আরও ছড়াচ্ছে ডায়েরিয়া, আতঙ্কের মধ্যেই সন্তোষপুরে পুরসভার জলে মিলল পোকা
কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় যখন ঘরে ঘরে ডায়েরিয়া, অসুস্থ অসংখ্য মানুষ। পুরসভার জল ঘিরে আতঙ্ক চারিদিকে, তখন সেই জল থেকেই পোকা বেরনোর অভিযোগ!
এ ছবি সন্তোষপুর এলাকার সিক্সথ রোডের। যেখানে ইতিমধ্যেই থাবা বসিয়েছে ডায়েরিয়া! এলাকাবাসীর দাবি, গত কয়েকদিন ধরে পুরসভার কল খুললেই বালতিতে পড়ছে বড় বড় পোকা! ২-৩ বালতি জল ফেলে দেওয়ার পর তবেই পোকা থেকে মুক্তি মিলছে!
অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবারই পুরসভার তরফে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীদের অনেকেই বলছেন, পুরসভার জল ছেড়ে, এখন কেনা জল খেলেও শরীর খারাপ কমার কোনও লক্ষণ নেই!! কারণ, বিশুদ্ধ ভেবে যে জল মোটা টাকা দিয়ে আপনি কিনে খাচ্ছেন, সেটা ভরা হচ্ছে পুরসভারই কল থেকে!!
একটা নয়, মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার একাধিক জায়গায় ক্যামেরাবন্দি হয় সেই ছবি!! কেউ কেউ আবার বুক ফুলিয়ে অসাধু কারবারের কথা কবুলও করলেন! এক জল বিক্রেতা অকপট বললেন, হ্যাঁ আমরা পুরসভার কল থেকে জল ভরে বিক্রি করছি। জল বিক্রেতার সাফাই, এদিকে তো ডায়েরিয়া হচ্ছে না, তাই এদিক থেকে পুরসভার কল থেকে জারে জল ভরছি।
এরমধ্যেই ডায়েরিয়া আক্রান্ত এলাকাগুলিতে কেনা জলের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে!! কোথাও কোথাও ২৫ টাকার জল বিকোচ্ছে ৪০ টাকায়!! কিন্তু, তাতেও শুদ্ধতার গ্যারান্টি নেই!
এদিকে, শুক্রবার থেকে আটটি ওয়ার্ডে রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছিল। তালিকায় নতুন সংযোজন ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডও! এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ক্রমেই ভিড় বাড়ছে। বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এখন ৩০ জন চিকিৎসাধীন।
সূত্রের খবর, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৯ জন ভর্তি আছেন। এম আর বাঙ্গুরে চিকিৎসা চলছে ৪ জন ডায়েরিয়া রোগীর। বাঘাযতীন হাসপাতাল থেকে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে রোগীদের মলের নমুনা পাঠানো হয়েছিল।সূত্রের খবর, ওই পরাক্ষার ফলাফল এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কালচার রিপোর্টের জন্য আরও ২৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে মলের নমুনায় প্রাথমিকভাবে পেটের রোগ সৃষ্টিকারী একাধিক ব্যাকটরিয়ায় উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে নাইসেডে রোগীদের মলের যে নমুনা পাঠানো হয়েছিল, সেখানেও পেটের রোগ সৃষ্টিকারী একাধিক ব্যাকটেরিয়ায় উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। তবে কোন ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি, এবং কোনও ভাইরাস রয়েছে কিনা, তা জানতে আরও ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে।