করোনা আবহে কমছে ডেঙ্গির সংক্রমণ, দাবি কলকাতা পুরসভার
২০১৮, ১৯-এ কলকাতায় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল ডেঙ্গি-পরিস্থিতি। ২০২০-তে মশাবাহিত সেই রোগের দাপট কমে এলেও, এড়ানো যায়নি প্রাণহানি।
অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ২০২০-র প্রথম ৬ মাসের তুলনায়, এবছর ওই সময়ে কলকাতায় ডেঙ্গির সংক্রমণ কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। করোনা পরিস্থিতির জন্যই এই সুফল। কার্যত সেটাই মনে করছেন পুরকর্তারা।
২০১৮, ১৯-এ কলকাতায় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল ডেঙ্গি-পরিস্থিতি। ২০২০-তে মশাবাহিত সেই রোগের দাপট কমে এলেও, এড়ানো যায়নি প্রাণহানি। করোনার সঙ্গে পুরসভার কর্তাদের কপালে ভাঁজ ফেলেছিল ডেঙ্গিও। বর্ষা আসতেই শহরে দেখা দেয় ডেঙ্গির প্রকোপ। তবে এবছরের ছবিটা কিছুটা স্বস্তির। কলকাতা পুরসভা সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ২০১৯-এর তুলনায় ২০-তে ডেঙ্গির সংক্রমণ কমেছিল ৬০ শতাংশ। আর গতবছরের প্রথম ৬ মাসের তুলনায়, এবছর প্রথম ৬ মাসে শহরে ডেঙ্গির সংক্রমণ কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ (৪৬%)। ২০২০-র পয়লা জানুয়ারি থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৯৬ জন। সেখানে চলতি বছরে একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ জন।
এর জন্য পরোক্ষে করোনা পরিস্থিতিকেই কারণ হিসেবে দেখছে পুরসভা। পুর কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, ডেঙ্গি আক্রান্ত অনেকেরই উপসর্গ বোঝা যায় না। ফলে শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু নিয়েই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান অনেকে। যেমন ধরা যাক, জেলার কোনও এক ব্যক্তিকে ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশা কামড়েছে। কিন্তু উপসর্গ টের না পাওয়ায়, ওই ব্যক্তি কলকাতায় এসেছেন। সেখানে আবার আরেকটি মশার মাধ্যমে তাঁর শরীর থেকে জীবাণু চলে যায় অন্যের শরীরে।
কিন্তু এবার তা হওয়ার সম্ভাবনা কম ছিল। কারণ করোনা পরিস্থিতি। একেই সংক্রমণের ভয়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোচ্ছেন না বহু মানুষ। তার উপর কার্যত লকডাউনে, জেলা ও শহরের মধ্যে লোকজনের যাতায়াতও কম। এখানেই সুফল দেখছে পুরসভা। ডেঙ্গির প্রকোপ কমার পিছনে আরও একটা কারণ আছে বলে মনে করছেন, কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ। অতীন ঘোষ বলেন, বর্ষায় বাড়িতে অনেক ওয়াটার পকেট তৈরি হচ্ছে, যেখানে ডেঙ্গির মশা জমায়, এখন তো মানুষ বাড়িতে থাকতে পারছে, ফলে বাড়ির চারপাশ দেখতে পাচ্ছে, ফলে পরিষ্কার হচ্ছে। পুরসভা সূত্রে খবর, ডেঙ্গি মোকাবিলায় আগামী সপ্তাহ থেকেই এলাকা পরিদর্শন শুরু করবেন পুরসভার কর্তা ও প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যরা।