Rishi Sunak: ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ‘সংখ্যালঘু’ ঋষি, সংসদে মুসলিম প্রতিনিধি নেই কেন! বিজেপি-কে নিশানা বিরোধীদের
Indian Politics: যদিও দল হিসেবে কংগ্রেস নেতাদের এই মন্তব্যের দায় নেয়নি।
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: ব্রিটেনে ঋষি সুনকের (Rishi Sunak) প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে, বিজেপি-কে (BJP) নিশানা করেছে তৃণমূল (TMC) ও কংগ্রেস (Congress)। তাদের প্রশ্ন, বিজেপি কি কোনও সংখ্যালঘুকে ক্ষমতার সর্বোচ্চ পদে বসাতে পারবে? পাল্টা এপিজে আব্দুল কালাম, মনমোহন সিংয়ের কথা মনে করিয়ে, কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবিরও। কংগ্রেসের দুই সাংসদ বিজেপিকে খোঁচা দিলেও, তাঁদের মন্তব্যকে ব্যক্তিগত বলে দিয়েছে দল।
দেশীয় রাজনীতিতেও ব্রিটেনের রদবদলের রেশ!
টেনের হাত থেকে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছরেই ব্রিটেনের রাশ গেল এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতর হাতে। মঙ্গলবার ঋষি সুনককে ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত করলেন রাজা তৃতীয় চার্লস। টেমস পাড়ের এই নাটকীয় পট পরিবর্তনের রেশ এসে পড়েছে ভারতের রাজনীতিতেও।
এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে, বিজেপি-কে নিশানা করেছে বিরোধীরা। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, "ইংল্যান্ড একজন হিন্দু, লাল চামড়ার নয়, এমনকে প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু এখানে সংসদে বিজেপি-র তরফে মুসলিম সদস্মুয নেই একজনও। শিখ প্রধানমন্ত্রী হয়েছে। মুসলিম রাষ্ট্রপতি হয়েছেন । আদিবাসী রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতার প্রধান জায়গায় একজন মুসলিম নেই। বিজেপি-র শিক্ষা নেওয়া উচিত যে, জাত, ধর্ম নয়, যোগ্যতা দেশ চালানোর শেষ কথা। এখানে তো বিজেপি-র কোন মুসলিম সাংসদ নেই। এটা একটা সংকীর্ণতা। এমনকি সনিয়া গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছিলেন, তখন সুষমা স্বরাজ, উমা ভারতীরা বলেছিলেন উনি প্রধানমন্ত্রী হলে মাথা মুড়িয়ে নেবেন।"
বিজেপিও এই ইস্যুতে বিরোধীদের পাল্টা খোঁচা দিতে ছাড়েনি। দলের সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ ট্যুইট করেছেন, 'ঋষি সুনক ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর, কিছু নেতা সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিরুদ্ধে ময়দানে নেমে পড়েছেন। বিনীতভাবে তাঁদের মনে করিয়ে দিতে চাই, এপিজে আব্দুল কালাম এদেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। মনমোহন সিংহ ১০ বছর প্রধানন্ত্রী ছিলেন। দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু একজন আদিবাসী'।
তবে শুধু তৃণমূল নয়, ইতিমধ্যে কংগ্রেসের একাংশও এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। কংগ্রেস সাংসদ পি চিদম্বরম ট্যুইট করে বলেছেন, 'প্রথমে কমলা হ্যারিস, এবার ঋষি সুনক। সংখ্যাগরিষ্ঠ নন, এমন মানুষদেরও আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের নাগরিকরা আপন করে নিয়েছেন, এবং সরকারের উঁচু পদে বসিয়েছেন। আমার মনে হয়, ভারত এবং যেসমস্ত দল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোর দেখায়, তাদের এর থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত'।
কংগ্রেসের আর এক সাংসদ শশী তারুরও ট্যুইটে লেখেন, 'আমাদের এটা স্বীকার করে নেওয়া উচিত, যে ব্রিটেনের নাগরিকরা যেভাবে একজন সংখ্যালঘুকে সবচেয়ে শক্তিশালী চেয়ারে বসিয়েছেন, সেটা গোটা বিশ্বে বিরল। ভারতীয়রা যখন ঋষি সুনকের জয় উদযাপন করছে, তখন একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, এখানে কি এমনটা হতে পারে'?
যদিও পদল হিসেবে কংগ্রেস নেতাদের এই মন্তব্যের দায় নেয়নি। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ ট্যুইটারে লেখেন, 'আমাদের দেশে জাকির হুসেন ১৯৬৭ সালে রাষ্ট্রপতি হন। রাষ্ট্রপতি হন ফখরুদ্দিন আলি আহমেদ, আব্দুল কালামও। উদাহরণ দিতে বলতে হয়, বরকতউল্লা খান, এর আর আন্তুলে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কারও মন্তব্যে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাব না, তবে জিজ্ঞেস করলে দেখতে ওঁদের কী বক্তব্য়'।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনক
উল্লেখ্য, সোমবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি। মঙ্গলবার রাজা চার্লস তাঁকে সরকার গঠনে আমন্ত্রণ জানান। বুধবারই সে দেশের পার্লামেন্টে যোগ দেবেন ঋষি। নিজের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করবেন।