এক্সপ্লোর
Advertisement
শোনভদ্রের নিহতদের পরিজনদের সঙ্গে কথা, ‘লক্ষ্য পূরণ হয়েছে’, দিল্লিতে ফেরার আগে বললেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী
উত্তরপ্রদেশের শোনভদ্রে গুলিতে নিহত আদিবাসীদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া নিয়ে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের টানাপোড়েনের অবসান হল শনিবার। শোনভদ্রে নিহতদের পরিজনদের কয়েকজন মির্জাপুরে গেস্ট হাউসে এসে প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন প্রিয়ঙ্কা।
মির্জাপুর ও লখনউ: উত্তরপ্রদেশের শোনভদ্রে গুলিতে নিহত আদিবাসীদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া নিয়ে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের টানাপোড়েনের অবসান হল শনিবার। শোনভদ্রে নিহতদের পরিজনদের কয়েকজন মির্জাপুরে গেস্ট হাউসে এসে প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন প্রিয়ঙ্কা। এরপর দিল্লি আসার আগে বললেন, ‘লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। নিহতদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা হয়েছে।আজ আমি যাচ্ছি। কিন্তু আবার আসব’।
কয়েকদিন আগে শোনভদ্রের এক গ্রামে জমি বিবাদে দশ জন আদিবাসীকে গুলি করে খুন করা হয়। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গতকাল শোনভদ্রের ওই গ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু পথে মির্জাপুরে পুলিশ তাঁকে বাধা দেয় এবং মির্জাপুরের একটি গেস্ট হাউসে নিয়ে আসে। স্থানীয় প্রশাসনের প্রস্তাব অনুযায়ী ব্যক্তিগত বন্ড জমা দিয়ে চলে যাওয়ার প্রস্তাব উপেক্ষা করে সেখানেই গতকাল সারারাত ছিলেন তিনি।
প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, যাঁরা তাঁকে ‘গ্রেফতার’ করে চুনার গেস্ট হাউসে এনেছিলেন, তাঁরাই এখন বলছেন যে, তিনি চলে যেতে পারেন।
গেস্ট হাউসে আসা দলের কর্মীদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘আমি তাঁদের বলতে চাই যে, আমার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। নিহতদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা হয়েছে।আজ আমি যাচ্ছি। কিন্তু আবার আসব’।
উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা অজয় রাই বলেছেন, প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গে মির্জাপুর জেলা প্রশাসনের অচলাবস্থার অবসান হয়েছে। তিনি শোনভদ্রর শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
রাই জানিয়েছেন, প্রিয়ঙ্কা সাত মহিলা সহ নিহতের পরিবারগুলির ১৫ জন সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছেন।
শোনভদ্রর ঘোরাওয়াল এলাকায় উভা গ্রামে গত বুধবার যোগ্য দত্ত নামে গ্রামের প্রধান জমি দখল করতে এলে গণ্ডগোল বেধে যায়। গোন্ড আদিবাসী সম্প্রদায়ের ১০ জন গুলিতে নিহত হন। আরও ২৮ জন জখম হয়েছিলেন।
গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখা করার পর প্রিয়ঙ্কা বারাণসীর উদ্দেশে রওনা দেন, সেখানে তিনি কাশী বিশ্বনাম ও কাল ভৈরব মন্দিরে যান।
পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কার গাঁধীকে শোনভদ্রে যেতে না দেওয়ায় দলের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। কংগ্রেস নেতারা প্রিয়ঙ্কাকে বেআইনিভাবে আটক করে রাখার অভিযোগ করেন এবং দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হয়।
এদিন বারাণসী বিমানবন্দরে আসেন কংগ্রেস নেতা আরপিএন সিংহ, জিতিন প্রসাদ। কিন্তু শোনভদ্র বা চুনারে যাওয়ার আগেই তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।
শোনভদ্রে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কাকে দেখা করতে দিতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশজানের আর্জি জানিয়ে রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছেন যে, শোনভদ্র সংঘর্ষের পর ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি শোনভদ্রর ওই গ্রামে কয়েক দশকের পুরানো জমি বিবাদের জন্য পূর্বতন কংগ্রেস সরকারকে দায়ী করেছিলেন।
প্রিয়ঙ্কা বিএইচইউ ট্রমা সেন্টারে সংঘর্ষের ঘটনায় শিকার কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। কিন্তু এরপর সড়কপথে শোনভদ্রে যাওয়ার সময় মির্জাপুর জেলার নারাইনপুরে তাঁকে বাধা দেয় পুলিশ। কিন্তু তিনি শোনভদ্রের উভা গ্রামে যাওয়ার দাবিতে অনড় থাকলে তাঁকে ও তাঁর সমর্থকদের গেস্ট হাউসে নিয়ে আসা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শোনভদ্রে যেহেতু নিষেধাজ্ঞা বলবত্ রয়েছে, সেজন্য তাঁকে 'আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আটক' করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয়ঙ্কাকে এভাবে বাধাদানের সমালোচনা করেন রাহুল গাঁধী।
গেস্ট হাউসেই নিহতদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করার পর প্রিয়ঙ্কা অভিযোগ করেন, হিংসা প্রতিরোধে ঠিক সময়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি শোনভদ্র প্রশাসন। অনেক শিশুই তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছে। কয়েকটি পরিবারের শিশু ও তাদের বাবা-মায়ের হাসপাতালে ভর্তি।
নিহতদের পরিজনদের পাশে কংগ্রেস রয়েছে জানিয়ে প্রিয়ঙ্কা নিহত ও আহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও যে জমিতে তাঁরা কয়েক প্রজন্ম ধরে চাষের কাজ করছিলেন, সেটির মালিকানা তাঁদেরই দেওয়ার দাবিও প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছেন। নিরীহ গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলি দায়ের হয়েছে সেগুলি প্রত্যাহার করারও দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী।
ট্যুইটারে প্রিয়ঙ্কা লিখেছেন, ‘শেষপর্যন্ত উভায় গণহত্যার শিকারদের পরিবারগুলির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে পারলাম। তাঁদের ওপর যা হয়েছে তা খুবই নৃশংস ও অন্যায়। মানবিকতার খাতিরে প্রত্যেক ভারতীয়র তাঁদের পাশে দাঁড়ানো দরকার’।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
বিনোদনের
হুগলি
জেলার
Advertisement