International Tiger Day 2021: আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবসে সুখবর, বাঘ সংরক্ষণে নজির ভারতের
গোটা বিশ্ব যখন ২৯ জুলাই আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস পালন করছে, তখন ভারতের জন্য এটা একটা মনে রাখার মতো দিন। বাঘ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে ভারত।
নয়াদিল্লি: বাড়ছে ভারতীয় বাঘের গর্জন, কারণ ধীরে ধীরে সংখ্যায় বাড়ছে ভারতীয় বাঘ। গোটা বিশ্ব যখন ২৯ জুলাই আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস পালন করছে, তখন ভারতের জন্য এটা একটা মনে রাখার মতো দিন। সারা পৃথিবীর প্রায় ৭০ শতাংশ বাঘই এখন ভারতে পাওয়া যায়। ব্যাঘ্র সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে আমাদের দেশ। পৃথিবী জুড়ে বাঘের সংখ্যা এখনও ৪,০০০-এর কাছাকাছি। আর যার তিন-চতুর্থাংশই ভারতে রয়েছে। ভারত প্রায় ২ ডজন নতুন বাঘের অভয়ারণ্য তৈরি করেছে। এখন দেশে মোট অভয়ারণ্যের সংখ্যা ৫২। শুধু বাঘ নয়, এর ফলে লাভ হয়েছে অন্যান্য বন্যপ্রাণীরও। বনাঞ্চল বৃদ্ধিতেও যা সহায়ক।
ভারতে মানুষ এবং বাঘের এক নতুন সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বাঁচুন এবং বাঁচতে দিন, এই দৃষ্টিভঙ্গিতে ভর করে বিশ্বের দরবারে ভারত বাঘ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এক বিশেষ জায়গা অধিগ্রহণ করেছে। যদিও অন্যান্য দেশের তুলনায় বাঘ সংরক্ষণে অনেকটাই এগিয়ে আমাদের দেশ, তবে এখনও সংরক্ষণের সমস্ত সম্ভাবনা আমাদের ব্যবহার করা হয়নি। এখনও পর্যন্ত ব্যাঘ্র সংরক্ষণ শুধুমাত্র অভয়ারণ্য, জাতীয় উদ্যান এবং আঞ্চলিক স্তরেই হয়। এছাড়াও আছে 'টাইগার করিডর' যা ওদের বসবাসের ক্ষেত্রে খুবই উল্লেখযোগ্য। ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল টাইগার কনসার্ভেশন অথরিটি (NTCA) এবং ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (WII) ৩২টি বড় এবং বেশ কিছু ছোটখাটো জায়গা চিহ্নিত করেছেন টাইগার করিডরের জন্য।
- 'টাইগার করিডর' আসলে ঠিক কী?
'টাইগার করিডর' হল এমন এক রাস্তা যা বাঘের বাসস্থানগুলিকে জোড়ে। এর মধ্যে বাঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা চলাফেরা করে, শিকার ধরে। করিডর করা না থাকলে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। যা সাধারণ জনবসতির পক্ষে সমস্যার হতে পারে। বাঘ ছাড়া অন্যান্য বন্যপ্রাণীরাও ওই করিডর ব্যবহার করে। এমনটাই বলছে NTCA রিপোর্ট।
অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এই করিডরগুলিই পরবর্তীকালে বাঘেদের থাকার জায়গা হয়ে উঠবে। স্বভাবতই এই করিডরগুলি সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা চলছে, কাজটা যদিও খুব সহজ নয়। কারণ এই করিডরগুলি জনবসতির উপর দিয়েই গেছে। ফলে মানুষ এবং বাঘের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনা প্রবল। যদিও ভারত পৃথিবীর বৃহত্তম অ্যানিমল আন্ডারপাস তৈরি করেছে, যা হাইওয়ের নিচ দিয়ে যায়। তবে এমন আরও আন্ডারপাস তৈরির দিকে নজর দিতে হবে।
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রাজস্থানের রণথম্বর ও মুকুন্দ অভয়ারণ্য এবং মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যান সংযোগকারী প্রাকৃতিক করিডর সংরক্ষণের চেষ্টা চলছে। এই রাস্তা দিয়ে ঘন ঘন বাঘেদের চলাচল করতে দেখা যায়। মাস তিনেক পর বাঘেদের সঙ্গী হতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা চিতা। ভারতে শেষ চিতা মারা যায় ১৯৪৭ সালে, ছত্তিসগঢ়ে। এরপর ১৯৫২ সালে চিতাকে বিলুপ্ত প্রাণি হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এবার আফ্রিকা থেকে ১০টি চিতা আনা হচ্ছে, যাদের মধ্যে ৫টি স্ত্রী চিতা। আশা করা যাচ্ছে বাঘের সঙ্গে চিতারও গর্জনও শুনতে পাবো।
বাঘের প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত এখন মাঝপথে দাঁড়িয়ে আছে। ভারত হয় স্বল্প এবং সীমিত সংখ্যক বাঘ নিয়েই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখতে পারে। অথবা, বাঘের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০,০০ এমনকী ১৫,০০০ করে বিশ্বে ব্যাঘ্র সংরক্ষণে নজির গড়ে তুলতে পারে।