Gateway of India Mumbai: রাজার আগমন থেকে ব্রিটিশদের প্রস্থান, সবকিছু সাক্ষী গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ার গায়ে ফাটল
Gateway of India: সোমবার সংসদে বিষয়টি সামনে আনেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি।
মুম্বই: ঔপনিবেশিক শাসকের পদতলে তখন পিষ্ট ভারত। তেমনই এক ডিসেম্বরে ভারতে পা রাখেন ব্রিটেনের রাজা পঞ্চন জর্জ। মায়ানগরী হয়ে ভারতের সঙ্গে পরিচিতি ঘটে তাঁর। সেই মুহূর্তকে স্মৃতিতে গেঁথে রাখতেই তৈরি হয় গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া (Gateway of India)। একই সঙ্গে ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসকের পাততাড়ি গোটানোর প্রতীক হিসেবেও দেখা হয় এই সৌধকে। কারণ স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর, ১৯৪৮ সালে সেখান দিয়েই ভারত থেকে প্রস্থান ঘটে ব্রিটিশ বাহিনীর। সেই দীর্ঘ ইতিহাস বুকে নিয়েই আজ পর্যন্ত মায়ানগরীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া। এ বার তাতে ফাটল ধরা পড়ল (Gateway of India Mumbai)।
সৌধের উপরিভাগে একাধিক ফাটল ধরা পড়েছে বলে খবর
সোমবার সংসদে বিষয়টি সামনে আনেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি। গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া কী অবস্থায় রয়েছে, সম্প্রতি তা নিয়ে একটি সমীক্ষা হয়। তাতে সৌধের উপরিভাগে একাধিক ফাটল ধরা পড়েছে বলে খবর। লোকসভায় সেই প্রশ্ন উঠলে, বিশদ তথ্য তুলে ধরেন রেড্ডি। তিনি বলেন, "মুম্বইয়ের গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া সংরক্ষিত সৌধ নয়। বরং মহারাষ্ট্র সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও মিউজিয়াম বিভাগই তার দেখভাল করে। সমীক্ষায় কিছু ফাটল ধরা পড়েছে। তবে সামগ্রিক ভাবে সৌধটির স্বাস্থ্য ঠিক রয়েছে।"
গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ায় ফাটল ধরা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোনও রিপোর্ট জমা পড়েছে কিনা জানতে চাওয়া হয় সংসদে। যদি জমা পড়ে থাকে, তাতে কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু রেড্ডি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোনও রিপোর্ট জমা পড়েনি এখনও পর্যন্ত। সেটি মেরামতিতে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে কিনা প্রশ্ন করা হয় মন্ত্রীকে। জবাবে রেড্ডি জানান, মহারাষ্ট্র সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও মিউজিয়াম বিভাগের তরফে মেরামতিকার্যের কোনও প্রস্তাব এখনও জমা পড়েনি।
আরও পড়ুন: Chinese Aggression: মানচিত্রে দক্ষিণ তিব্বত বলে উল্লেখ, চিনের হাতে অরুণাচলের ১১টি এলাকার নয়া নামকরণ
প্রত্নতত্ত্ব ও মিউজিয়াম বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ার মেরামতি এবং সংরক্ষণ নিয়ে সম্ভাব্য বাজেট তৈরি করা হয়েছে। তাতে ৮ কোটি ৯৮ লক্ষ ২৯ হাজার ৫৭৪ টাকা খরচ পড়বে বলে অনুমেয়। গত ১০ মার্চ মহারাষ্ট্র সরকারের পর্যটন এবং সংস্কৃতি বিভাগ সেই খরচে অনুমোদন দিয়েছে বলেও মিলেছে খবর।
১৯১১ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্রিটেনের তদানীন্তন শাসক রাজা পঞ্চম জর্জ আরব সাগর হয়ে ভারতে পা রাখেন। ভারতে তাঁর পদার্পণকে স্মরণীয় করে রাখতেই গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ার নির্মাণ শুরু হয়। নির্মাণ শেষ হয় ১৯২৪ সালে। আবার স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর ১৯৪৮ সালে শেষ ব্রিটিশ বাহিনী যখন ভারত থেকে পাততাড়ি গুটোয়, তাঁদের প্রস্থানের দরজাও ছিল এই গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া।
ইদানীং কালে গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া ভারতের পরিচিতিরও অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে
শুধুমাত্র ইতিহাস এবং পর্যটনই নয়, ইদানীং কালে গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া ভারতের পরিচিতিরও অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০৩ সলের ২৫ অগাস্ট এর সামনেই, তাজমহল হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্যাক্সিতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে, বেশ কয়েক জন সমুদ্রে ছিটকে পড়েন। ২০০৮ সালে গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ার উল্টোদিকে থাকা তাজমহল হোটেল এবং টাওয়ার হোটেলে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেই সময় গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ায় ভিড় উপচে পড়ছিল। সেই হামলার পর থেকেই ভিড় নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হয় সরকার।