‘খালি পেটে হারাতে পারবেন না, লুচি খেয়ে যান’, জ্যোতি বসুর প্রতি বিরল সৌজন্য বিধানচন্দ্রের
৬৮ বছর পর, আরেক বিধানসভা ভোটের আগে, সেই বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যেই, পাশাপাশি দাঁড়িয়ে জোটের জমি আরও মজবুত করল বাম-কংগ্রেস।
কলকাতা: সময়টা ছিল ১৯৫২। ভোটের প্রাককালে রাজনৈতিক সভা থেকে একে অপরকে তীব্র আক্রমণ করছেন বিধানচন্দ্র রায় এবং জ্যোতি বসু। একদিন চৌরঙ্গীতে বিধানচন্দ্র রায়ের জনসভা। সেখানে পৌঁছে গাড়ি থেকেই বিধানচন্দ্র রায় দেখেন, জ্যোতি বসু হেঁটে যাচ্ছেন। তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে বিধানচন্দ্র রায় জানতে চান, তিনি কোথায় যাচ্ছেন?
উত্তরে জ্যোতি বসু বলেন, আপনারা ট্রামের ভাড়া বাড়িয়েছেন। আজ প্রতিবাদ মিছিল আছে। শুনে বিধানচন্দ্র রায় বলেন, খালি পেটে বিধান রায় আর কংগ্রেসকে হারানো যাবে না। গাড়িতে এসো, খানকয়েক লুচি আছে, দুজন মিলে খাই। তারপর তুমি গিয়ে বিধান রায়কে গালাগালি কর।
পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়।রাজনৈতিক বিরোধিতা সেদিন বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। ৬৮ বছর পর, আরেক বিধানসভা ভোটের আগে, সেই বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যেই, পাশাপাশি দাঁড়িয়ে জোটের জমি আরও মজবুত করল বাম-কংগ্রেস।
এদিন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে যান সুজন চক্রবর্তী, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বাম নেতারা। কংগ্রেস এবং বাম নেতাদের বক্তব্যে বারবার উঠে আসে জোটের কথা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, “মতামত আলাদা হলেও সময়ের প্রয়োজনেই দুই দল একসঙ্গে হয়েছে।”
বিধানচন্দ্র রায় মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন, তাঁর সবথেকে বড় সমালোচক ছিল বামেরা। তবে এদিন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যবোধের প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান শাসককে বিঁধেছেন তারা। সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, “সেসময় মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছিল বামেরা। সেই সময় আর নেই। পরিপ্রেক্ষিত পাল্টে গিয়েছে। বিরোধী দলকে অসম্মানের জায়গা নেই। বর্তমান শাসকের কাছে সেই ব্যবহার পাওয়া যায় না। দু’টি ভিন্ন সময়।”