এক্সপ্লোর

ভিডিও বানিয়েই হতো মোটা আয়! নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতীয় অ্যাপের অপেক্ষায় বাংলার জনপ্রিয় টিকটকাররা

কোন পদ্ধতিতে আয় করতেন ‘টিকটকার’-রা? কেনই বা জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল এই চিনা অ্যাপ? খোঁজ নিল এবিপি আনন্দ।

কলকাতা: অ্যাপে ফলোয়ার ১৮ লাখ! তাহলে ডাক আসতেই পারে কোনও রেস্তোরাঁর উদ্বোধনে। রাজি হলেই লক্ষীলাভ। সঙ্গে চুক্তিমতো বিনামূল্য়ে খাওয়াদাওয়া। অ্যাপে ফলোয়ার্সের সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়ালে? ভ্রমণের সব খরচ মেটাতে রাজি হয়ে যাবে কোনও সংস্থা। তার বদলে কেবল একটা ছোট্ট ভিডিও করে তাদের প্রচার করতে হবে। উপরি পাওনা হিসাবে রয়েছে মোটা অর্থপ্রাপ্তিও। এমনকী, কয়েকমাস আগে মুক্তি পাওয়া র্যা পার বাদশার যে গানে মেতেছিল গোটা দেশ, সেই ‘গেন্দাফুল’ রিলিজও নাকি হয়েছিল কোনও এক বাঙালি জনপ্রিয় অ্যাপ তারকার হাত ধরে! কথা হচ্ছে তাকে নিয়ে, যার জনপ্রিয়তা ছিল বাতিল হওয়া ৫৯টি চিনা অ্যাপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ভারতে অনায়াসেই পেয়েছিল কয়েক মিলিয়ন ইউজার। টিকটক। আট থেকে আশি, সকলের কাছেই হয়েছিল সমান জনপ্রিয়। তবে কেবল সময় কাটানো বা বিনোদন হিসাবে নয়, টিকটক হয়ে উঠেছিল অনেকের পেশাও। টিকটকে জনপ্রিয় এবং প্রচুর ফলোয়ার থাকা ব্যক্তিদের নামই হয়ে গিয়েছিল, ‘টিকটকার’। লাদাখে সংঘাতের আবহে এই অ্যাপ ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ায় বিশ বাঁও জলে টিকটকারদের রোজগার। ঠিক কীভাবে রোজগার করা যেত এই চিনা অ্যাপ থেকে? টিকটকের এই আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তার পিছনে ছিল কী কী কারণ? টিকটক তারকাদের থেকে এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজল এবিপি আনন্দ। টেলি দুনিয়ায় এখন বেশ জনপ্রিয় তারকা নীল। পাশাপাশি টিকটক অ্যাপেও তাঁর ফলোয়ার্সের সংখ্যা ছিল কয়েক মিলিয়ন! শ্যুটিং-এর ফাঁকে হামেশাই টিকটকে মজতে দেখা যেত নীলকে। শুধু কি নীল? টলিপাড়ায় জনপ্রিয় টিকটকারের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কলকাতায় অভিনেতাদের মধ্যে সবচেয়ে আগে টিকটকে ভেরিফায়েড প্রোফাইলের তকমা পেয়েছিলেন সায়ক চক্রবর্তী। টিকটকে তাঁর ফলোয়ার্সের সংখ্যা তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। নিয়মিত ভিডিও পোস্ট করতেন। সময় পেলেই টিকটক করা যেন প্রায় স্বভাবে পরিণত হয়েছিল আরেক টেলি তারকা মিষ্টি দাসের। শুধু তাই নয়, কাস্টিং থেকে লুক সেট, সবকিছুতেই নাকি সাহায্য করত টিকটক! শুধু টেলি তারকা নয়, কেবল টিকটকের দৌলতেই প্রবল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন একাধিক যুবক-যুবতী! যেমন প্রীতম হোম চৌধুরী। টিকটকে তাঁর ফলোয়ার্সের সংখ্যা ১৮ লাখ! পিছিয়ে নেই প্রকাশ শিকদার, বা চন্দ্রিমা মুখোপাধ্যায় জেফারের মতো টিকটক তারকারাও। এই চিনে অ্যাপকেই রীতিমতো পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা। ৬০ সেকেন্ডের ভিডিওর বানাতেই মাঝে মধ্যে চলে যেত গোটা দিন। উপার্জনও নেহাৎ মন্দ হতো না। কেমন করে উপার্জন হতো টিকটক থেকে? নীল, প্রীতম, সায়ক, মিষ্টিরা জানাচ্ছেন, প্রধানত বিভিন্ন অ্যাপ, সংস্থা, রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে গান বা চ্যানেলের প্রচার করেই হত উপার্জন। ফলোয়ার্সের সংখ্যা বেশি হলেই আবদার আসত নতুন ভিডিওতে প্রমোশন করে দেওয়ার। তারপরেই চুক্তিমতো টাকা চলে আসত পকেটে। কিছু সময় আবার পাওয়া যেত একেবারে চাকরির প্রস্তাবও। কেউ ভিডিও প্রতি টাকা পেতেন, কেউ ফলোয়ার্স ভিত্তিক আবার কেউ কেউ প্রমোশনাল ভিত্তিক। নীল জানাচ্ছেন, অভিনয়ের পাশাপাশি টিকটক থেকে বেশ কিছুটা উপার্জন হত তাঁর। বললেন, ‘এই অ্যাপে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রোমোশন করে বছরে প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা উপার্জন হতো।’ টিকটকের সঙ্গে অপর চিনা অ্যাপ ভিগো ভিডিও থেকেও উপার্জন করতেন সায়ক। এবিপি আনন্দকে বললেন, ‘ভিগো ভিডিও থেকে মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতন পেতাম। টিকটক থেকে আয় হতো অন্তত হাজার দুয়েক টাকা। ফ্ল্যাটের লোন সহ অন্যান্য বেশ কিছু খরচ আসত এই অ্যাপগুলি থেকেই।‘ অ্যাপ থেকে ভাল উপার্জন করতেন মিষ্টিও। তার টিকটক ফলোয়ার ৫০ লাখের কিছু বেশি। মিষ্টি বললেন, ‘শ্যুটিং-এর ফাঁকে টিকটক করতাম। শেষবার কলকাতার সমস্ত জনপ্রিয় জায়গাগুলি ঘুরে ঘুরে ভিডিও করতে হয়েছিল। সেই একটি ভিডিও করেই ৩০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। এর আগেও বেশ কয়েকবার টাকা পেয়েছি।‘ টিকটকে টার্গেটে পৌঁছলেই নাকি মেলে টাকা, একেবারে চাকরির মতোই। টেলি তারকাদের রীতিমতো পাল্লা দিচ্ছেন টিকটকারাও। প্রীতম জানালেন, বাদশার জনপ্রিয় গান গেন্দাফুলকে প্রথম টিকটকে রিলিজ করেছিলেন। কেবল এই গানটি নয়, একাধিক নতুন অ্যাপ, চ্যানেল, রেস্তোরাঁর প্রচার করেছেন তিনি। তাঁর ফলোয়ার্সের সংখ্যা ১৮ লাখ। এবিপি আনন্দকে প্রীতম বললেন, ‘মাসিক আয়ের প্রায় ৭০ শতাংশই আসত টিকটক থেকে। আমি ইউটিউব চ্যানেলেও ভিডিও পোস্ট করি। কাজ শিখেছি। এটাই আমার উপার্জনের রাস্তা।‘ একই সুর চন্দ্রিমা মুখোপাধ্যায় জেফারের গলাতেও। বললেন, ‘হাতখরচ চলে যেত টিকটক থেকে আসা টাকায়। তবে কেবল মানুষকে হাসানোর জন্যই প্রথমে শুরু করেছিলাম টিকটক। এক মিনিটকে মানুষকে কীভাবে গল্প বলা যায়, হাসানো যায়, এই ভাবনা থেকেই শুরু টিকটক।’ পেশা থিয়েটার হলেও টিকটকে মজেছিলেন প্রকাশ। বললেন, ‘কোনও মাসে ৩-৪ হাজার টাকা আসত প্রমোশন করে। আবার কিছু সময় সেই টাকাটা ১০ হাজার ছাড়াত। তবে টিকটকের ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল ছিলাম না। কেবল অভিনয় অভ্যাস করার জন্যই ব্যবহার করতাম টিকটককে।‘ টিকটক নিষিদ্ধ হওয়ায় অবশ্য প্রত্যেকের গলায় একই সুর। সকলেই জানালেন, টিকটক বিনোদনের মাধ্যম। কিন্তু তার জন্য কখনওই আপোস করা যাবে না দেশের সুরক্ষার সঙ্গে। ‘টিকটক নেই। কিন্তু আসুক টিকটকের মতোই কোনও ভারতীয় অ্যাপ’, এই আর্জিই এখন ফিরছে সকলের মুখে মুখে। প্রীতম, চন্দ্রিমারা বলছেন, ‘টিকটক নিষিদ্ধ হওয়ায় আফশোস নেই। কিন্তু কোনও ভারতীয় অ্যাপ যদি আসে আমরা আবার প্ল্যাটফর্ম পাব। কম সময়ে তুমুল জনপ্রিয়তা দিয়েছিল টিকটক।‘ ভারতীয় অ্যাপকেই আরও উন্নত ও আকর্ষণীয় করে তোলার কথা বলছেন সায়ক। ‘টিকটকের ক্যামেরা কোয়ালিটি ছিল অসাধারণ। সেই সঙ্গে অ্যাপটি ব্যবহার করাও ছিল সুবিধাজনক। টিকটকের মতো কোনও ভারতীয় অ্যাপ নিয়ে আসলে সঠিকভাবে তার প্রচার করাটাও জরুরি,‘ বলছিলেন সায়ক। মিষ্টি বলছেন, ‘চিনা প্রযুক্তি আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। কাজেই টিকটকের জনপ্রিয়তা ছুঁতে সময় লাগতে পারে ভারতীয় অ্যাপের।‘ নতুন কোনও প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আশাবাদী নীলও। বললেন, ‘কারও যদি প্রতিভা থাকে তবে তা যে কোনও প্ল্যাটফর্মেই সমাদৃত হবে।‘
আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
Advertisement

সেরা শিরোনাম

SSC Supreme Court: 'জানি না ডাল মে কালা হ্যায় ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়', SSC মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
'জানি না ডাল মে কালা হ্যায় ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়', SSC মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
RG Kar Case: 'বর্তমানে যে তদন্ত চলছে আস্থা নেই', নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে নিহত চিকিৎসকের পরিবার
'বর্তমানে যে তদন্ত চলছে আস্থা নেই', নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে নিহত চিকিৎসকের পরিবার
West Bengal News LIVE Updates:'অতিরিক্ত শূন্য পদ কেন তৈরি ? যাতে অবৈধদের চাকরি থেকে বের না করতে হয়?' প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
'অতিরিক্ত শূন্য পদ কেন তৈরি ? যাতে অবৈধদের চাকরি থেকে বের না করতে হয়?' প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
Weather Forecast: থমকে শীতের আমেজ! নিম্নচাপের জেরে ফের বৃষ্টি সতর্কতা জেলায় জেলায়
থমকে শীতের আমেজ! নিম্নচাপের জেরে ফের বৃষ্টি সতর্কতা জেলায় জেলায়
Advertisement
ABP Premium

ভিডিও

Jukti Takko: 'একটি ইসলামিক সমাজে সংখ্যালঘুদের এটাই প্রাপ্য', মন্তব্য মোহিত রায়েরJukti Takko: 'বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশ তাদের রুটি সেঁকবে', কোন প্রসঙ্গে মন্তব্য দেবাশিস দাসের?Jukti Takko (পর্ব ২): ওপারে হিন্দুু কাঁদে, মৌলবাদ সাজায় ঘুঁটি, এপারে তাই নিয়ে, রাজনীতি সেঁকে রুটিJukti Takko (পর্ব ১): ওপারে হিন্দুু কাঁদে, মৌলবাদ সাজায় ঘুঁটি, এপারে তাই নিয়ে, রাজনীতি সেঁকে রুটি

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
SSC Supreme Court: 'জানি না ডাল মে কালা হ্যায় ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়', SSC মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
'জানি না ডাল মে কালা হ্যায় ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়', SSC মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
RG Kar Case: 'বর্তমানে যে তদন্ত চলছে আস্থা নেই', নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে নিহত চিকিৎসকের পরিবার
'বর্তমানে যে তদন্ত চলছে আস্থা নেই', নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে নিহত চিকিৎসকের পরিবার
West Bengal News LIVE Updates:'অতিরিক্ত শূন্য পদ কেন তৈরি ? যাতে অবৈধদের চাকরি থেকে বের না করতে হয়?' প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
'অতিরিক্ত শূন্য পদ কেন তৈরি ? যাতে অবৈধদের চাকরি থেকে বের না করতে হয়?' প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
Weather Forecast: থমকে শীতের আমেজ! নিম্নচাপের জেরে ফের বৃষ্টি সতর্কতা জেলায় জেলায়
থমকে শীতের আমেজ! নিম্নচাপের জেরে ফের বৃষ্টি সতর্কতা জেলায় জেলায়
Jukti Takko: 'ইসলাম ধর্ম সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণকে অনুমোদন দেয় না', যুক্তি-তক্কো অনুষ্ঠানে বড় বার্তা বাকিবিল্লাহ মোল্লার
'ইসলাম ধর্ম সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণকে অনুমোদন দেয় না', যুক্তি-তক্কো অনুষ্ঠানে বড় বার্তা বাকিবিল্লাহ মোল্লার
India-Bangladesh Issue: বাংলাদেশিদের হাতে ভারতের 'ভুয়ো পাসপোর্ট'! রাজ্যে জঙ্গি প্রবেশের আশঙ্কা চরমে!
বাংলাদেশিদের হাতে ভারতের 'ভুয়ো পাসপোর্ট'! রাজ্যে জঙ্গি প্রবেশের আশঙ্কা চরমে!
Stock Market Crash: বাজার খুলতেই বড় পতন, সকালেই ৩ লক্ষ কোটির লোকসান বিনিয়োগকারীদের- দাম পড়ছে এই স্টকগুলির
বাজার খুলতেই বড় পতন, সকালেই ৩ লক্ষ কোটির লোকসান বিনিয়োগকারীদের- দাম পড়ছে এই স্টকগুলির
Dev on Khadaan: দুপুরে শো না পাওয়া নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষোভ দেবের, রাত হতেই বদলাল 'খাদান'-এর ব্যবসার ছবিটা!
দুপুরে শো না পাওয়া নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষোভ দেবের, রাত হতেই বদলাল 'খাদান'-এর ব্যবসার ছবিটা!
Embed widget