Bangladesh News: ‘কাজে বাধা দিলে, ষড়যন্ত্রে শামিল হলে…’, পদত্যাগের জল্পনার মধ্যেই কড়া বার্তা বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের
Muhammad Yunus: নির্বাচন করানো নিয়ে চাপের মধ্যেই শনিবার ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক বসে।

ঢাকা: নির্বাচন করানো নিয়ে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন সেনাপ্রধান। চাপ বাড়ানো হচ্ছে BNP-র তরফেও। সেই আবহে কড়া বিবৃতি দিল বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তারা জানিয়েছে, সরকারকে নিজের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া হলে, অযৌক্তিক দাবিদাওয়া সামনে রেখে চাপ সৃষ্টি করা হলে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। (Bangladesh News)
নির্বাচন করানো নিয়ে চাপের মধ্যেই শনিবার ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হিসেবে তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়-নির্বাচন, সংস্কার ও ন্যায় বিচার। সেই বৈঠক মিটলে সরকারের তরফে কড়া বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। যাতে বলা হয়, 'পরাজিত কোনও শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশের মাটিতে রচিত ষড়যন্ত্রের উপর ভিত্তি করে সরকারের কাজে যদি বাধা দেওয়া হয়, সরকারি দায়িত্বপালন যদি অসম্ভব করে তোলা হয়, সমস্ত কার্যকারণ সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত গৃহীত ববে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার'। (Muhammad Yunus)
ইউনূসের দফতরের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সোশ্যাল মিডিয়ায় যে বিবৃতি তুলে ধরে জানান, নানা অযৌক্তিক দাবিদাওয়া তুলে ধরে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এক্তিয়ার বহির্ভূত মন্তব্য ও কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশে বাধা তৈরি করা হচ্ছে। মানুষের মনে সংশয় ও সন্দেহের পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে এতে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে, নির্বাচন করাতে, স্বৈরাচারের আগমন ঠেকাতে এবং সংস্কার ও বিচারের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে সার্বিক ঐক্য প্রয়োজন।
ইউনূস সরকার জানিয়েছে, গত বছর জুলাই মাসে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে জনমনে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, সেই প্রত্যাশাপূরণে অবিচল তারা। কিন্তু সরকারের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করার কাজ অসম্ভব করে তোলা হলে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবে না সরকার। এব্য়াপারে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনাতেও আগ্রহ দেখানো হয়েছে।
আগামী কালই ইউনূস দেশের আটটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন। ইউনূসের পদত্যাগ ঘিরে যখন জোর জল্পনা চলছে, সেই আবহেই পর পর বৈঠককে ঘিরেও নানা কথা শোনা যাচ্ছে। যদিও এখনই ইউনূসের পদত্যাগের কোনও পরিকল্পনা নেই বলে শনিবার রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমকে জানান দেশের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি জানান, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। নির্বাচন করানো এবং সুশাসন কায়েম করার পথে যে বাধা-বিপত্তি আসছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে।
গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ইউনূস। কিন্তু তাঁর আমলেও অস্থিরতা কাটেনি বাংলাদেশে। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন থেকে আর্থিক অবস্থা সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের প্রতি অসন্তোষ রয়ে গিয়েছে এখনও। সেই আবহেই সম্প্রতি বাংলাদেশের সেনাপ্রধান নির্বাচন করানোর জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। BNP-র তরফেও দ্রুত নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবি তোলা হয়। এসবের মধ্যে বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালেন দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা, নাহিদ ইসলাম। BBC Bangla-কে তিনি জাানন, পদত্যাগের কথা ভাবছেন ইউনূস। নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। মতের মিল হচ্ছে না রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে। গোটা পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পদত্যাগের কথা ভাবছেন। সেই আবহেই ইউনূস সরকারের আজকের এই বিবৃতি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।























