![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
বায়ুসেনার রাফাল-পাইলটরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সত্যিই প্রেরণা, চিনে নিন এঁদের...
এই পাইলটদের অনেকেই কুস্তিতে সিদ্ধহস্ত
![বায়ুসেনার রাফাল-পাইলটরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সত্যিই প্রেরণা, চিনে নিন এঁদের... Meet the pilots who flew Rafale home: Stories that will inspire the generation next to take to the skies বায়ুসেনার রাফাল-পাইলটরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সত্যিই প্রেরণা, চিনে নিন এঁদের...](https://static.abplive.com/wp-content/uploads/sites/3/2020/07/01031853/rafale-pilots.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
নয়াদিল্লি: ভারতীয় বায়ুসেনার সেই সাত পাইলটের কাছে বুধবার দিনটা ছিল ভীষণই গর্বের। ফ্রান্স থেকে তাঁরাই তো উড়িয়ে নিয়ে এসেছেন পাঁচটি রাফাল যুদ্ধবিমান। অম্বালার মাটি ছোঁয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁদের স্বাগত জানান খোদ বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদৌরিয়া।
ভারতে প্রথম ব্যাচের যে পাঁচটি রাফাল এসেছে, তাদের মধ্যে তিনটি এক-আসনের এবং দুটি দুই-আসনের। ফ্রান্স থেকে ভারত-- এই যাত্রায় রাফালগুলির নেতৃত্বে ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন হরকিরত সিংহ, যিনি বায়ুসেনার ১৭ নম্বর গোল্ডেন অ্যারো স্কোয়াড্রনের কমান্ডিং অফিসার।
বায়ুসেনার অত্যন্ত অভিজ্ঞ পাইলটদের অন্যতম হলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন হরকিরত সিংহ। একাধিক সম্মানে ভূষিত। ২০০৮ সালে একটি অভিযানে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁর মিগ-২১ বাইসন বিমান। তাঁর বিমানের জনবসতির মধ্যে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু, সেই পরিস্থিতি থেকে বিমানটি নিয়ে নিরাপদ জায়গায় অবতরণ করেন তিনি। বিমানটি বেঁচে তো যায়-ই, সেইসঙ্গে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন তিনি। এর জন্য তাঁকে শৌর্য সম্মান প্রদান করা হয়, যা শান্তির সময়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ। ওই সময় হরকিরত স্কোয়াড্রন লিডারের পদে ছিলেন। ২০০১ সালে বায়ুসেনায় যোগ দিয়েছিলেন হরকিরত। তাঁর বাবা সেনাবাহিনীতে ছিলেন। লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে থেকে অবসর নেন। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে বায়ুসেনার অফিসার।
রাজস্থানের জালৌর শহরের বাসিন্দা উইং কমান্ডার অভিষেক ত্রিপাঠি স্কুলজীবনে প্রতিভাবান কুস্তিগীর ছিলেন। ১৯৮৪ সালে জন্ম অভিষেকের। তাঁর বাবা ব্যাঙ্ককর্মী, মা সেলস ট্যাক্স দফতরে কাজ করতেন। ছোটবেলা থেকেই ক্রীড়ায় তুখোড় ছিলেন অভিষেক। তবে, তাঁর সবচেয়ে পছন্দের খেলা ছিল কুস্তি ও ক্রস-কান্ট্রি দৌড়।
জালৌরে অভিষেকের প্রতিবেশীরা বায়ুসেনার এই তরুণ অফিসারকে অত্যন্ত নম্র হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁদের মতে, অভিষেকের এই সাফল্যের নেপথ্যে তাঁর বাবা-মায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। অভিষেককে ছোটবেলা থেকেই সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তাঁরা, যে কারণে আজও এই অফিসার বিমান নিয়ে আকাশে ভাসলেও, তাঁর পা মাটিতেই রয়েছে। জানা গিয়েছে, অভিষেকও কুস্তি খেলতে ভালবাসেন।
উইং কমান্ডার মণীশ সিংহ উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলায় বাকওয়া নামে একটি ছোট্ট গ্রাম থেকে এসেছেন। তাঁর পরিবারে অনেকেই সামরিক বাহিনীতে ছিলেন। পারিবারিক ধারা অব্যাহত রেখে ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন সৈনিক স্কুল থেকে পড়াশোনা করে মণীশ। ২০০৩ সালে তিনি বায়ুসেনায় যোগ দেন। জানা গিয়েছে, ছোটবেলায় মণীশ আকাশে বিমান দেখতে পেলেই বলতেন, তিনিও বড় হয়ে এমন বিমান চালাবেন।
মণীশের সেই গল্প আজ গোটা গ্রামের মুখে মুখে ফিরছে। আজ যখন ফ্রান্স থেকে রাফাল উড়িয়ে ভারতে পৌঁছলেন মণীশ, তখন বাকওয়া গ্রামের মানুষ আনন্দে আত্মহারা, যেন সকলের ঘরের ছেলে এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মণীশের বাবা বলছেন, ও নিজের স্বপ্ন সফল করেছে। এতেই আমরা খুশি। মায়ের প্রার্থনা, শুধু তাঁর ছেলে নয়, ভারতীয় বাহিনীর সকলেই যেন সুরক্ষিত থাকেন। তিনি বলেন, সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে চিন্তায় থাকি। ফ্রান্সে মণীশ যখন প্রশিক্ষণে গিয়েছিলেন, তখন থেকেই সকলে প্রার্থনা করছিল, ও যেন রাফাল উড়িয়ে ভারতে ফেরে।
হরিয়ানায় গুরুগ্রাম জেলার বাসাই গ্রামের বাসিন্দা গ্রুপ ক্যাপ্টেন রোহিত কাটারিয়া। তাঁর বাবা সেনাবাহিনীতে অফিসার ছিলেন। কর্নেল পদে অবসর নেন। পরে, সৈনিক স্কুলের প্রিন্সিপাল হন। রাফাল উড়িয়ে নিয়ে আসছে রোহিত-- এই খবরে গোটা গ্রামে উৎসবের মেজাজ ছিল। সকলের কাছেই রোহিত রোল-মডেল। ঠাকুর্দা বলেন, ছোটবেলা থেকে কেরামতি দেখানোর শখ রোহিতের। এখন আকাশে দেখাচ্ছে।
রাফাল উড়িয়ে নিয়ে এসে এই সাত সাহসী পাইলট আজ প্রকৃত অর্থেই হিরো। এই হিরো-রা আবার পরের প্রজন্মের হাতে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও প্রেরণার ব্যাটন তুলে দেবেন। তৈরি হবে আরও অনেক হিরো। এভাবেই এগোতে থাকবে ভারতীয় বায়ুসেনার ধ্বজা।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)