Centre Mucormycosis Guidelines: করোনা রোগীদের শরীরে মিউকরমাইকোসিস সংক্রমণ রোধে নির্দেশিকা কেন্দ্রের
কী করবেন আর কী করবেন না...
নয়াদিল্লি: রোজ রোজ সংক্রমিত হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। করোনায় মৃত্যু যেন জলভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এক কথায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল গোটা ভারত। এই পরিস্থিতিতে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো হাজির হয়েছে নতুন রোগ -- মিউকরমাইকোসিস।
দেশে করোনা আবহে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজারের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫৭২ জনের।
ভয়ঙ্কর এই পরিস্থিতির মধ্যেই ছত্রপতি শিবাজীর রাজ্যে হানা দিয়েছে ছত্রাকজনিত রোগ, মিউকরমাইকোসিস। এর মধ্যেই, কোভিড আক্রান্তদের অনেকের মধ্যে ছত্রাক জনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এতে অনেকের দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরামর্শ, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর নিয়মিত রক্ত শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। স্টেরয়েড, অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাংগাল মেডিসিন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মহারাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ থেকে বেঁচে ফিরলেও, মিউকরমাইকোসিসের কারণে ৮ জনের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে। চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ২০০ জন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিষ্কার থাকলে প্রতিরোধ সম্ভব, তবে তা না করা গেলে দৃষ্টিশক্তিরও ক্ষতি হতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্র জানিয়েছে, সতর্ক না থাকলে মিউকরমাইকোসিস প্রাণঘাতী হতে পারে। এর হাত থেকে বাঁচতে, ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। তাছাড়াও যাদের কোমর্বিডিটি আছে, তাঁদেরও সচেতন থাকতে হবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরামর্শ, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর নিয়মিত রক্ত শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। স্টেরয়েড, অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাংগাল মেডিসিন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পল বলেন, যাঁদের ডায়াবেটিস, তাঁদের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, কোভিড না হলেও। তাহলেই কিডনি-হার্ট বাঁচবে। অজথা স্ট্রেরয়েড নেবেন না। রোগীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, মিউকরমাইকোসিস নামে এই ছত্রাকজনিত রোগের উপদ্রব নতুন নয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলেই এই ছত্রাক মানুষের শরীরের বাসা বাঁধে। তবে ভয়ের বিষয়, শুধু দৃষ্টিশক্তি হারানো নয়, মিউকরমাইকোসিসের জেরে ঘটতে পারে মৃত্যুও।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কুণাল মজুমদার বলেন, শরীর যখন বিভিন্ন অসুখে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাদের যে অক্সিজেন দেওয়া হয়, তখন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নামে ছাত্রাক জন্মাতে পারে। এর ফলে নাকের ভিতরে ক্ষতি হয়, সাইনাসের ক্ষতি, চোখে ক্ষতি হয়, ওষুধু আছে, কিন্তু তা না দেওয়া হলে দীর্ঘকালীন দৃষ্টিশক্তি, মস্তিষ্ক, ত্বকে, নাকে ক্ষতি হতে পারে, মৃত্যুও হতে পারে।
মিউকরমাইকোসিস রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলি হল, চোখে ব্যথা, চোখের পাতা পড়ে যাওয়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক ভারি হওয়া ও অল্প শ্বাসকষ্ট।
চিকিৎসকরা বলছেন, মিউকরমাইকোসিস থেকে বাঁচতে ওষুধ আছে, কিন্তু তা খেতে হবে নিয়ম করে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেন, দামী ওষুধ আছে, পরিষ্কার জিনিস ব্যবহার করতে হবে, অক্সিজেনের নলেও যেন ছত্রাক না জন্মায়।
বাংলায় এখনও সেভাবে মিউকরমাইকোসিসের প্রকোপ দেখা যায়নি। তবে সেরকম কিছু হওয়ার আগেই সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসকরা।