Fishermen Return: নিরীহ মৎস্যজীবীদেরও ছাড়েনি বাংলাদেশ ! পিছমোড়া করে মার ! বর্ণনা করতে গিয়ে কেঁদেও ফেললেন অনেকে
India Bangladesh Relations: ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে চরম টানাপোড়েনের মধ্য়েই দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশে আটকে থাকা, ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্য়জীবী।
গৌতম মণ্ডল, কাকদ্বীপ : বাংলাদেশ থেকে বাড়ি ফিরেছেন কাকদ্বীপ মহকুমার ৯৫ জন মৎস্যজীবী। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী সাগরের সভা থেকে জানিয়েছিলেন, এই মৎস্যজীবীদের ওপর বাংলাদেশি নৌবাহিনীর অত্যাচারের কথা। সেই অত্যাচারের কথা এবার শোনা গেল বাংলাদেশ ফেরত মৎস্যজীবীদের মুখেও। অত্যাচারের বর্ণনা করতে গিয়ে অনেকে কেঁদেও ফেললেন। এই অত্যাচারের মুখে পড়ে গুণমণি দাস নদীর জলে ঝাঁপ দেন। তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তাঁর।
বাংলাদেশ ফেরত অত্যাচারিত মৎস্যজীবী সুভাষ দাস বলেন, "মেরে দিয়েছে আমাকে। মানে, পিছনে ধাক্কা মেরে দিয়েছে। ওদের প্রচুর স্পিড। আমার সীমান্তে এসে কেন আমাকে নিয়ে যাবে ? এইজন্য ওর সঙ্গে একটু তর্কাতর্কি করি। রাগ করে আমাকে মারে। এরপর আমার ৫ জন লোক জলে পড়ে যান। যখন বোটটা কাত হয়ে যায়, তখন পড়ে যায়। তুলতে দিচ্ছিল না, তাও অনেক কষ্টে চেষ্টা করে ৪ জনকে তুলেছি। আর একজনকে খুঁজতে দেয়নি। অক্টোবরের ১৬ তারিখ রাত তখন ৩টে বাজে। আমার একটা লোক তখনও আছে। বলে, এখানে থাকা যাবে না। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী আসতে পারে। বলে, চালু করে ওকে টেনে নিয়ে চলো। দড়ি দিয়ে সবাইকে বেঁধে ফেলেছে। মারধর আরম্ভ করছে সবাইকে। আমার ছেলে কান্নাকাটি করল। লোকজন কান্নাকাটি করল। আমার গলায় বুট পা রাখে। পায়ের তলায় মারে। আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। ছেলে বলে, আমার বাবার বুকে অসুবিধা। বাবাকে ছেড়ে দেন। নাহলে, আমার বাবা বাঁচবে না। বললাম, একটু জল দেন। বলে, ইন্ডিয়ান। তোকে জল দেওয়া যাবে না।"
সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, "অতীতেও অনেকবার এ দেশের মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশ জল সীমানায় ঢুকে পড়েছে। কিন্তু কোনও বার এত অত্যাচার করা হয়নি। এবার বাংলাদেশের অশান্তির প্রেক্ষিতে অত্যাচার সীমা ছাড়িয়েছে। ৯৫ জনের মধ্যে ২২ জনের আঘাত গুরুতর। তাঁঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।"
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে চরম টানাপোড়েনের মধ্য়েই দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশে আটকে থাকা, ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্য়জীবী। সোমবার গঙ্গাসাগরে, তাঁদের স্বাগত জানান মুখ্য়মন্ত্রী। আর তাঁর মুখেই উঠে আসে বাংলাদেশে ধীবরদের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ ! মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমি জিজ্ঞেস করলাম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছেন কেন ? তাঁরা বলতে চাননি। জানতে পারলাম যে তাঁদের কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। তাঁদের নিয়ে গিয়ে হাত দু'টো দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং তাঁদের মোটা লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। কোমর থেকে পা পর্যন্ত চোট। জামা কাপড় পড়ে আছে বলে বোঝা যাচ্ছে না। তাঁরা কাঁদছিলেন, জিজ্ঞেস করেছিলাম, বুঝতে পেরেছিলাম।"
অর্থাৎ, কাকদ্বীপের নিরীহ মৎস্যজীবীদেরও ছাড়েনি বাংলাদেশ ! জলসীমানা পেরোনোর অভিযোগে গ্রেফতারের পরেই অকথ্য অত্যাচার করা হয় ! পিছমোড়া করে মৎস্যজীবীদের মার !