Kargil Vijay Diwas: "বুড়ো আঙুলের রক্ত দিয়ে আমার সিঁথি রাঙিয়ে দিয়েছিল", শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার স্মৃতিচারণায় প্রেমিকা
ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা। যিনি কার্গিলের যুদ্ধে তাঁর সহযোগী অফিসারকে বাঁচাতে গিয়ে শহিদ হন। আজ কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্যাপ্টেন বাত্রার জীবনের নানা কাহিনি উঠে আসছে।
নয়া দিল্লি : ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা। যিনি কার্গিলের যুদ্ধে তাঁর সহযোগী অফিসারকে বাঁচাতে গিয়ে শহিদ হন। আজ কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্যাপ্টেন বাত্রার জীবনের গল্প জেনে নেওয়া যাক। ডিম্পল চিমা ছিলেন ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার প্রেমিকা। ক্যাপ্টেন বাত্রা শহিদ হওয়ার পরও সারাজীবন যিনি অবিবাহিত। ক্যাপ্টেন বাত্রার "বিধবা স্ত্রী" হিসেবেই কাটাচ্ছেন তিনি। একটি সাক্ষাৎকারে ডিম্পল চিমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ১৯৯৫ সাল নাগাদ ক্যাপ্টেন বাত্রার সঙ্গে কেমন সময় কাটিয়েছিলেন বা তাঁদের প্রেমের গল্পই বা কেমন ছিল ? ১৯৯৫ সালে চণ্ডীগড়ে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ক্যাপ্টেন বাত্রার সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় ডিম্পল চিমার। তাঁরা দুজনেই সেখানে ইংরেজিতে এম এ পড়ছিলেন। কিন্তু দুজনের কারওরই পড়া শেষ হয়নি। সেই সময়ে প্রথমবার ইন্ডিয়ান মিলিট্রি অ্য়াকাডেমিতে নির্বাচিত হওয়ার পর ক্যাপ্টেন বাত্রা সাংঘাতিক উত্তেজিত ছিলেন।
ক্য়াপ্টেন বাত্রার সঙ্গে ডিম্পল চিমা প্রায়ই মনসা দেবীর মন্দির এবং গুরুদ্বারে ঘুরতে যেতেন। একদিন এমনই মনসা দেবীর মন্দিরের চারপাশে ঘুরছেন তাঁরা। সামনে ডিম্পল চিমা এবং তাঁর পিছনে ক্য়াপ্টেন বাত্রা। হঠাৎই ক্যাপ্টেন বাত্রা বলে ওঠেন, 'অভিনন্দন মিসেস বাত্রা। তুমি কি বুঝতে পেরেছো, এই নিয়ে আমরা চারবার পরিক্রমা করলাম।' এরপরই আবেগে অভিভূত হয়ে যান ডিম্পল চিমা। আর ক্যাপ্টেন বাত্রার প্রতি তাঁর ভালোবাসা আরও বেড়ে যায়। স্মৃতিচারণা করে জানিয়েছেন তিনি।
ডিম্পল চিমা আরও বলেন, 'একদিন দেখা করার সময়ে আমি ওকে বিয়ের কথা বলি। জানতে চাই কবে আমরা বিয়ে করব। ও কোনও উত্তর না দিয়েই মানিব্যাগ থেকে একটা ব্লেড বের করে। এরপর নিজের বুড়ো আঙুল কেটে, সেই রক্ত দিয়ে আমার সিঁথি রাঙিয়ে দেয়। যদিও পরে সেই ঘটনা নিয়ে আমি ওকে রাগাতাম যে পুরো ঘটনা তো সিনেমার মতো ছিল।' ক্যাপ্টেন বাত্রার মৃত্যুর পর কেন আর বিয়ে করেননি তিনি ? ডিম্পল চিমা জানিয়েছেন, কীভাবে তিনি তাঁর এই অনুভূতি ব্যাখ্যা করবেন। এতগুলো বছরে কখনও তো অনুভবই করেননি যে ক্যাপ্টেন বাত্রা তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তিনি আবেগেপ্রবণ হয়ে জানান যে, তাঁর হৃদয় বলে যে ক্যাপ্টেন বাত্রার সঙ্গে তাঁর ফের দেখা হবে। আর সেটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
প্রসঙ্গত, ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা শহিদ হন ৭ জুলাই ১৯৯৯ সালে। তাঁর কোড নাম ছিল 'শের শাহ'। যুদ্ধক্ষেত্রে 'ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর' কথাটি তিনি স্লোগানের মতো করে ব্যবহার করতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্বের জন্য পরমবীর চক্র সম্মানও পান। সম্প্রতি কার্গিলের যুদ্ধে শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার জীবন কাহিনি নিয়ে বলিউডে তৈরি হচ্ছে ছবি। সত্য়ি ঘটনা অবলম্বনে এই ছবির নাম রাখা হয়েছে 'শের শাহ'। ছবিতে ক্যাপ্টেন বাত্রার ভূমিকায় অভিনয় করছেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা এবং ডিম্পল চিমার ভূমিকায় দেখা যাবে কিয়ারা আডবানিকে।