‘ওয়ান ম্যান শো, টু ম্যান আর্মি’ মনোভাব ছাড়তে হবে, মোদী-অমিতকে কটাক্ষ শত্রুঘ্নর
পটনা: ‘ওয়ান ম্যান শো, টু ম্যান আর্মি’ মনোভাবে আচ্ছন্ন হয়ে থাকলে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হবে বিজেপি। এমনটাই মনে করেন দলীয় সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা।
অভিনেতা-রাজনীতিবিদের দাবি, গেরুয়া শিবিরের বর্তমান নীতি নিয়ে দেশের যুব, কৃষক ও বণিক সম্প্রদায় অসন্তুষ্ট। তিনি বলেন, আমার মনে হয় হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাতে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে আমাদের। দেওয়ালের লিখনটা বুঝতে হবে। বিরোধীদের হাল্কাভাবে নিলে চলবে না।
প্রায়ই, বিভিন্ন ইস্যুতে দলের সমালোচকের ভূমিকায় দেখা যায় বিজেপির এই লোকসভা সাংসদকে। যদিও, এদিন শত্রুঘ্ন দলত্যাগের জল্পনা উড়িয়ে দেন। বলেন, আমি বিজেপি ছাড়ার জন্য যোগ দিইনি। যদিও, এর সঙ্গেই নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওয়ান ম্যান শো বা টু ম্যান আর্মি হয়ে থাকলে আমরা নিজেদের চ্যালেঞ্জ পূরণ করতে পারব না।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনে করেন, বিজেপির উচিত ঐকবদ্ধ থাকা এবং দলের প্রবীণ নেতাদের আশীর্বাদ নিয়ে কাজ করা। তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারি না, লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশী, যশবন্ত সিনহা এবং অরুণ শৌরির মত প্রবীণ নেতারা কী দোষ করেছেন। কেন তাঁদের কোণঠাসা করে দেওয়া হল? আমরা সকলে একটা পরিবারের মত ছিলাম। ভুল যদিই বা হয়ে থাকে, তাহলে কেন মিটমাটের পথে হাঁটা হল না?
প্রসঙ্গত, বিজেপির অন্যতম দুই প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য আডবাণী ও জোশীকে দলের মার্গদর্শকমণ্ডলের সদস্য করে তাঁদের রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী—যশবন্ত ও শৌরিকে দলেই কোণঠাসা করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে, বিভিন্ন ইস্যুতে দলের নীতি ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এই দুজন।
এদিন শত্রুঘ্ন জানান, একাধিক ব্যর্থতার দিকে ফিরে তাকানো উচিত দলের। তাঁর মতে, নোট বাতিলের ফলে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ‘শটগান’ বলেন, গত বছর নোট বাতিলের ফলে খুব কম পরিমাণের কালো টাকা সিস্টেম থেকে বেরিয়েছে। জিএসটি-র ফলে একমাত্র চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের ফায়দা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও দেশে তেলের দাম বেড়েই চলেছে।
বিজেপি-শাসিত গুজরাত ও রাজস্থানে ওঠা বিভিন্ন ইস্যু নিয়েও এদিন দলের সমালোচনায় মুখর হন শত্রুঘ্ন। বলেন, গুজরাতে দলীয় নেতৃত্বের ‘একগুঁয়েমির’ জন্যই পাতিদার আন্দোলন এভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে। যে হার্দিক পটেল নৈতিকভাবে আমাদের দিকেই ছিল, আমরা তাঁকে ঠিকমতো সামলাতে পারিনি। পাশাপাশি, রাজস্থান প্রশাসনের বিতর্কিত বিল নিয়েও মুখ খোলেন শত্রুঘ্ন। বলেন, সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের খবর প্রকাশ করার ওপর রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারি করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চেয়েছে সরকার।