Year Ender 2021: ‘ফিরে দেখা ২০২১’: লালকেল্লায় কৃষক বিক্ষোভ থেকে লখিমপুর, ;ঝাড়খণ্ডে বিচারক খুন
Year Ender 2021: অসম-মিজোরাম সীমানা সংঘাতে রক্তারক্তি থেকে শুরু করে অসমে জবরদখলকারীদের হঠাতে গুলি, নিহত ২-একাধিক ঘটনা ২০২১-এ আলোড়ন ফেলেছিল দেশজুড়ে-দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে
12 জানুয়ারি: মহারাষ্ট্রে নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া
বর্ষবরণের রেশ তখনও কাটেনি। দেশজুড়ে উৎসবের আমেজের মধ্যে নাগপুর থেকে পুণে আসছিলেন এক তরুণী। ভয় দেখিয়ে, চলন্ত বাসে এই ২১ বছরের তরুণীকে দু’-দু’বার ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বাস কর্মীর বিরুদ্ধে। পরে, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
14 জানুয়ারি: ইডি-র হাতে গ্রেফতার কে ডি সিং
বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায়, ১৩ জানুয়ারি প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কেডি সিংকে গ্রেফতার করে ইডি। তাঁর বিরুদ্ধে দেড়শো থেকে দু’শো কোটি টাকার বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে বিপুল পরিমাণ টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেন বলেও অভিযোগ। প্রায় তিন মাস পর দিল্লির আদালত থেকে জামিন পান কে ডি সিং।
26 জানুয়ারি: লালকেল্লায় কৃষক-বিক্ষোভ
লাগাতার কৃষক আন্দোলনের মুখে, তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছে মোদি সরকার। বছরের শুরুতে প্রজাতন্ত্র দিবসে, কৃষক বিক্ষোভে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় দিল্লি। তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে, কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যাালি পৌঁছে যায় লালকেল্লায়। জাতীয় পতাকার স্তম্ভে, লাগিয়ে দেওয়া হয় কৃষক সংগঠনের ঝান্ডা। এই ঘটনায় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামরা রুজু করে দিল্লি পুলিশ।
29 জানুয়ারি: ইজরায়েলি দূতাবাসে বিস্ফোরণ
২৯ জানুয়ারি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ইজরায়েলি দূতাবাস চত্বর। দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণে ভেঙে যায় একাধিক গাড়ির কাচ। তদন্তে নামে NIA। দিল্লির এই বিস্ফোরণের জেরে, অমিত শাহর দু’দিনের পশ্চিমবঙ্গ সফর বাতিল হয়ে যায়।
12 ফেব্রুয়ারি: কলেজে বন্দুকবাজের হামলা
ইজরায়েলি দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণের ক’দিন পরেই, রক্তাক্ত হয় শিক্ষাঙ্গন। হরিয়ানার রোহতকে কলেজে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। মৃত্যু হয় ২ মহিলা কুস্তিগির-সহ ৫ জনের। আহত হয় আরও ৫ জন। ২ কোচের মধ্যে শত্রুতার জেরেই এই হামলা বলে জানায় পুলিশ।
26 ফেব্রুয়ারি: শিল্পপতি মুকেশ অম্বানির বাড়ি অ্যান্টিলার সামনে বিস্ফোরক উদ্ধার
দেশের প্রথম সারির শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির মুম্বইয়ের বাড়ি, অ্যান্টিলার কাছে উদ্ধার হয় বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি। মেলে, হুমকি-চিঠিও। তদন্তভার নেয় NIA। পরে, রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় গাড়ির মালিক মনসুখ হীরেনের। গ্রেফতার হন, এই মামলারই প্রাক্তন তদন্তকারী অফিসার এবং মুম্বই পুলিশের এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট সচিন ওয়াজে।
পরপর হাসপাতালে বিপর্যয়
এবছর একের পর এক হাসপাতালে ঘটে গেছে ভয়াবহ বিপর্যয়। মার্চে, মুম্বইয়ে কোভিড হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১০ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। সেই সময়, হাসপাতালে ছিলেন ৭৬ জন করোনা রোগী। দু’মাস পরই, পয়লা মে, গুজরাতের ভারুচে কোভিড কেয়ার সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় ১৬ জন করোনা আক্রান্তের। আগুন লাগার সময়, হাসপাতালে ৭০ জনেরও বেশি রোগী ভর্তি ছিলেন। অন্যদের উদ্ধার করা গেলেও, মৃত্যু হয় আইসিইউতে ভর্তি ১৬ জনের। মৃত্যু হয় আরও ২ নার্সেরও। মে মাসেই অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতিতে সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে এগারোজন রোগীর মৃত্যু হয়। প্রশাসনের দাবি, ট্যাঙ্ক রিলোড করার জন্য মিনিট পাঁচেক অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ ছিল। যদিও রোগীর আত্মীয়দের দাবি, পাঁচ মিনিট নয়, প্রায় পঁচিশ মিনিট অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ ছিল। জুন মাসে ঘটে যায় আরও একটি বিপর্যয়। আগ্রার পারস হাসপাতালে অক্সিজেন বন্ধ করে মক ড্রিল চলাকালীন, দমবন্ধ হয়ে, ছটফট করতে করতে মৃত্যু হয় ২২ জনের।
এপ্রিল: ছত্তীসগঢ়ে মাও-হামলা
ছত্তীসগঢ়ের সুকমা-বিজাপুরে মাওবাদীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলির লড়াইয়ে ২২ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়। আহত হন ৩২ জওয়ান। সিআরপিএফের ডিজি দাবি করেছিলেন, সংঘর্ষে ২৫ থেকে ৩০ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়।
26 মে: গ্রেফতার মেহুল চোকসি
৩ বছর ধরে পলাতক থাকার পর, ডমিনিকায় গ্রেফতার হন PNB প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত মেহুল চোকসি। ১২ জুলাই, শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাঁকে জামিন দেয় ডোমিনিকার আদালত। বর্তমানে তিনি অ্যান্টিগাতে রয়েছেন। সম্প্রতি, অপহরণের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মেহুল চোকসি। তাঁর দাবি, ফের তাঁকে অপহরণ করা হতে পারে। নিয়ে যাওয়া হতে পারে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ গায়ানায়।
2 জুন: বিজেপি কাউন্সিলর খুন
জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গিদের গুলিতে খুন হন, ত্রালের বিজেপি কাউন্সিলর রাকেশ পণ্ডিত। খুব কাছ থেকে রাকেশকে পর পর গুলি করে খুন করে তিন জঙ্গি। শ্রীনগরের বাসিন্দা রাকেশের বাড়িতে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এমনকী রাকেশের সঙ্গে দু’জন ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী থাকতেন। টনার দিন, সন্ধের পর ত্রাল পাইনে বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছিলেন বিজেপি কাউন্সিলর রাকেশ। সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তিন জঙ্গি।
15 জুলাই: রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে কেন্দ্রকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক। সেই মামলার পর্যবেক্ষণে সুপ্রিম কোর্ট বলে, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের যথেচ্ছ অপব্যবহার হয়। এটা হল অনেকটা এরকম যে, আপনি কাঠ কাঠতে ছুতোরের হাতে করাত দিলেন, আর সে তা দিয়ে জঙ্গল কেটে সাফ করে দিল। এই আইনের ব্যবহারও সেরকমই।
18 জুলাই: পেগাসাসকাণ্ড
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের পরই পেগাসাসকাণ্ড নিয়ে হৈ চৈ পড়ে যায় পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশের রাজনীতিতে। The Wire সংবাদমাধ্যমের তরফে দাবি করা হয়, হ্যাকারদের নিশানায় ছিলেন রাহুল গান্ধী থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিরোধী নেতা! আর পেগাসাস স্পাইওয়্যার কাজে লাগিয়ে যাদের ফোন হ্যাক করা হয়, সেই তালিকায় রয়েছেন প্রশান্ত কিশোরের মতো ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট, ৪০ জনের বেশি সাংবাদিক, সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান বিচারপতি, দেশের একাধিক নিরাপত্তা এজেন্সির বর্তমান এবং প্রাক্তন প্রধান, কয়েকজন শিল্পপতি ও সমাজকর্মী।
অক্টোবর: মাদককাণ্ডে গ্রেফতার শাহরুখ-পুত্র
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর বছর ঘুরতেই, বলিউডে ফের মাকদকাণ্ডের ছায়া। তেসরা অক্টোবর, বিলাসবহুল ক্রুজের পার্টিতে মাদককাণ্ডে শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান-সহ ৮ জনকে গ্রেফতার করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। তাঁকে প্রথমে NCB হেফাজত ও তারপর আর্থার রোড জেলে পাঠায় আদালত। ২৫ দিন পর, বম্বে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান আরিয়ান। আরও দু’দিন পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরেন শাহরুখ-পুত্র। জামিনের নির্দেশনামায় বম্বে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, অভিযুক্তদের কাছে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য মাদক পাওয়া গিয়েছে, তার অর্থ এই নয় যে, তাঁদের অপরাধের ইচ্ছেও ছিল। আরিয়ান খান, আরবাজ মার্চেন্ট এবং মুনমুন ধামেচার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
20 জুলাই: গ্রেফতার রাজ কুন্দ্রা
মাদককাণ্ডের পাশাপাশি আরও একটি ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে বলিউড। পর্ন তৈরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় অভিনেত্রী শিল্প শেঠির স্বামী রাজ কুন্দ্রাকে। তদন্তকারীরা দাবি করেন, নির্দিষ্ট একটি অ্যাপ ব্যবহার করে বিদেশি OTT প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়েবসাইটে পর্ন ছবি পাঠানো হত। এই মামলায় শিল্পা শেঠিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
26 জুলাই: অসম-মিজোরাম সীমানা সংঘাতে রক্তারক্তি
N15. সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদ ছিল। জুলাই মাসে, অসম-মিজোরাম সীমানার ভাইরেনতে টাউনে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায় দুই রাজ্যের পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়, অসম পুলিশের ৫ জওয়ানের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিলচর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অন্তত ৪০ জন পুলিশ কর্মীকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে, দুই রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা।
27 জুন: জম্মু এয়ারফোর্স স্টেশনে জোড়া বিস্ফোরণ
N16. ২৭ জুন জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে জম্মু এয়ারফোর্স স্টেশন। ৫ মিনিটের ব্যবধানে ড্রোনের মাধ্যমে পরপর দুটি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। জখম হন দু’জন। বিস্ফোরণের জেরে ক্ষতি হয়, ATC বিল্ডিংয়ের পাশের একটি বাড়ির ছাদের। আরেকটি বিস্ফোরণ হয় খোলা জায়গায়। ড্রোনের মাধ্যমে বিস্ফোরক নামিয়ে, নাশকতা ঘটানোর ঘটনা এই প্রথম হলেও, গত কয়েক বছর ধরে সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকিস্তানি ড্রোনের ব্যবহার বেড়েছে।
29 জুলাই: ঝাড়খণ্ডে বিচারক খুন
ঝাড়খণ্ডে অটোর ধাক্কায় মৃত্যু হয়, ধানবাদের অতিরিক্ত জেলা বিচারক উত্তম আনন্দের। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়ে সেই ছবি। খুনের অভিযোগে, গ্রেফতার করা হয় ঘাতক অটোর চালক ও সহকারীকে।
24 অগাস্ট: গ্রেফতার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রাণে
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চড় মারার কথা বলে গ্রেফতার হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রাণে। মুম্বইয়ের সিন্ধুদূর্গে বিজেপি-র ‘জন আশীর্বাদ যাত্রা’ চলাকালীন উদ্ধবকে চড় মারার হুমকি দেন নারায়ণ রাণে। তিনি দাবি করেন, ১৫ অগস্টের ভাষণে, স্বাধীনতার সাল ভুলে গিয়েছিলেন উদ্ধব। যদিও, এই দাবি মিথ্যা বলেই দাবি করে মহারাষ্ট্র সরকার। এই মন্তব্যের পরেই নারায়ণ রাণেকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। আট ঘণ্টা হাজতবাসের পরে তাঁকে জামিন দেয় মুম্বইয়ের এক আদালত। আগামী দিনে এই ধরনের কোনও মন্তব্য থেকে তাঁকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয় আদালত।
15 সেপ্টেম্বর: দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ATS’র জালে ৬ জঙ্গি
উৎসবের মুখে নাশকতার পরিকল্পনার পর্দাফাঁস করে দিল্লি পুলিশ ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড। দিল্লি, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় ৬ জঙ্গিকে। দিল্লি পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, ধৃতদের মধ্যে ২ জঙ্গির প্রশিক্ষণ হয় পাকিস্তানে। একই শিবিরে প্রশিক্ষণ নেয় কয়েকজন বাংলাভাষীও।
15 সেপ্টেম্বর: তথ্য ফাঁসের অভিযোগে DRDO-র কর্মী গ্রেফতার
পাক এজেন্টের কাছে তথ্য ফাঁসের অভিযোগে DRDO-র ৪ কর্মীকে গ্রেফতার করে ওড়িশা পুলিশ। অভিযোগ, হানি ট্র্যাপে পা দিয়ে ওই চারজন প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য পাক এজেন্টের হাতে তুলে দেয়। চাঁদিপুরে DRDO-র দফতরে অভিযান চালিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের চার কর্মীকে গ্রেফতার করে ওড়িশা পুলিশ।
20 সেপ্টেম্বর: মহন্ত নরেন্দ্র গিরির অস্বাভাবিক মৃত্যু
অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের প্রধান, মহন্ত নরেন্দ্র গিরির অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়। ঘটনাস্থল থেকে সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়। ঘটনাস্থল থেকে সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়। কিন্তু সেই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, কয়েক দিন আগেই নরেন্দ্রর সঙ্গে তাঁর অন্যতম প্রধান শিষ্য আনন্দ গিরির ঝগড়া হয়েছিল। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হন, নরেন্দ্র গিরির অন্যতম প্রধান শিষ্য আনন্দ গিরি-সহ ৩ জন।
24 সেপ্টেম্বর: দিল্লির আদালতে শ্যুটআউট
N22. ২৪ সেপ্টেম্বর, দিল্লির বুকে আদালতের মধ্যেই, ঘটে যায় গ্যাংওয়ারের ঘটনা। আইনজীবীদের পোশাকে কোর্টে এসে, মুহুর্মুহু গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। আদালতে পেশ করা কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে, একেবারে ভরা কোর্টে, বিচারকের চোখের সামনে, গুলি করে অন্য গ্যাংয়ের দুষ্কৃতীরা। মৃত্যু হয় দিল্লির কুখ্যাত দুষ্কৃতী জিতেন্দ্র গোগীর। পুলিশের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় আইনজীবীদের পোশাকে আসা দুই আততায়ীরও। ২০১০ সালে বাবার মৃত্যুর পর, অপরাধ জগতে প্রবেশ করে জিতেন্দ্র গোগী। গোগী প্রোমোটারি সংক্রান্ত কাজকর্ম শুরু করে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রবীণ নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করে গোগী।
24 সেপ্টেম্বর: অসমে জবরদখলকারীদের হঠাতে গুলি, নিহত ২
২৪ সেপ্টেম্বর, বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় অসমের সিপাঝার। দরং জেলার সিপাঝারে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। ঢোলপুর-৩ অঞ্চলের গুরুকুঠি গ্রামের কাছে পুলিশের গুলিতে দু’জনের মৃত্যু হয়। আহত হন বেশ কয়েক জন। বিরোধীদের সমালোচনার মুখে, এই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
সেপ্টেম্বর: গুজরাতে বন্দর থেকে হেরোইন উদ্ধার
২১ সেপ্টেম্বর গুজরাতে আদানি গোষ্ঠী পরিচালিত, মুন্দ্রা বন্দরে, ১৯ হাজার কোটি মূল্যের প্রায় তিন টন হেরোইন বাজেয়াপ্ত হয়। ওই মাদক বাজেয়াপ্ত করেন ডিআরআই আধিকারিকরা। মাদক-সহ গ্রেফতার করা হয় দুই ব্যক্তিকে। ডিআরআই সূত্রে খবর, মুন্দ্রা বন্দরে দু’টি কন্টেনার এসেছিল। কন্টেনার দু’টি পাউডার দিয়ে চিহ্নিত করা ছিল। কেন চিহ্নিত করা তা নিয়ে সন্দেহ হয় ডিআরআই-এর আধিকারিকদের। তখনই তাঁরা কন্টেনার দু’টি আটক করেন। এরপর ১৯ নভেম্বর, ওই বন্দরেই একটি জাহাজ থেকে উদ্ধার হয় তেজস্ক্রিয় পদার্থ। জাহাজটি চিনের সাংহাই থেকে পাকিস্তানের করাচি বন্দরে যাচ্ছিল।
অক্টোবর: লখিমপুরে গাড়িতে পিষে কৃষক হত্যা
তেসরা অক্টোবর, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে, গাড়িতে পিষে হত্যা করা হয় কৃষকদের। অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিস মিশ্রর বিরুদ্ধে। বিরোধীদের প্রবল সমালোচনার মুখে, ঘটনার এক সপ্তাহ পর, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর ছেলে, অভিযুক্ত আশিস মিশ্রকে গ্রেফতারও করা হয়। ফরেন্সিক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, লখিমপুর খেরির ওই ঘটনাস্থলে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ছেলের আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চলেছিল। এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর পদত্যাগের দাবিতে সরব হন বিরোধীরা। যদিও, তিনি ইস্তফা দেননি।
28 অক্টোবর: দিল্লির কাছে ৩ মহিলা কৃষক আন্দোলনকারীকে পিষে দিল ডাম্পার
দিল্লির কাছে ৩ মহিলা কৃষক আন্দোলনকারীকে পিষে দেয় ডাম্পার। কৃষকদের অবস্থান মঞ্চ থেকে বাড়ি ফেরার জন্য বাহাদুরগঞ্জের ঝজ্জরে, রাস্তার ডিভাইডারের ওপর বসে অটোর জন্য অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। তখনই তাঁদের পিষে দেয় ডাম্পার। জখম হন আরও ৩ মহিলা কৃষক আন্দোলনকারী।
4 ডিসেম্বর: সেনার গুলিতে নিরীহ গ্রামবাসীর মৃত্যু
নাগাল্যান্ডে প্যারাকমান্ডো ও অসম রাইফেলসের গুলিতে, ১৪ জন নিরীহ গ্রামবাসীর মৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ। দিনটা ছিল চৌঠা ডিসেম্বর। খোলা পিক আপ ভ্যানে চড়ে, খনি থেকে ফিরছিলেন আটজন শ্রমিক। ফেরার পথে তাঁদের লক্ষ্য করে, গুলি চালায় ভারতীয় সেনার প্যারাকমান্ডো বাহিনী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ছ’জন শ্রমিকের। এই ঘটনার কথা জানতে পেরে, ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে, নিরাপত্তাবাহিনীর গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। ফের গুলি চালায় বাহিনী। মৃত্যু হয় আরও কয়েকজনের। সেনা অবশ্য দাবি করে, তাদের কাছে ওই এলাকায় জঙ্গি গতিবিধির খবর ছিল। এই ঘটনার উত্তাপ পৌঁছোয় সংসদ অবধি। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হয় বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিবৃতিতে দাবি করেন, গোটাটাই ঘটেছে ভুল বোঝাবুঝির জেরে।
15 নভেম্বর: মণিপুরে জঙ্গি হামলায় খুন কর্নেল
১৩ নভেম্বর সাম্প্রতিককালের মধ্যে ভয়াবহতম জঙ্গি হামলার সাক্ষী হয় মণিপুর। জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারান ৪৬ অসম রাইফেলসের কমান্ডিং অফিসার, কর্নেল বিপ্লব ত্রিপাঠী, তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে। মৃত্যু হয় ছ’জন জওয়ানের। জঙ্গিদের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয়, মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের বাসিন্দা, রাইফেলম্যান শ্যামল দাসেরও।
6 নভেম্বর: গ্রেফতার অনিল দেশমুখ
আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। অবৈধ আর্থিক লেনদেন ছাড়া, মুম্বইয়ের শীর্ষ পুলিশকর্মীর মাধ্যমে তোলা আদায়ের অভিযোগ ওঠে অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক শুরু হতেই, চলতি বছরে মহারাষ্ট্র সরকারে নিজের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। তদন্ত শুরুর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইডি-র সমন এড়াতে, বম্বে হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন দেশমুখ। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। এরপরই তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। তোলা আদায়ের অভিযোগ অবশ্য বরাবরই অস্বীকার করেছেন তিনি।
পুরভোটের আগে উত্তপ্ত ত্রিপুরা
২৫ নভেম্বরের পুরভোটের দু’মাস আগে থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ত্রিপুরা। রাজ্য দফতর-সহ পরপর, সিপিএমের পার্টি অফিসে ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনায়, অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। হামলা চালানো হয় সংবাদপত্রের অফিসেও। পাল্টা সিপিএমের দিকেই হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তোলে বিজেপি।
নাগাল্যান্ডে সেনার গুলিতে মৃত্যু (৪ ডিসেম্বর)
৪ ডিসেম্বর নাগাল্যান্ডে ভারতীয় সেনার প্যারা কমান্ডো বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় নিরীহ খনিশ্রমিকদের। পরে সেনার গুলিতে মৃত্যু হয়, আরও কয়েকজন গ্রামবাসীর। খোলা পিক আপ ভ্যানে, গান গাইতে গাইতে বাড়ি ফিরছিলেন শ্রমিকরা। ভারতীয় সেনার প্যারাকমান্ডোরা সেই পিক আপ ভ্যান লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে, ঘটনাস্থলেই ৬ জনের মৃত্যু হয়। এরইমধ্যে গ্রামবাসীরা খুঁজতে খুঁজতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পিক আপ ভ্যানে নিরীহদের গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত মৃতদহ দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে তারা। নিরাপত্তা বাহিনীর দু’টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায়, বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। সেখানেই আরও একাধিক গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। গ্রামবাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক কমান্ডোরও।