অযোধ্যা: বিতর্কের সমাধান করতে তিন মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ সুপ্রিম কোর্টের, চিনে নিন তাঁদের
নয়াদিল্লি: সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ জমি বিতর্ক নিষ্পত্তি করতে শুক্রবার মধ্যস্থতারী নিয়োগ করল সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রেক্ষিতে বুধবার তিন সদস্যের মধ্যস্থতাকারী প্যানেল গঠন করেছে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ, যেখানে এই মামলার শুনানি হচ্ছে। প্যানেলের চেয়ারম্যান হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি খলিফুল্লা। অপর সদস্য আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর এবং আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চু। উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে মধ্যস্থতার কাজ হবে। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ আজ নির্দেশে জানিয়েছে, মধ্যস্থতা পর্বের কোনও বিষয়ই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা চলবে না। মধ্যস্থতার পর্ব আট সপ্তাহের মধ্যে শেষ করার নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে অগ্রগতি রিপোর্ট। প্রয়োজনে মধ্যস্থতাকারীর সংখ্যা বাড়ানোর কথাও বলেছে আদালত। বিচারপতি খলিফুল্লা: প্যানেলের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি খলিফুল্লা। তামিলনাড়ুর এই বাসিন্দা ২০০০ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন তিনি। এরপর জম্মু ও কাশ্মীরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হন ২০১১ সালে। ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০১৬ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে ১১ বছরে তিনি ৬৫ হাজারের বেশি মামলার নিষ্পত্তি করেছেন।
শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর: দ্বিতীয় সদস্য আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর। জনপ্রিয় ব্যক্তি। আর্ট অফ লিভিং ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা। তামিলনাড়ুতে জন্ম নেওয়া রবিশঙ্করের আরেকটি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান ভ্যালুজ। বিশ্বের ১৫৫টি দেশে এই দুই সংস্থার উপস্থিতি রয়েছে। তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ৩৭ কোটির বেশি। তাঁকে ভারতের পঞ্চম শক্তিশালী নেতা হিসেবে উল্লেখ করেছে ফোর্বস পত্রিকা। এর আগে, দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলন ও আন্তঃধর্ম সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। গ্রামীণ ও আদিবাসী অঞ্চলে ৬০০টি স্কুলে প্রায় ৬৫ হাজারের বেশি পড়ুয়াকে নিখরচায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছেন রবিশঙ্কর। শীর্ষ আদালতে তাঁকে মধ্যস্থতাকারী করায় শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর জানিয়েছেন, সমাজে সম্প্রীতি বজায় রেখে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এই বিবাদের সুষ্ঠু নিষ্পত্তি ঘটাতে সকলকে একসঙ্গে এগোতে হবে। সবাইকে সম্মান জানিয়ে, স্বপ্নকে বাস্তব করতে হবে।
শ্রীরাম পঞ্চু: তৃতীয় সদস্য শ্রীরাম পঞ্চু ৪০ বছরের অধিক আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। প্রসঙ্গত, মাদ্রাজ হাইকোর্টের আইনজীবী পঞ্চু মধ্যস্থতা আন্দোনলেন পথিকৃৎ হিসেবে গণ্য। ২০০৫ সালে দেশের প্রথম আদালত-সংযুক্ত মধ্যস্থতা কেন্দ্র ‘দ্য মেডিয়েশন চেম্বার্স’ এর প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। মধ্যস্থতা নিয়ে তাঁর লেখা বইও রয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে, অসম ও নাগাল্যান্ডের সীমান্ত বিতর্কেও তিনি মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করেছিলেন। পাশাপাশি, বিভিন্ন দেশী ও বিদেশি মধ্যস্থতাকারী সংগঠনের সদস্য তিনি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের প্রক্ষিতে তিনি বলেন, আদালত তাঁকে একটি গুরু-দায়িত্ব দিয়েছে। তিনি সর্বান্তকরণ প্রচেষ্টা চালাবেন সেই দায়িত্ব পালন করতে।