এক্সপ্লোর
Advertisement
আমিও আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলাম, বললেন মনোজ বাজপেয়ী
যদি স্বপ্ন সত্যি করার তাগিদ থাকে তবে সে জন্য কষ্ট সহ্য করতে কষ্ট হয় না। ৯ বছরের সেই বিহারী বালকের দেখা স্বপ্নই একমাত্র সত্যি, আর কিছু নয়। মনোজ শেষ করেছেন।
মুম্বই: নায়ক হওয়ার আদর্শ চেহারা তাঁর ছিল না। এক সময় একটা বড়া পাও কেনারও পয়সা থাকত না পকেটে। আত্মহত্যার কথা ভাবছিলেন, জানতে পেরে বন্ধুরা সব সময় সঙ্গে থাকতেন। জানালেন মনোজ বাজপেয়ী।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পর বলিউডে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে স্বজনপোষণ বিতর্ক। বলিউডে বহিরাগত মনোজও। উপরন্তু তাঁর নায়ক হওয়ার মত চেহারাও ছিল না। সাক্ষাৎকারে এ কথা বলে মনোজ জানিয়েছেন, ৯ বছর বয়স থেকে জানতেন, অভিনয়ই তাঁর ভবিতব্য। তিনি চাষীর ছেলে। বিহারের গ্রামে বেড়ে উঠেছেন ৫ ভাইবোনের সঙ্গে। পড়াশোনা করেছেন গ্রামের পাঠশালায়। জীবন ছিল খুব সাধারণ কিন্তু যখনই তাঁরা শহরে যেতেন, সিনেমা দেখতেন। তিনি অমিতাভ বচ্চনের অনুরাগী ছিলেন, তাঁর মত হতে চাইতেন। ৯ বছর বয়সেই বুঝে গিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে অভিনয় করবেন তিনি।
কিন্তু অভিনয় শিখতে টাকা লাগে। তাই সেদিকে না হেঁটে মনোজ লেখাপড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। উচ্চশিক্ষার জন্য দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর দিল্লি চলে আসেন তিনি। তখন থেকে থিয়েটারে কাজ করা শুরু। গ্রামের লোকেরা অবশ্য বলেছিল, ওর দ্বারা কিস্যু হবে না কিন্তু সে কথা তিনি কানে তোলেননি। এরপর ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় আবেদন করেন তিনি কিন্তু ৩ বার প্রত্যাখ্যাত হন। তখন আত্মহত্যার কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন, বন্ধুরা চোখে চোখে রাখতেন। রাত্রেও কেউ না কেউ শুতেন তাঁর সঙ্গে। যতদিন না কোথাও সুযোগ পাচ্ছেন ততদিন এভাবেই চলছিল।
একদিন চায়ের দোকানে বসেছিলেন, তখন ভাঙাচোরা স্কুটার নিয়ে তাঁর কাছে আসেন তিগমাংশু ধুলিয়া এখন যিনি নামী পরিচালক-চিত্রনাট্যকার। শেখর কপূর তাঁকে চেয়েছেন ব্যান্ডিট কুইনের জন্য! তক্ষুনি রাজি মনোজ চলে আসেন মুম্বই।
মুম্বইয়ে ৫ জনের সঙ্গে বস্তিতে একটি ঘর ভাড়া করে থাকতেন তিনি। কাজের জন্য ঘুরতেন, কোথাও সুবিধে হত না। একজন সহকারী পরিচালক তাঁর ছবি ছিঁড়ে ফেলেন, একদিনে হাত থেকে চলে যায় তিন তিনটি কাজ। প্রথম শটের পর শুনতে হয়েছিল ‘গেট আউট’। তাঁর চেহারা নায়কোচিত নয়, ক্ষমতাশালীরা ভেবেছিল, তিনি কখনও বড় পর্দায় সুযোগ পাবেন না। এই সময়টা বস্তির ঘরের ভাড়া দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছিল তাঁকে, একটা বড়া পাওয়ের দাম জোগানোরও সামর্থ্য ছিল না। কিন্তু তাঁর পেটের ক্ষিদেকে সাফল্যের জন্য ক্ষিদে দমাতে পারেনি।
৪ বছর এভাবে কাটার পর মহেশ ভট্টের সিরিয়াল স্বাভিমান-এ তিনি কাজের সুযোগ পান। এপিসোড পিছু পেতেন দেড়হাজার টাকা করে- সেটাই তাঁর ঠিকঠাক রোজগার। তাঁর কাজ লোকের নজরে পড়ে, প্রথম বলিউডি ছবিতে সুযোগ পান। তারপর ঘটে পাথব্রেকিং সেই ছবি সত্যা।
এরপর একের পর এক পুরস্কার। প্রথম বাড়ি কিনলেন, বুঝতে পারলেন, বলিউডে থাকতে এসেছেন তিনি। আর এখন ৬৭টি ছবি করে ফেলেছেন। যদি স্বপ্ন সত্যি করার তাগিদ থাকে তবে সে জন্য কষ্ট সহ্য করতে কষ্ট হয় না। ৯ বছরের সেই বিহারী বালকের দেখা স্বপ্নই একমাত্র সত্যি, আর কিছু নয়। মনোজ শেষ করেছেন।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
ব্যবসা-বাণিজ্যের
জেলার
ক্রিকেট
ব্যবসা-বাণিজ্যের
Advertisement