লকডাউন জারি করলে আগে থেকে জানাতে হবে, প্রশাসনকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
শীর্ষ আদালত এদিন বলে, হোটেল, ফুড কোর্ট, বাজার, বাস স্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় বাড়ছে। ভিড় রুখতে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করতে হবে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে।
নয়াদিল্লি: ফের লকডাউন জারি করলে আগে থেকে জানাতে হবে। কেন্দ্রকে শুক্রবার এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মানুষের জীবনযাত্রা যাতে সমস্যায় না পড়ে তাই আগাম জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি অশোক ভূষণ, সুভাষ রেড্ডি এবং এমআর শাহের বেঞ্চ এদিন বলেছে, ছোট কনটেইনমেন্ট জোন বা যেসব অঞ্চলে সংক্রমণের হার বাড়ছে সেই সব অঞ্চলে লকডাউন জারি করা বা সিল করা উচিত। তাতে সংক্রমণের চেন ভাঙবে। শীর্ষ আদালত এদিন বলে, হোটেল, ফুড কোর্ট, বাজার, বাস স্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় বাড়ছে। ভিড় রুখতে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করতে হবে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে। সপ্তাহের শেষে বা রাতে কার্ফু জারি করা যেতে পারে। যেসব অঞ্চল সিল করা হবে সেসব অঞ্চলে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া বন্ধ থাকতে হবে সব কিছু। তবে লকডাউন বা কার্ফু জারি করলে বা সিল করলে আগে থেকে জানাতে হবে সাধারণ মানুষকে। সাফ জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। যাতে দেশের নাগরিকদের জীবন যাত্রার উপর কোনও প্রভাব না পড়ে।
সংক্রমণ মাত্রা বুঝতে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মানার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত নির্দেশ দিয়েছে কতজন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন তা দেখতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন কোনও জমায়েতের অনুমতি দেবে না। কোথাও জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হলে স্থানীয় প্রশাসনকে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধি নিষেধের তালিকা তৈরি করে দিতে হবে।
চিকিৎসক, নার্স সহ স্বাস্থ্য কর্মীদের অবিরাম কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছে আদালত। কোর্ট বলেছে, চিকিৎসক, নার্স সহ স্বাস্থ্য কর্মীরা গত ৮ মাস ধরে টানা কাজ করে যাচ্ছেন। মানসিক এবং শারীরিকভাবে তাঁরা বিধ্বস্ত। তাঁদের কাজের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। রাজনৈতিক সভার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট গাইডলাইন মানতে হবে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে। আদালত বলেছে, মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মানা নিয়ে যে গাইডলাইন আছে, তা মানার জন্য সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে হবে।
উল্লেখ্য, মার্চ মাস থেকে সারা দেশে উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে করোনা সংক্রমণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতারাতি লকডাউন জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। ভিন রাজ্যে আটকে পড়েন পরিযায়ী শ্রমিক সহ অনেকেই। ট্রেন বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কেউ কেউ বাড়ি ফেরার আগেই রাস্তায় প্রাণ হারিয়েছেন। এই দুর্দশার দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছেন দেশবাসী। তাই এবার প্রশাসনকে লকডাউন জারি করা নিয়ে নিয়ম বেধে দিল আদালত।