Militants Plan : জেল ভেঙে জঙ্গি ছিনতাই, মুর্শিদাবাদে ছোটখাট স্যাটেলাইট স্টেশন তৈরি; মারাত্মক ছক ছিল ধৃত জঙ্গিদের : সূত্র
Operation Praghat: অসম পুলিশের 'অপারেশন প্রঘাতে' গ্রেফতার হয়েছে বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠী আনসারুল্লা বাংলা টিমের একাধিক জঙ্গি ! ধৃত ১২ জনের মধ্যে ২ জনকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছে অসম পুলিশ।
আবির দত্ত, সন্দীপ সরকার, সৌমিত্র রায়, কলকাতা : মুর্শিদাবাদে ছোটখাটো স্য়াটেলাইট স্টেশন তৈরি থেকে, বহরমপুরের জেল ভেঙে জঙ্গি ছিনতাই। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এরকম মারাত্মক সব ছক ছিল গ্রেফতার হওয়া আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গিদের। ধৃত ABT জঙ্গি নুর ইসলাম মণ্ডল ট্রেনিং-ও নিয়েছিল কুখ্যাত শিমুলিয়া মাদ্রাসায়। জঙ্গিদের এই খাগড়াগড়-কানেকশন এক কথায় গোয়েন্দাদের চমকে দিয়েছে।
অসম পুলিশের 'অপারেশন প্রঘাতে' গ্রেফতার হয়েছে বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠী আনসারুল্লা বাংলা টিমের একাধিক জঙ্গি ! এখনও অবধি ধৃত ১২ জনের মধ্যে ২ জনকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছে অসম পুলিশ। এমনকী কেরল থেকে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই বাংলাদেশি নাগরিক শাদ রাডিরও বাড়ি মুর্শিদাবাদেই। অর্থাৎ উদ্বেগ-আশঙ্কা পশ্চিমবঙ্গেও! এই পরিস্থিতিতে অসমে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে পৌঁছেছে এবিপি আনন্দ। উঠে আসছে একের পর এক ভয়ঙ্কর তথ্য়।
খাগডাগড় বিস্ফোরণকাণ্ডে জড়িত জঙ্গি গোষ্ঠী, জামাত উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ কিংবা জেএমবির সঙ্গে বর্তমানে বাংলাদেশে অত্য়ন্ত শক্তশালী ও সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলাদেশ টিমের সম্পর্ক অত্য়ন্ত জোরাল ! সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গি যে আব্বাস আলিকে গ্রেফতার করে অসম পুলিশের STF, সেই আব্বাস যখন পকসো মামলায় বহরমপুর জেলে বন্দি ছিল, সেইসময় জেলে তার সঙ্গে আলাপ হয় খাগড়াগড়কাণ্ডে ধৃত জঙ্গি, সাদিক সুমন ওরফে তারিকুল ইসলামের। আর তখনই সাদিককেই জেল থেকে বের করার ছক কষছিল ABT-র জঙ্গিরা ! জেল ভেঙে তাকে মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
অসমে মূল প্রশিক্ষণ শিবির তৈরি করলেও, সূত্রের দাবি, ভৌগলিক অবস্থানের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে জঙ্গিগোষ্ঠী সংখ্য়ালঘু অধ্য়ুষিত জেলা মুর্শিদাবাদে ছোটখাটো 'স্য়াটেলাইট শিবির' তৈরির ছক কষেছিল ! বিশেষজ্ঞদের মতে, আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গিদের পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি গেড়ে থাকা অত্য়ন্ত বিপজ্জনক। তার কারণ, ABT-র বহু জঙ্গি, আগে জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা JMB-র সঙ্গে যুক্ত ছিল। আর JMB হল সেই সংগঠন, যাদের জঙ্গিরা সেই ২০১৪ সালেই নাশকতার ছক নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছিল। বর্ধমানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে, সেখানে বিস্ফোরক বানাচ্ছিল।খাগড়াগড়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণে সেই চক্রান্ত ফাঁস হয়ে যায়।
এরপর বাংলাদেশে হাসিনা সরকার তৎপর হতেই, জেএমবির জঙ্গিরা নাম লেখায় আনসারুল্লা বাংলা টিমে। আর এবার তারা ঘাঁটি গাড়ছে এরাজ্য়ে। ABT-র ধৃত ১২জন জঙ্গির অন্যতম নুর ইসলাম মণ্ডল। তার বাড়ি অসমের কোকরাঝাড়ে হলেও পুলিশ সূত্রে দাবি, খাগড়াগড়কাণ্ডের আগে নুর ইসলাম কুখ্য়াত শিমুলিয়া মাদ্রাসায় ট্রেনিং পর্যন্ত নিয়েছিল। এমনকী তাঁর অবাধ যাতায়াত ছিল আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটাতেও।
অপারেশে প্রঘাতে ধৃত নুর ইসলামকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অসমের বরপেটার এই জায়গা থেকেই প্রায় ২০৭ কিমি দূরে পশ্চিমবঙ্গের ফালাকাটাতে কমপক্ষে ২-৩ বার বিভিন্ন বাড়িতে দাওয়াতের নামে বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিল এবিটির আরও কয়েকজন সদস্য। কী পরিকল্পনা তাদের হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
ধরা পড়েছে হাতে গোনা কয়েকজন জঙ্গি। কিন্তু আর কারা গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে ? আমাদের আশেপাশেই কি লুকিয়ে রয়েছে আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গিরা ?