Bangladesh Situation Updates: বাংলাদেশে নিহতের শরীর লক্ষ্য করেও গুলি, জায়গা নেই হাসপাতালগুলিতে, অথচ হতাহতের পরিসংখ্যান নেই কারও কাছে?
Bangladesh Death Toll: হতাহতের হিসেব নেই, ঘটনার দিন উপস্থিত ছিলেন না, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমন অজুহাত দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।
ঢাকা: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে দেখানো হলেও, সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশে মৃত্যুসংখ্যা বেড়েই চলেছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২০৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছিল। কিন্তু হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারি ভাবে কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি এখনও পর্যন্ত। কিন্তু নিখোঁজ-সহ নাম ধরে ধরে সকলকে খুঁজতে গেলে দেখা যাচ্ছে, সংখ্যাটা অনেক বেশি। শনিবার সকালে আরও ন’জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। হাসপাতালগুলিতে রোগী ধরছে না প্রায়। কিন্তু সরকারি বা বেসরকারি, কোনও হাসপাতালই নির্দিষ্ট ভাবে তথ্য দিতে রাজি হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’। হতাহতের হিসেব নেই, ঘটনার দিন উপস্থিত ছিলেন না, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমন অজুহাত দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। (Bangladesh Situation Updates)
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপুরা এলাকায় ডিআইডি রোডের পাশে বেশ কিছু হাসপাতাল রয়েছে। ২০ জুলাই পর্যন্ত লাগাতার সংঘর্ষ, বিক্ষোভ হয়েছে সেখানে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধেয় সেখানকার একটি হাসপাতালে প্রায় ৩০০ জনকে আহত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে খবর। এমনকি অনেক মৃতদেহও হাসপাতালে পৌঁছয় বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কোনও তথ্য দিতে রাজি হয়নি ওই হাসপাতাল। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, ১৮-১৯ বছরের তরুণ-সহ বয়স্ক, অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে গত কয়েক দিনে। মাথায় গুলি লেগে মারা যান এক ব্যক্তি। বেশ কয়েক ঘণ্টা তাঁর দেহ রাস্তায় পড়েছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ মৃতদেহটি নিতে রাজি হয়নি, তাতে একটি হাসপাতালের উপর রাগ গিয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীদের। ভাঙচুর চলে হাসপাতালে। এর পর পুলিশ দেহটি নিয়ে যায়। (Bangladesh Death Toll)
ঢাকার রামপুরা-বাড্ডা, মীরপুর, মহম্মদপুর-বসিলা, যাত্রাবাড়ি, শনির আখড়ার মতো এলাকা লাগাতার অশান্তি এবং সংঘর্ষের সাক্ষী থেকেছে। সেখানকার বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলিতেও দলে দলে রোগীদের নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আহতের সংখ্যা ঠিক কত, মারা গিয়েছেন কত, কিছুই জানা যাচ্ছে না। কিন্তু একের পর এক ভয়াবহ ঘটনা উঠে আসছে। নরসিংদিতে ১৫ বছর ব.সি তাহমিদ ভুঁইয়া তামিম নামের এক কিশোর রবার বুলেটের আঘাতে মারা যায়। তামিমের দেহ স্ট্রেচারে তুলে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। সেই সময় পুলিশ গুলি চালালে তামিমের নিথর দেহেও গুলি লাগে বলে অভিযোগ। তামিমের বাবা রফিকুল ইসলাম পেশায় চিকিৎসক। তিনি জানিয়েছেন, ১০০ গজ দূর থেকে অসহায়ের মতো ছেলের নিথর দেহে গুলি লাগতে দেখেন।
সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন হিংসাত্মক এবং রক্তাস্নাত হওয়ার জন্য এখনও পর্যন্ত জামায়ত এবং BNP-কেই দায়ী করছে শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু হাসিনার দল আওয়ামি লিগ এবং তাদের ছাত্র সংগঠনের হাতেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হিংসাত্মক আকার ধারণ করে বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে দলের অন্দরেও এই মুহূর্তে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে বলে খবর। এই হিংসা রুখতে দল কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে রব উঠছে দলের অন্দরেই। দলীয় নেতৃত্ব যেভাবে এই আন্দোলনকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করছেন, তাতে সাংগঠনিক ব্যর্থতাই প্রকট হচ্ছে এবং তাতে জনসমর্থন উঠে যাচ্ছে বলে মত অনেকের।
দেশের অন্দরে তো বটেই, আন্তর্জাতিক মহলেও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ছেন হাসিনা খোদ। দেশের নাগরিকদের একাংশকে ‘রাজাকার’ বলে দাগিয়ে দেওয়ায় শাসক হিসেবে তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মীরপুরে গিয়ে ভাঙচুরের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো স্টেশন দেখে তিনি যে চোখের জল ফেলেছেন হাসিনা, তাকে ‘কুম্ভীরাশ্রু’ বলে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। মেট্রো স্টেশনে গেলেও নিহত ছাত্রদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার সময় কেন পেলেন না তিনি, প্রশ্ন ওঠে। সেই আবহে শনিবার সকালে জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে আহতদের দেতে যান হাসিনা। আহতদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে ইতিমধ্যেই কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে হাসিনা সরকারকে। সংবাদমাধ্যমকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না, হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে তারাও। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মাপকাঠি অনুযায়ী হাসিনা সরকারকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।