Alipore Zoological Garden: সঙ্কটমুক্ত ২ বন্য কুকুরশাবক, স্বস্তিতে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ
Wild dogs at Alipore Zoological Garden: সুস্থ হওয়ার পর বন্য কুকুরশাবকদের প্রকাশ্যে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: পরীক্ষাপত্র ছিল নতুন, তাতেও পাশমার্ক জুটেছে। আর তাতেই কিছুটা নিশ্চিন্ত আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সঙ্কটে ছিল একজোড়া বন্য কুকুরশাবক। তাদের বাঁচাতেই ঘুম ছুটেছিল চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের। আপাতত সুস্থ আড়াই মাসের ভাইবোনকে দ্রুত দর্শকদের জন্য প্রকাশ্যে আনার সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলা হয়েছে।
২০১৯-এ ভাইজাগ চিড়িয়াখানা থেকে আনা হয়েছিল একজোড়া বন্য কুকুর। বছর দেড়েক বাদে তাদেরই সন্তান হয়। কিন্তু সেই খবরে উল্লসিত না হয়ে উল্টে চিন্তিত হয়ে পড়েন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। যে খাঁচায় রাখা হয়েছিল এই দুই বন্য কুকুরকে, সেখানেই রয়েছে ছোট্ট মুখের একটি গুহা। নিরিবিলি প্রয়োজন হলেই বন্য কুকুরদ্বয় ঢুকে পড়ত সেখানে। আর সেই গুহা থেকে ২৩ ডিসেম্বর সকালে একটি মৃত সন্তানকে বের করে আনে মা বন্য কুকুরটি। তার ঠিক আগের দিনই গুহার মধ্যে জন্ম হয় চারটি কুকুরের। এক সদ্যোজাতের মৃত্যু খুব একটা অস্বাভাবিক নয় বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে হয় কর্তাদের। কিন্তু বিপদ বাড়ে সন্ধেতে। সন্ধের দিকে আরও এক মৃত শাবককে গুহা থেকে বের করে আনে মা।
পরপর দুই বন্য কুকুরশাবকের মৃত্যুতে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। কারণ বিশ্লেষণ শুরু হয়। এমনিতেই ভারতীয় বন্য কুকুরের সংখ্যা এই মুহূর্তে আহামরী কিছু নয়। কমতে থাকা এই প্রজাতির জন্য ইতিমধ্যেই কানহা জাতীয় উদ্যান সহ একাধিক জায়গায় রেডিও কলার জাতীয় বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে জন্মানোর পরেও না বাঁচলে তা আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে যথেষ্ট হতাশার হয়ে দাঁড়ায়।
প্রাথমিক আলোচনায় দেখা যায়, মা বা বাবার আঘাতেই কোনওভাবে মৃত্যু হয়েছে বাচ্চাদুটির। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবিত দুই বাচ্চাকে খাঁচা থেকে সরিয়ে আনা হয়। ভাইবোনকে ভর্তি করা হয় চিড়িয়াখানার হাসপাতালে। তাতেও সমস্যা মেটেনি। এত ছোট বন্য কুকুরশাবককে মা ছাড়া সুস্থভাবে বড় করার অভিজ্ঞতা ছিল না চিড়িয়াখানার কারও। কিন্তু মাতৃদুগ্ধের পরিবর্তে হাতে করেই দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি শুরু করা হয়। আস্তে আস্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সুস্থ হতে শুরু করে ভাইবোন।
আপাতত দুই বন্য কুকুরশাবকের বয়স ৮১ দিন। দুজনেরই ওজন ২,২০০ থেকে ২,৩০০ গ্রামের মধ্যে, সেটাকে স্বাভাবিক বলেই মনে করছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। আপাতত তাদের প্রতিদিনের ডায়েটে রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ মিলিলিটার দুধ, সেটাও চলছে ফিডিং বোতলেই। সঙ্গে থাকছে১৬০ গ্রাম করে মুরগির মাংস। হজমের সুবিধার জন্য সেটা খাওয়ানো হচ্ছে সিদ্ধ ও নরম করে।
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস কুমার সামন্তের কথায়, ‘বন্য কুকুরশাবকদ্বয়কে বাঁচানো কঠিন ছিল। তবে প্রায় তিন মাসের পরিচর্যায় ওদের সুস্থ করে আমরা খুশি। এদের ঘিরে চিড়িয়াখানার আকর্ষণও বাড়বে বলে আশা করছি।’
আপাতত অপেক্ষা আর কিছুদিনের। তারপরেই দুই ভাইবোন আসবে প্রকাশ্যে। চিড়িয়াখানা পরিবারের জৌলুস বাড়াবে এরা, সেই আশায় বুক বাঁধছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।