মীরপুরের স্কুলের প্রিন্সিপাল-ভাইস প্রিন্সিপালকে খুনের ছক, সঙ্গে ছিল পিস্তল, পটাসিয়াম সায়ানাইড, জেরায় জানাল ওমর ফারুখ
কলকাতা: ওমর ফারুখ ওরফে মাহি! আনসারুল্লা বাংলা টিমের ‘এক্সপ্লোসিভ উইংয়ের’ সক্রিয় সদস্য! আইইডি তৈরি এবং ব্যবহারে একেবারে পাকা মাথা! ধরা পড়ার পরেও সেই বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল জঙ্গি মাহি, কিন্তু ব্যর্থ হল কৌশল! কলকাতা পুলিশের এসটিএফ সূত্রে খবর, মাহি প্রথমে দাবি করে, ২০১৬ সালে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে খুনের ছক কষেছিল। কিন্তু, পুলিশ পৌঁছে যাওয়ায় ওই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। মাহির দাবি ছিল, তার দুই সঙ্গীকে এনকাউন্টারে মারে বাংলাদেশ পুলিশ। এরপরই সেখান থেকে পালিয়ে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসে মাহি। এই তথ্য যাচাই করতে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে লালবাজার। কিন্তু ওপার থেকে আসা উত্তরে এপারের গোয়েন্দারা বুঝে যান, মিথ্যে বলে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতে চাইছে এবিটি-র জঙ্গি মাহি। ফের শুরু হয় জেরা। তখন বয়ান বদলে সে জানায়, প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালকে খুনের উদ্দেশ্যে সে মীরপুরের একটি স্কুলে গিয়েছিল। সঙ্গে ছিল তার দুই সহযোগী রুবেল ও সোহেল। জঙ্গিদের কাছে ছিল নাইন এম এম পিস্তল। ইঞ্জেকশনের মধ্যে পটাসিয়াম সায়নাইড, স্ক্রু ড্রাইভারও নিয়েছিল জঙ্গিরা! মাহির দাবি, তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা র্যাব। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় এক পুলিশকর্মী জখম হন। মাহির দাবি, সংঘর্ষ চলাকালীন সে এবং সোহেল পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ধরা পড়ে যায় রুবেল। তারপরই সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসে মাহি ওরফে ওমর ফারুখ। ৮ থেকে ১১ অক্টোবর হাওড়ার এই হোটেলেই ছিল সে! সঙ্গে ছিল এবিটি-র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তনবীর! তনবীর-সহ ২ জন কলকাতা স্টেশন থেকে ধরা পড়লেও তখন মাহির হদিশ মেলেনি। এসটিএফ সূত্রে খবর, সে ততক্ষণে হাওড়া থেকে দুর্গাপুর, পরে সেখান থেকে শিলিগুড়ি পৌঁছে গিয়েছিল! যদিও মাহির উঃবঙ্গে যাওয়ার খবর জানতে পেরে যায় পুলিশ। অবশেষে নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন দার্জিলিঙের পানিট্যাঙ্কি থেকে এবিটি-র এই বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে একটি বিস্ফোরক তৈরির বই, ম্যাপ এবং জাল আধার কার্ড উদ্ধার হয়েছে। রুজু হয়েছে রাষ্ট্রদোহিতার মামলা। এদিন তাকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ করা হলে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠান বিচারক। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার এই মামলার তদন্ত করবেন বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওমরের গ্রেফতারির পর এবিটি-র আরও দুই জঙ্গি তামিম ও নয়ন গাজিকে খুঁজছে এসটিএফ।