Statue of Liberty: স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরত দিক আমেরিকা, উঠল দাবি, বাড়ল আমেরিকা ও ফ্রান্সের মতানৈক্য?
Raphael Glucksmann: ফ্রান্সের রাজনীতিক রাফায়েল গ্লুকসমান আমেরিকার কাছ থেকে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরত চেয়েছেন।

ওয়াশিংটন: স্ট্যাচু অফ লিবার্টি নিয়ে এবার ফ্রান্সের সঙ্গে টানাপোড়েন আমেরিকার। আমেরিকার কাছ থেকে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরত চেয়েছেন ফ্রান্সের এক রাজনীতিবিদ, যিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যও। সেই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরানোর প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে আমেরিকা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এই ধরনের দাবি তোলা হচ্ছে বলে দাবি ওয়াশিংটনের। (Statue of Liberty)
ফ্রান্সের রাজনীতিক রাফায়েল গ্লুকসমান আমেরিকার কাছ থেকে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরত চেয়েছেন। মধ্য-বামপন্থী নেতা হিসেবেই পরিচিত রাফায়েল। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টেরও সদস্য তিনি। সম্প্রতি আমেরিকাকে আক্রমণ করতে গিয়েই ঐতিহাসিক স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরত চান তিনি। তাঁর মতে, যে মূল্যবোধকে সম্মান জানিয়ে ফ্রান্স ওই মূর্তি উপহার দিয়েছিল, সেই মূল্যবোধ হারিয়েছে আমেরিকা। (Raphael Glucksmann)
আমেরিকার মসনদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই ফ্রান্স-সহ সহযোগী দেশগুলির সঙ্গে একাধিক বিষয়ে তাদের মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। সেই আবহে ট্রাম্পকে নিশানা করেই রাফায়েল ওই মন্তব্য করেন বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। রাফায়েলের সাফ বক্তব্য, "স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরত দিন আমাদের। আমরা আমেরিকাকে বলব, ওরা তো অত্যাচারীদের পক্ষ নিয়েছে, বিজ্ঞানীদের স্বাধীনতা হরণ করেছে, শিকেয় তুলেছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। আমরা উপহার হিসেবে দিয়েছিলাম, কিন্তু এখন সেটিকে ঘৃণা করে। তাই মূর্তিটিকে ঘরে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।"
রাফায়েলের ওই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট সরাসরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার সাহায্য়ের কথা মনে করিয়ে দেন ফ্রান্সকে। তিনি বলেন, "প্রশ্নই ওঠে না। ওই নিম্নরুচির রাজনীতিককে বলতে চাই, আমেরিকা ছিল বলেই ফরাসি নাগরিকদের মাতৃভাষা জার্মান হয়নি। আমাদের মহান দেশের কাছে ওদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।"
2. As the press secretary for this shameful Administration said: without your nation, France would have "spoken German." In my case, it goes further: I would simply not be here if hundreds of thousands of young Americans had not landed on our beaches in Normandy. pic.twitter.com/Yy4ELT7OuL
— Raphael Glucksmann (@rglucks1) March 17, 2025
যদিও ক্যারোলিনকে একহাত নিয়েছেন রাফায়েল। তাঁর কথায়, 'নির্লজ্জ সরকারের প্রেস সচিব বলছেন, ফ্রান্সকে জার্মান বলতে হতো। আমি বলব, হাজার হাজার আমেরিকান নর্মান্ডি সৈকতে প্রাণ বিসর্জন না দিলে আমি আজ পৃথিবীতে বেঁচেই থাকতাম না। ওই সব সৈনিকের প্রতি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব। কিন্তু ওই আমেরিকান সৈনিকরা অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, তাঁদের প্রসন্ন করার চেষ্টায় করেননি। ফ্যাসিবাদের বিরোধী ছিল আমেরিকা, পুতিনের বন্ধ ছিল না। হামলা প্রতিরোধ করতে এগিয়ে এসেছিল, জেলেনস্কিকে আক্রমণ করেনি'।
১৮৮৬ সালের ২৮ অক্টোবর আমেরিকাকে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি উপহার দেয় ফ্রান্স। আমেরিকার স্বাধীনতাপ্রাপ্তির ১০০তম পূর্তিতে মূর্তিটি উপহার দেওয়া হয়। ফরাসি শিল্পী ফ্রেডরিক অগাস্ত বার্থোল্ডির হাতে তৈরি ওই মূর্তি। স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র সম্পর্কে পারস্পরিক যে মূল্যবোধ, তার প্রতীক স্বরূপই মূর্তিটি উপহার দেওয়া হয় আমেরিকাকে। নিউ জার্সি এবং নিউ ইয়র্কের মাঝে মূর্তিটি রাখা আছে।
প্য়ারিসেও স্ট্যাচু অফ লিবার্টির একটি রেপ্লিকা আছে। সাইন নদীর একটি দ্বীপে ওই মূর্তি বসানো আছে। তবে রাফায়েল আমেরিকার কাছ থেকে মূর্তি ফেরত চেয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তার নেপথ্যে তাঁর রাজনৈতিক মূল্যবোধ জড়িয়ে রয়েছে বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা। তাঁদের মতে, সত্যি সত্যিই আমেরিকার কাছ থেকে মূর্তি ফেরত চাইছেন না রাফায়েল। বরং রাজনৈতিক ভাবে একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন। রাফায়েল বরাবরি ট্রাম্প বিরোধী হিসেবে পরিচিত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে যেভাবে ট্রাম্পের সরকার অবস্থান পরিবর্তন করে চলেছে, তা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন তিনি। নিজের দেশের রাজনীতিকদেরও ছাড়েননি তিনি। বিশেষ করে চরম দক্ষিণপন্থী নেতাদের তিনি ট্রাম্প এবং ইলন মাস্কের 'ফ্যান' বলে কটাক্ষ করেন।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
