দীর্ঘক্ষণ বেডের অপেক্ষায় থেকে রোগীর মৃত্যু মেডিক্যালে
কলকাতা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের সামনে রোগী নিয়ে টানা ৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করে পরিবার।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: দীর্ঘ অপেক্ষা করেও লাভ হল না। শেষ মুহূর্তে ভর্তির কাগজ পত্র তৈরি হয়েছিল বটে, কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। শহরে ফের রেফার রোগের বলি ১ রোগী। বেডের অপেক্ষায় থেকে কলকাতা মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হল রোগীর। পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার সকাল থেকে প্রায় ৩ হাসপাতাল থেকে প্রত্যাখ্যানের পরে মেডিক্যালে রোগীকে নিয়ে আসে তাঁর পরিবার।
সেখানে গিয়েও প্রায় ৪ ঘণ্টা বেডের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের সামনে রোগী নিয়ে টানা ৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করে পরিবার। ৪ ঘণ্টা অপেক্ষার পরে মৃত্যুর ৫ মিনিট আগে বেড মিললেও আর কোনও কাজেই এল না চিকিৎসা। কার্যত বিনা চিকিৎসায় হাসপাতাল চত্বরের মারা গেলেন রোগী। হাসপাতালে ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়। এ বিষয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বুধবার গুরুতর অসুস্থ হাড়োয়ার রোগীকে প্রথমে আরজি করে নিয়ে যাওয়া হয়, ক্রমাগত তাঁর রক্তবমি হচ্ছিল। তবে বেড নেই বলে ফেরত পাঠায় আরজি কর হাসপাতাল। রোগীকে ফেরায় বাগুইআটি-লেকটাউনের ২টি নার্সিংহোমও। এর পর রোগীকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসে পরিবার। আর সেখানেও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে করতে মারা যান রোগী।
গতকালই সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে রেফার-হয়রানির অভিযোগ ওঠে। স্ট্রোক হওয়ার পর জেলা থেকে কলকাতা, ৫টি হাসপাতাল ঘুরে ৪৮ ঘণ্টা পর এসএসকেএমে ভর্তি হন ডোমকলের প্রৌঢ়া। পরিবারের দাবি, রবিবার ৬৫ বছরের প্রৌঢ়ার স্ট্রোক হয়।
অভিযোগ, মস্তিস্কে রক্ত জমাট বাঁধা রোগিণীকে নিয়ে ডোমকল মহকুমা, বহরমপুর সদর, এনআরএস, এসএসকেএম, চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যালে ঘুরেও ২ দিন ধরে ভর্তি করা যায়নি। গতকাল রাত রোগিণীকে নিয়ে এসএসকেএমে প্রতীক্ষালয়ে রাত কাটান পরিজনেরা। বিষয়টি সুপারের গোচরে আনার পর, আজ ওই রোগিণীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার স্ট্রোক হয় নুর খাতুনের। প্রথমে ডোমকল মহকুমা হাসপাতাল, সেখান থেকে বহরমপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিত্সকরা জানান, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধায় চিকিত্সা হবে কলকাতায়। গতকাল রোগিণীকে এনআরএসে নিয়ে আসে পরিবার। অভিযোগ, ভর্তি নিলেও শুরু হয়নি চিকিত্সা।
এর পর রোগিণীকে নিয়ে এসএসকেএমে নিয়ে গেলে বেড নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ফের রেফার করা হয় এসএসকেএমে। এরপর রোগিণীকে নিয়ে গোটা রাত এসএসকেএমের প্রতীক্ষালয়ে কাটিয়েছে পরিবার। আত্মীয়দের দাবি, আজ বহির্বিভাগে দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।সবমিলিয়ে সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে বারবার এই অভিযোগ ওঠায় চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীদের পরিবার।