নাগরিকত্ব শুধুমাত্র অধিকার নয়, সমাজের প্রতি কর্তব্যও: প্রধান বিচারপতি এস বোবদে
তিনি মনে করিয়ে দেন, শিক্ষার প্রকৃত অর্থ হল বুদ্ধিমত্তা ও চরিত্র গঠন করা। ...বিশ্ববিদ্যালয় কখনই ইট ও বালি-সিমেন্টের মিশ্রণ নয়। তারা উৎপাদন কারখানার মতো চলতে পারে না।
নাগপুর: নাগরিকত্ব শুধুমাত্র মানুষের অধিকার নয়, এটা সমাজের প্রতি কর্তব্যেরও বিষয়। এমনটাই মনে করেন দেশের প্রধান বিচারপতি শরদ বোবদে। শনিবার, নাগপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। সেখানেই তিনি দেশের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘প্রবল বাণিজ্যিক মানসিকতা’ রাখার অভিযোগ তোলেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, শিক্ষার প্রকৃত অর্থ হল বুদ্ধিমত্তা ও চরিত্র গঠন করা। বোবদে বলেন, বর্তমান যুগে শিক্ষার প্রসার ঘটছে। দুর্ভাগ্যবশত, কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভীযণরকম বাণিজ্যিক মানসিকতাসম্পন্ন হয়ে উঠেছে। এটা আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। তিনি যোগ করেন, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যার উত্তর আমাদের খুঁজতে হবে, তা হল বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষার লক্ষ্য কী? বিশ্ববিদ্যালয় কখনই ইট ও বালি-সিমেন্টের মিশ্রণ নয়। তারা উৎপাদন কারখানার মতো চলতে পারে না। শিক্ষা নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, শিক্ষার ধারণার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত শৃঙ্খলার ধারণাও। আমার মতে, এই শৃঙ্খলার ধারণার কিছু ক্ষেত্রে খামতি থেকে গিয়েছে। যা থেকে অসন্তোষ জন্ম নিচ্ছে। একইসঙ্গে, শৃঙ্খলার বর্তমান ধারণা তার আসল ধারণা নয়। শৃঙ্খলা হল মনের একটি স্থিতি, যেখানে তা যে কোনও বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম। শিক্ষা হল পড়ুয়াদের মানসিক স্থিতি। আর ওই মানসিক স্থিতি গঠন করে শৃঙ্খলাপরায়ণতা। প্রধান বিচারপতি মনে করেন, একজনের ভবিষ্যৎ খোদাই করে তৈরি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি বাটালির কাজ করে। যার কাছে এই অস্ত্র রয়েছে, সে কীভাবে তা ব্যবহার করবে, তা তার ওপর নির্ভর করছে। এখানেই তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। বাটালি নিজে থেকে খোদাই করে না। তাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হয়। আর এই ব্যবহারের দিশা দেখাতে সাহায্য করে মানুষের মধ্যে থাকা নৈতিকতা। প্রধান বিচারপতি বলেন, সকলের সক্রিয় নাগরিক হওয়ার একটা দায়িত্ব রয়েছে। আর নাগরিকত্ব শুধুমাত্র অধিকারের বিষয় নয়। এটা সমাজের প্রতি কর্তব্যের বিষয়ও।