এয়ার প্রেশার সুইচ ‘ভুলবশত’ অন না করায় মাঝ-আকাশে জেটের বিমানে-আতঙ্ক, যাত্রীদের নাক-কান দিয়ে রক্তক্ষরণ, তদন্ত শুরু কেন্দ্রের
নয়াদিল্লি ও মুম্বই: বিমানের ভিতরে থাকা এয়ার প্রেশার সুইচ ‘ভুলবশত’ অন না করার ফলে মাঝ-আকাশে জয়পুরগামী জেট এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে আতঙ্ক। মাঝ-আকাশে নেমে এল আপৎকালীন অক্সিজেন-মাস্ক। অন্তত ৩০ জন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অনেকের নাক-কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হল। কারও প্রচণ্ড মাথাব্যথা তো কেউ ক্ষণিকের জন্য শ্রবণশক্তি হারালেন। আর এসবই হল একটি ‘ভুলের জন্য’। কেন্দ্রের নির্দেশে শুরু তদন্ত।
বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৫৫ মিনিট নাগাদ জেট এয়ারওয়েজের ‘৯ডব্লিউ ৬৯৭’ বিমানটি মুম্বই বিমানবন্দর থেকে জয়পুরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই যাত্রীদের কানে ও নাকে প্রচণ্ড অস্বস্তি অনুভব করেন। অনেকেরই নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে। এরমধ্যেই এক যাত্রী ভিডিও তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেন। ফুটেজে দেখা যায় সব যাত্রীই অক্সিজেন মাস্ক পরে রয়েছেন। প্রায় সকলের চোখে-মুখে আতঙ্ক।
তখনই পাইলটরা বুঝতে পারেন, বিমানের ভিতরে ‘এয়ার প্রেশার বা বায়ুর চাপ নিয়ন্ত্রণে’র সুইচটি অন করাই হয়নি। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের মুম্বই বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে জেট এয়ারওয়েজের বিমানটি। যাত্রীদের নামিয়ে বিমানবন্দরেই প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। ৫ জনকে নিয়ে যাওয়া হয় নানাবতী হাসপাতালে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনেকের শুনতে সমস্যা হচ্ছে। অন্তত ৩০ জন যাত্রীর নাক ও কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কেবিন ক্রু একটি সুইচ অন করতেই ভুলে যান। ফলে বিমানের ভিতরের বায়ুর চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। তাতেই রক্তপাত ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয় যাত্রীদের। জেট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেছে। তারা জানিয়েছে, কেবিন ক্রু-এর ভুলে বিমানের অক্সিজেনের চাপ পরীক্ষা করা হয়নি, তাই এই ঘটনা।
যদিও, ঘটনার জেরে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার। ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন জানিয়েছে, এয়ারক্র্যাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পাইলট এবং কো-পাইলটকে। পাশাপাশি, ওড়ার আগে সমস্ত বিমান এবং বিমানবন্দরগুলির সেফটি অডিটের নির্দেশ দিয়েছেন অসামরিক বিমানপরিবহণ মন্ত্রী সুরেশ প্রভু। রিপোর্ট জমা দিতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে।