Independence Day Special: লক্ষ্য চিন-পাকিস্তানকে রোখা, এতগুলি দেশে সামরিক ঘাঁটি গড়েছে ভারত
ভিনদেশে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুললে সংশ্লিষ্ট দেশের ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। এর ফলে বিদেশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর প্রভাব বিস্তার করা যায়...
কলকাতা: বিদেশে কোনও দেশের সামরিক ঘাঁটি হল সেই জায়গা যা সরাসরি সংশ্লিষ্ট দেশের সামরিক বাহিনীর অধীনে থাকে। সেখানে যাবতীয় কর্মকাণ্ড সামরিক বাহিনীর দ্বারা ও জন্য পরিচালিত হয়। মূলত সেখানে সামরিক সরঞ্জাম থেকে শুরু করে সামরিক কর্মী -- এক জায়গায় থাকেন, যাতে প্রশিক্ষণ ও অভিযান সহজ হয়।
ভিনদেশে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুললে সংশ্লিষ্ট দেশের ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। এর ফলে বিদেশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর প্রভাব বিস্তার করা যায়। বিদেশে সামরিক ঘাঁটির সংখ্যার দিক দিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্তত বিদেশে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ৩৮টি ঘোষিত ঘাঁটি রয়েছে।
এখানে বলা হল বিদেশের মাটি থেকে অপারেট করা ভারতের ১১টি সামরিক ঘাঁটি সম্পর্কিত তথ্য --
ভুটান
ভুটান তার সীমানা তিনটি দেশের সঙ্গে ভাগ করে। ভারতীয় বাহিনী সেখানে দীর্ঘদিন ধরে মোতায়েন রয়েছে। ভারতীয় বাহিনী ভুটানের স্থল ও আকাশ সীমা রক্ষা করে যে কোনও বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। একটি ভারতীয় সামরিক প্রশিক্ষণ দল (IMTRAT) স্থায়ীভাবে পশ্চিম ভুটানের হা জং-এ রয়েছে। এই বাহিনী রয়্যাল ভুটান আর্মি ও রয়্যাল বডিগার্ড অফ ভুটানকে প্রশিক্ষণ দেয়।
নেপাল
নেপালের সঙ্গে ভারতের মধুর সম্পর্ক রয়েছে। পরিবর্তে, প্রতিবেশী দেশকে নিরাপত্তা প্রদান করে আমাদের সেনাবাহিনী। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সমঝোতা এতটাই মজবুত যে, ভারত দাবি করে যে নেপালের উপর যে কোনও হামলা হলে তাকে ভারতীয় ভূখণ্ডের ওপর আক্রমণ হিসেবেই গণ্য করা হবে। নেপালের সুরখেতে ভারতীয় বায়ুসেনার একটি এয়ার স্ট্রিপ রয়েছে, যেখানে আকাশপথে সম্ভাব্য হামলার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা প্রদান করে।
মলদ্বীপ
দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপের নিরাপত্তার ভার পুরোটাই ভারতীয় নৌসেনার হাতে। প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্রের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ভারতীয় নৌসেনার নজরদারিতে থাকে। জলদস্যুদের মোকাবিলায় উপকূলে নজরদারি রেডার স্টেশন নির্মাণ করেছে নৌসেনা।
ভিয়েতনাম
ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যে শক্তিশালী সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। ভিয়েতনাম তাদের ক্যাম রন বে নৌ ও বিমান ঘাঁটির মধ্য দিয়ে দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতীয় নৌসেনার প্রবেশের পথ খুলে দিয়েছে।
তাজিকিস্তান
বিদেশে ভারতের প্রথম সামরিক ঘাঁটি হল তাজিকিস্তান। এখানে তাজিক এয়ারফোর্সের সঙ্গে যৌথভাবে ফারখোর বায়ুসেনা ঘাঁটি পরিচালনা করে ভারতীয় বিমানবাহিনী। এটি ইসলামাবাদ থেকে আকাশপথে মাত্র ১৫ মিনিট দূরে। ইরানের চাবাহার বন্দর থেকে ফারখোর ঘাঁটিতে সামরিক সরঞ্জাম সহজেই পৌঁছে যায়। পাশাপাশি, এদেশের আয়নি ঘাঁটিতে ভারতীয় সামরিক চপারও মজুত রয়েছে।
মাদাগাস্কার
ভারত মহাসাগরে জাহাজ চলাচলের উপর নজর রাখার জন্য উত্তর মাদাগাস্কারে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে ভারতীয় নৌসেনা। সেখানে, নৌ-যোগাযোগের মাধ্যমকে ইন্টারসেপ্ট করার জন্য আধুনিক রেডার ও নজরদারি সরঞ্জাম রয়েছে। অন্যান্য নৌবাহিনীর অভিযানের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ভারতীয় নৌবাহিনীর এই পোস্টটি ২০০৭ সালে গঠন করা হয়।
সেশেলস
সেশেলস সরকারের অনুরোধে ভারত জলদস্যুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেশেলসের সীমান্ত রক্ষায় হেলিকপ্টার এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করে সহায়তা করে ভারত।
কাতার
২০০৮ সালে কাতারকে বহিরাগত হুমকি থেকে রক্ষা করতে ভারত তার সামরিক সম্পদ নিয়ে সেখানে ঘাঁটি গঠন করে। ভারতীয় নৌবাহিনী নিরাপত্তা প্রদান করে এবং পরিবর্তে সমুদ্রে অবাধ প্রবেশাধিকার ভারতীয় নৌবাহিনীকে দেওয়া হয়।
ওমান
ওমান প্রথম উপসাগরীয় দেশ যারা ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে স্থাপন করেছে। ২০০৮ সালে ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে ওমান। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতীয় রণতরী সেখানে অবাধে নোঙর করতে পারবে। এডেন প্রণালীতে জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য ওমানের বন্দর ও পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবে। মাস্কাটে রয়েছে ভারতীয় নৌসেনার একটি বিমানঘাঁটি।
মোজাম্বিক
ভারত এবং মোজাম্বিকের মধ্যে মজবুত সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। ২০০৩ সালে আফ্রিকান ইউনিয়ন সম্মেলন এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম সম্মেলনের সময় ভারতীয় নৌবাহিনী মোজাম্বিকের সামুদ্রিক নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছিল।
মরিশাস
মরিশাসের উত্তর আগালেগা দ্বীপে একটি সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছে ভারত। সেখানে উপকূলীয় নজরদারি রেডার সিস্টেম স্থাপন করেছে। মরিশাসের নিয়ন্ত্রণাধীন আগালেগা দ্বিপটি ভারত মহাসাগরে অবস্থিত। ভারত -মরিশাস সামরিক সহযোগিতার অন্তর্গত কৌশলগত সম্পদের উন্নয়নের জন্য ভারতীয় সামরিক বাহিনীর কাছে লিজ দেওয়া হয়েছে দ্বীপটি। বর্তমানে, দ্বীপটি মরিশাসে ভারতীয় সামরিক ঘাঁটি হিসেবে কাজ করে।