US-China Conflict: মুখে বলেছিলেন ট্রাম্প, কাজে করে দেখিয়ে দিলেন জিনপিং! ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধকারী বর্ম বানিয়ে ফেলল চিন?
Global Missile Defence: Global Defence System-এর যে প্রাথমিক মডেল তৈরি করেছেন চিনের বিজ্ঞানীরা, সেটির নাম রাখা হয়েছে ‘Distributed Early Warning Detection Big Data Platform’.

নয়াদিল্লি: পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হোক না কেন, পরমাণু অস্ত্র হোক বা অন্য কোনও বিধ্বংসী অস্ত্র, আছড়ে পড়ার আগেই ঠেকিয়ে দেওয়া যাবে সব। বুকচিতিয়ে দেশকে যাবতীয় হামলা থেকে রক্ষা করতে পারে, এমন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধকারী রক্ষাকবচ বানিয়ে কার্যতই তাক লাগিয়ে দিল চিন। চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ এখনও বাকি থাকলেও, তার প্রোটোটাইপ অর্থাৎ প্রাথমিক মডেল তৈরি করে ফেলেছে তারা। আমেরিকার তরফে ঢের আগেই এমন ঘোষণা হয়েছিল। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকাকে বর্ম পরানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু আমেরিকা নিজের লক্ষ্য়ে পৌঁছনোর আগেই চিন অসাধ্য সাধন করে ফেলল। এমন প্রযুক্তি তৈরি করে ফেলল, যা বর্মের মতো চিনকে আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে। (US China Conflict)
Global Defence System-এর যে প্রাথমিক মডেল তৈরি করেছেন চিনের বিজ্ঞানীরা, সেটির নাম রাখা হয়েছে ‘Distributed Early Warning Detection Big Data Platform’. এই প্রযুক্তির সঙ্গে একই সময়ে হাজার হাজার মাইল এলাকা পর্যন্ত নজরদারি চালানো সম্ভব। পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকেই চিনকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র বা পরমাণু অস্ত্র ছোড়া হোক না কেন, ঢের আগেই তা বোঝা সম্ভব হবে। এই প্রযুক্তির আওতায় স্থল, জল, আকাশে তো বটেই, মহাকাশেও বিশেষ সেন্সর বসানো থাকছে। ফলে বিপদ বোঝা সম্ভব হবে আগাম। (Global Missile Defence)
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ জানিয়েছে, মাটিতে, সাগর-মহাসাগরে, বাতাসে, আকাশে এবং মহাকাশে সেন্সর বসানো থাকায়, মাছি গলার উপায় থাকবে না। পৃথিবীর কোনও প্রান্ত থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া মাত্র সঙ্গে সঙ্গে তা ধরে ফেলা যাবে। কী ধরনের অস্ত্র ছোড়া হয়েছে, তার গতিবেগ গত, কোন গতিপথ ধরে এগোচ্ছে, সত্য়িকারের যুদ্ধাস্ত্র না কি অন্য কিছু, তথ্য পৌঁছে যাবে প্রতি মুহূর্তের। পৃথিবীর সর্বত্র থেকে আগত বিপদ ঠেকাতে সক্ষম বলেই এই প্রযুক্তিকে Global Defence System বলা হয়। চিনই প্রথম এই প্রযুক্তি তৈরিতে সফল হল।
চিনের এই সাফল্য আন্তর্জাতিক মহলেও সাড়া ফেলে দিয়েছে। প্রযুক্তির এই উন্নতি বিজ্ঞানজগতের কাছে আনন্দের খবর হলেও, আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি ঘোরাল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কূটনীতিকদের একাংশ। দ্বিতীয় বিশ্ব পরবর্তী সময়ে আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া) মধ্যে যে ঠান্ডাযুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছিল, আগামী দিনে আমেরিকা ও চিনের মধ্যে একই পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে, সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতিও দ্বিখণ্ডিত হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।
এর নেপথ্যে যে যুক্তি উঠে আসছে, তা হল, ১৯৮৩ সালের ২৩ মার্চ আমেরিকার তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে ‘Strategic Defence Initiative’-এর ঘোষণা করেন। পেন্টাগনের তরফে সেই সময় একটি গ্রাফিক প্রকাশ করা হয়, যাতে লাল বিন্দুর আকারে সোভিয়েত ইউনিয়নের ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইলের অবস্থান নির্দেশ করে আমেরিকার নীল ইন্টারসেপ্টরগুলি। সেই সময় আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন পরস্পরের দিকে ১০ হাজার পরমাণু শক্তিসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন তাক করে অবস্থান করছিল। রেগানের ওই ঘোষণার আট বছরের মাথায় সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটে। আমেরিকার ওই প্রকল্পও এর পর গুটিয়ে যায়।
কিন্তু ২০২৫ সালে দ্বিতীয় বারের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েই পুরনো প্রকল্পে প্রাণ সঞ্চার করেন ট্রাম্প। চলতি বছরের মে মাসে ‘Golden Dome’ ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষাকবচ তৈরির ঘোষণা করেন তিনি। জানান, সবমিলিয়ে ১৫ লক্ষ কোটি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) খরচ করে তিন বছরের মধ্যেই ওই প্রযুক্তি গড়ে তোলা হবে, যা আমেরিকাকে সব ধরনের আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে। পৃথিবীর অন্য প্রান্ত থেকে করা আক্রমণও ঠেকাবে, আবার মহাকাশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের উপস্থিতিও ধরে ফেলা সম্ভব হবে আগামী দিনে। ট্রাম্পের ওই ঘোষণার কয়েক মাসের মধ্যেই প্রাথমিক মডেল তৈরি করে ফেলল চিন।
চিনের নানজিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ ইলেক্ট্রনিক্স টেকনোলজি-র সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার লি শুদং এই প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে। চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এই প্রযুক্তির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। প্রাথমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় ভাল ফলও মিলেছে বলে জানা যাচ্ছে।






















