Anantanag Encounter: ঘন জঙ্গল-বন্ধুর জমিই সহায়! কাশ্মীরে নয়া কৌশল জঙ্গিদের, ১০০ ঘণ্টা পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে
Jammu And Kashmir: গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে কাশ্মীরের অনন্তনাগে প্রথম এই জঙ্গিবিরোধী যৌথ অভিযান শুরু হয়।
শ্রীনগর: নয় নয় করে ১০০ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও উপত্যকার ঘন জঙ্গলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চলছে। জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গিবিরোধী অভিযান রবিবার পঞ্চম দিনে পড়ল (Anantanag Encounter)। নিরাপত্তাবাহিনী, পুলিশবাহিনীর সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনীর কম্যান্ডোরাও চিরুণি তল্লাশি চালাচ্ছেন। গাদোলের জঙ্গলে এই মুহূর্ত প্রায় ১০০০ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে, যারা জঙ্গলযুদ্ধে পারদর্শী। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘন জঙ্গল এবং উঁচুনীচু ভূমির জন্যই বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। তাদের কাজ পর্যন্ত পৌঁছনো যাচ্ছে না, অভিযানও দীর্ঘায়িত হয়ে চলেছে। (Jammu And Kashmir)
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে কাশ্মীরের অনন্তনাগে প্রথম এই জঙ্গিবিরোধী যৌথ অভিযান শুরু হয়। উপত্যকার পুলিশ এবং সেনা যৌথ ভাবে নামে অভিযানে। তাতে তিন অফিসারের মৃত্যু হয়েছে ইতিমধ্যেই, মেজর আশিস ধোনচাক, ১৯ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের কর্নেল মনপ্রীত সিংহ এবং উপত্যকার পুলিশের ডিএসপি হুমায়ুন ভাট। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গিরা সংখ্যায় দুই থেকে তিন জন। কিন্তু প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে তাদের কাছে। ঘন জঙ্গলের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে ঘাঁটি গেড়েছে তারা। ঘন জঙ্গলের মধ্যে থেকে এভাবে গুলি বিনিময় চালিয়ে যাওয়ার কৌশলও আগে কখনও উপত্যকায় দেখা যায়নি বলে মত সেনার।
গত ১০০ ঘণ্টায় এখনও পর্যন্ত শয়ে শয়ে মোটর শেল ছোড়া হয়েছে সেনার তরফে। ড্রোনের মাধ্যমে জঙ্গিদের সম্ভাব্য ঘাঁটি চিহ্নিত করে, ফেলা হয় বিস্ফোরকও। তাতে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটলেও, গুলি বিনিময় বন্ধ হয়নি। জঙ্গিদের কাছে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র মজুত রয়েছে বলে মত সেনার। যে কারণে ঘন জঙ্গলের ভিতর পর্যন্ত পৌঁছতে পারছে না সেনা ও পুলিশ।
OP GAROL#LtGenUpendraDwivedi #ArmyCdr, Northern Command reviewed the operational situation on the ongoing operations at #Kokernag forest area in #Anantnag. He was briefed by the ground commanders on the High Intensity Operations in which Hi-tech Equipment is being used for… pic.twitter.com/MggzlYb2Lh
— NORTHERN COMMAND - INDIAN ARMY (@NorthernComd_IA) September 16, 2023
সেনার নর্দার্ন কম্যান্ডের চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী শনিবার অভিযানস্থলে পৌঁছন। এখন কী পরিস্থিতি, ড্রোন ঠিক মতো কাজ করছে কিনা, অস্ত্রশস্ত্র যথেষ্ট রয়েছে কিনা, সরেজমিনে দেখেন তিনি। অভিযানে কী ধরনের ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে, তার ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে সেনার তরফে। অভিযান চলাকালীন আরও দুই সেনা জখম হন। তাঁদের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করা গেলেও, অন্য জনের খোঁজ নেই বলে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার রাত থেকে এখনও পর্যন্ত যে অভিযান চলছে, তা উপত্যকার জঙ্গি সংগঠন দ্য রেসিসট্যান্স ফোর্স (TRF)-এর বিরুদ্ধে বলেই জানা গিয়েছে। ২০১৯ সালে প্রতিরোধ সংগঠন হিসেবে গড়ে ওঠে TRF. তার পর থেকে গত চার বছরেই একাধিক হামলার নেপথ্যে তাদের সংযোগ উঠে এসেছে, বিশেষ করে উপত্যকার সংখ্যালঘু কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বেছে বেছে নিশানা করতে দেখা গিয়েছে। চলতি বছরে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (UAPA) TRF-কে নিষিদ্ধ করে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: PM Modi Birthday: পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার যাত্রা শুরু, ১৫ হাজার টাকা ছাড়াও ২ লক্ষ টাকার ঋণ
গোয়েন্দাদের মতে, TRF স্বাধীন সংগঠন হিসেবে সামনে থেকে নাশকতা চালালেও, আসলে পিছন থেকে তাদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা। তারাই TRF-কে অস্ত্রশস্ত্র এবং লোকের জোগান দেয়। বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীরে সেনা এবং পুলিশের মাথাব্যথার প্রধান কারণ এই TRF. কারণ অন্য জঙ্গি সংগঠনের থেকে এরা আলাদা বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
সেনার একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত পাঁচ দিন ধরে অভিযান চলার নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে। যে জঙ্গিরা জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছে, তারা জঙ্গলযুদ্ধে প্রশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি, দ্রুত পাহাড়ে ওঠা এবং সেখানে টিকে থেকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়েছে বলেই ঠাহর হচ্ছে। এর ফলে অত উঁচুতে সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছতে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। আগে কখনও উপত্যকায় কোনও অভিযানই এত কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠেনি বলে জানাচ্ছে সেনারই একটি সূত্র। আগামী দিনে জঙ্গিরা এই জঙ্গলযুদ্ধের রাস্তা নিতে থাকলে, তা মোটেই সুখকর হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।