিকার চরিত্রে তিনি দারুণ। নিজের মতো করে এই চরিত্রে কাজ করেছেন তব্বু এবং সম্পূর্ণভাবে তা সাফল্যের সঙ্গে করেছেন। করিনা কপূর খানকে দেখে মনে হতে পারে তাঁর বয়স বছর ১০ কমে গিয়েছে। অত্যন্ত সুন্দর দেখতে লেগেছে তাঁকে, সেই সঙ্গে অনবদ্য অভিনয়। করিনার অনুরাগীরা তো কেবল তাঁর জন্যই এই ছবি দেখে আসতে পারেন। কৃতি শ্যাননের কাজও প্রশংসনীয়। দিলজিৎ দোসানজ যতবার পর্দায় এসেছেন, উপভোগ্য করে তুলেছেন গোটা বিষয়টা। চরিত্রটি ছোট হলেও তা প্রভাব ফেলে যায়। কপিল শর্মার চরিত্রও অত্যন্ত ছোট। তাঁর চরিত্র আরও খানিকটা বড় হতে পারত, তবে তাঁর উপস্থিতিও বেশ নজর কেড়েছে।
পরিচালনা কেমন?
রাজেশ এ কৃষ্ণণের পরিচালনায় তৈরি এই ছবি। পরিচালক নিশ্চিত জানতেন যে তাঁর ইউএসপি এই তিন নারী, এবং তাঁদের গ্ল্যামার পুরোপুরি ব্যবহার করেছেন পরিচালক। যদিও চিত্রনাট্য় আরও খানিকটা ভাল হতে পারত, গল্পটা আরও খানিকটা কায়দা করে লেখা যেত, তাহলে সিনেমাটি আরও ভাল হত। দ্বিতীয় পর্বে মজার উপাদান আরও খানিক দিলে ভাল হত, তবে তাও পরিচালক সফল, বলাই যায়।
ছবির সঙ্গীত কেমন?
দিলজিৎ দোসানজ, বাদশাহ্ ও প্রায় আধ ডজনের বেশি লোকজন মিলে এই ফিল্মের সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্ব সামলেছেন, কিন্তু বিশাল কিছু করে উঠতে পারেননি। সেই 'চোলি কে পিছে' আর 'সোনা কিতনা সোনা হ্যায়'র রিমিক্স, নতুন কোনও গান হলে হয়তো ভাল লাগত আরও। সব মিলিয়ে বলা যায়, এই ছবি একবার দেখে আসা যেতে পারে, মজা লাগবে, উপভোগ করবেন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।