কোয়েম্বাত্তুরে সিআইডি-র হাতে গ্রেফতার বিচারপতি সিএস কারনান, বুধবার আনা হবে কলকাতায়, রাখা হবে প্রেসিডেন্সি জেলে
কলকাতা: প্রায় একমাস ধরে পুলিশের সঙ্গে ‘লুকোচুরি’ খেলার পর অবশেষে গ্রেফতার হলেন সিএস কারনান। মঙ্গলবার তামিলনাড়ুর কোয়ম্বাত্তুর থেকে কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে গ্রেফতার করল রাজ্য সিআইডি। জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে তাঁকে কলকাতায় আনা হবে। রাখা হবে প্রেসিডেন্সি জেলে। ৬১ বছর বয়সি কারনান এ বছরের গোড়ায় মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালে ২০ জন বিচারপতির নাম ঘোষণা করে দাবি করেন, এঁরা সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত, তদন্ত হোক এঁদের বিরুদ্ধে। এমনকী তদন্তের দাবি করে তিনি চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। সব মিলিয়ে উচ্চ আদালতের রোষের মুখে পড়েন তিনি। মাদ্রাজ হাইকোর্ট থেকে তাঁকে বদলি করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। কারনানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দাখিল হয়ে সুপ্রিম কোর্টে। ১ মে শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি আদালতকে জানান, বিচারপতি কারনান বাড়িতেই আদালত বসিয়ে একের পর এক নির্দেশ ঘোষণা করছেন। এরপরেই প্রধান বিচারপতি জে.এস.খেহরের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ৮ ফেব্রুয়ারির পর থেকে দেশের সব আদালত, ট্রাইবুনাল ও কমিশন বিচারপতি কারনানের কোনও নির্দেশ যেন কার্যকার না করে। সর্বোচ্চ আদালতের এই নির্দেশ আইনসম্মত নয় বলে কলকাতায় পাল্টা দাবি করেছেন কারনান। বলেন, অভিযুক্ত বিচারপতি, তারা কি করে আমার নির্দেশ গ্রহণযোগ্য নয় বলে রায় দিতে পারেন, কারণ তাদের বিরুদদ্ধেই দুর্নীতির সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলাম আমি। দাবি করেন, দলিত বলে তাঁর ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। পাল্টা, গত ৮ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি-সহ সাত বিচারপতিকে ৫ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারপতি সি এস কারনান। তার প্রেক্ষিতেই পরের দিন অর্থাৎ, ৯ মে তাঁকে আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাসের জেলহাজতের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতারির নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। একইসঙ্গে কারনানের বক্তব্য প্রকাশ্যে না আনার জন্য সংবাদমাধ্যমকেও নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। বেঞ্চ জানায়, বিচারপতি সি এস কারনানকে যদি জেলে পাঠানো না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। এই ঘটনার পর থেকেই ‘বেপাত্তা’ ছিলেন কারনান। তার মধ্যেই তিনি সাজার রায়কে শীর্ষ আদালতে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন বিচারপতি। রায় ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তোলেন। অবশেষে এদিন তিনি গ্রেফতার হলেন।