কয়লা পাচারকাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্ত্রী রুজিরাকে তলব ইডি-র
পিটিআই ও এএনআই সূত্রে খবর
কলকাতা: কয়লা পাচারকাণ্ডে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট বা ইডি। সংবাদসংস্থা ANI সূত্রে খবর, রুজিরাকে আগামী ১ সেপ্টেম্বর ও অভিষেককে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর দিল্লির ইডি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে। দু’জনকেই তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বিস্তারিত নথি আনতে বলা হয়েছে।
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছে তৃণমূল। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, 'রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণেই অভিষেক ও তাঁর স্ত্রীর নাম জড়ানো হচ্ছে। এদিকে টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্দেশে আর কিছুক্ষণ পরেই ছাত্র-যুবদের উদ্দেশে ভার্চুয়াল বার্তা দেবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেই অভিষেক এবং রুজিরাকে তলবের ঘটনায় চাপানউতোর রাজনৈতিক মহলে।
এর আগেও রুজিরাকে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। কয়লাকাণ্ডের তদন্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ সদস্যের দল গঠন করে সিবিআই। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। এর পর অভিষেকের স্ত্রীর উত্তর পৌঁছয় সিবিআইয়ের অফিসে। যেখানে যুব তৃণমূল সভাপতির স্ত্রী জানান, গোয়েন্দারা তাঁর বাড়িতে আসতে পারেন।
রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই চিঠিতে লিখেছিলেন, 'আমাকে কী কারণে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে বা তদন্তের উদ্দেশ্য কী, তা আমি জানি না। তবে ২৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টের মধ্যে আপনারা সুবিধা মতো আমার বাড়িতে আসতে পারেন।'
এর পর ২৩ ফেব্রুয়ারি সিবিআই পৌঁছনোর আগেই অভিষেকের বাড়িতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের বাড়িতে থাকেন প্রায় ৯ মিনিট। মুখ্যমন্ত্রী বেরনোর ৩ মিনিট পরই পৌঁছয় সিবিআই। রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর্ব শেষে সোয়া এক ঘণ্টা পর অভিষেকের বাড়ি থেকে বের হয় সিবিআই। অভিষেক-পত্নীর বয়ানও রেকর্ড করা হয়। অভিষেক-রুজিরার ঘনিষ্ঠমহল সূত্র দাবি সিবিআইয়ের সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। সিবিআইয়ের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করা হয়েছে।’
সিবিআই সূত্রের জানা গিয়েছিল, প্রথম আধ-ঘণ্টা করা হয়েছে সাধারণ প্রশ্ন। তার পর বিদেশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হয়েছে। ব্যাঙ্ককের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্তও প্রশ্ন করা হয়েছে রুজিরাকে। বেশিরভাগ প্রশ্নের জবাব মেলেনি, এমনটাই দাবি করে সিবিআই।
যদিও পরে, অভিষেক-রুজিরার ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে দাবি করা হয়, ‘জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব খুব ভালভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ‘সিবিআইয়ের সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। সিবিআইয়ের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করা হয়েছে।’
অন্যদিকে সিবিআই সূত্রের খবর, বেশিরভাগ প্রশ্নের জবাবে রুজিরা বলেন, ‘আমি জানি না, এই বিষয়ে কিছু খবর নেই। এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’ সূত্রের খবর, নিজাম প্যালেসে গিয়েও ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিকের সঙ্গে আলোচনা হবে। বয়ান পর্যালোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত।
সিবিআই সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৈরি করা হয় ৮ পাতার প্রশ্ন তালিকা। সিবিআইয়ের ৮ সদস্যের তদন্তকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন এসপি পদমর্যাদার অফিসার বিশ্বজিৎ দাস। ছিলেন অ্যাডিশনাল এসপি পদমর্যাদার তদন্তকারী অফিসার উমেশ কুমার। এ ছাড়াও, রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই দলে ছিলেন ডিএসপি পদমর্যাদার দুই মহিলা অফিসার। খবর সিবিআই সূত্রে।