(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Patient Refer Case: সারেনি রেফার-রোগ, ভর্তি হতে না পেরে এসএসকেএমে ৩৬ ঘণ্টা গাছের তলায় রোগী!
Patient Refer Case in Hospitals: করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে সরকারি হাসপাতালগুলি। কিন্তু রেফার-রোগ যে সারেনি, তার আরও একবার প্রমাণ মিলল এরাজ্যে।
ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী,কলকাতা: বহরমপুর মেডিক্যাল, এনআরএস হয়ে এসএসকেম। বেড না মেলায় প্রায় ৩৬ ঘণ্টা গাছের নীচে মুর্শিদাবাদের মহিলা। মদন মিত্রর হস্তক্ষেপে অবশেষে ভর্তি হলেন রোগী। যদিও রোগীকে দেরিতে ভর্তি নেওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া মেলেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। রোগীর মেয়ে শর্মীলা বিবি কাঁদতে কাঁদতে জানান,‘‘মায়ের খুব কষ্ট। দেখে থাকতে পারছি না। মা বলছে আমাকে মেরে ফেল...৷’’
করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে সরকারি হাসপাতালগুলি। কিন্তু রেফার-রোগ যে সারেনি, তার আরও একবার প্রমাণ মিলল এরাজ্যে।
তিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঘুরেও রোগীকে ভর্তি করাতে টালবাহানা। পরিবারের অভিযোগ, বেড না পেয়ে ৩৬ ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় SSKM হাসপাতাল চত্বরে গাছের নীচে ঠাঁই হয় রোগীর।
ইনি মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের বাসিন্দা ৫৮ বছরের মাজেরা বিবি। পরিবারের দাবি, রবিবার সিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে ঘাড়ে ও পিঠে চোট পান।
ওই দিনই বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। কিন্তু কলকাতায় রেফার করা হয় মাজেরা বিবিকে। সোমবার প্রথমে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাঁকে।
কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ডাক্তার নেই বলে, SSKM-এ রেফার করা হয়। সোমবার রাত ১২টা নাগাদ, NRS মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আরেক মেডিক্যাল কলেজ SSKM-এ আনা হয় রোগীকে।
কিন্তু সেখানেও রোগীকে ভর্তি হতে কালঘাম ছুটে যায় গরিব পরিবারের। তাঁদের অভিযোগ, ঠান্ডার মধ্যে কখনও গাছের তলায় ফেলে রাখতে হয়েছিল রোগীকে। বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকতে থাকতে যেন মৃত্যুকেই চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলেন মাজেরা বিবি।
শর্মিলা বিবি জানান, ‘‘এসএসকেএম-এ সোমবার রাতেই নিয়ে আসি। এক্সরে করার পর ডাক্তার জানান বেড নেই। তার পর থেকে গাছের তলায়, রাস্তায় রাস্তা ঘুরে বেড়াই ৷’’
চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর অবস্থায় ক্রমেই খারাপের দিকে যেতে থাকে। অবশেষে তৃণমূল নেতা মদন মিত্রর হস্তক্ষেপে রোগীর MRI হয়। এরপর ৩৬ ঘণ্টা পর, বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ ভর্তি নেওয়া হয় মাজেরা বিবিকে।
দক্ষিণ কলকাতার যুব তৃণমূল কংগ্রেস সম্পাদক ঝন্টু দে বলেন, ‘‘মদন দা মিছিলে ছিলেন, আমাকে দ্রুত ফোন করেন। ডিরেক্টরকেও ফোন করেন, MRI করা হচ্ছে। ভর্তি হয়ে যাবে।’’
সরকারি হাসপাতাল থেকে কোনও রোগীকে ফেরানো যাবে না। অনেক আগেই এই নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাস্তব বলছে অন্য কথা। তৃণমূল নেতা মদন মিত্র জানান, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারণ করেছিলেন। রেফার করলেও নিকটবর্তী হাসপাতালে বেডের কথা জানাতে হত। নিশ্চয় মিস কমিউনিকেশন হয়েছে ৷’’
বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী ও কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প নিয়ে তুঙ্গে তরজা। কিন্তু হাসপাতালে মানুষের দুর্ভোগ কি কমেছে? প্রশ্নটা থেকেই গেল।