দীর্ঘদিন লকডাউন করা যাবে না, পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েই মানুষকে কাজে ফেরাতে হবে’, করোনা সঙ্কটে পরামর্শ রাজনের
স্বাধীনোত্তর ভারত এমন দুর্যোগের মুখোমুখি এর আগে কখনও হয়নি।
নয়াদিল্লি: নিঃসন্দেহে দেশ এক অন্ধকার সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনোত্তর ভারত এমন দুর্যোগের মুখোমুখি এর আগে কখনও হয়নি। একদিকে মহামারী কোভিড-১৯-এর প্রকোপ, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির একেবারে বেহাল দশা। করোনা ঠেকাতে ২১ দিনের লকডাউন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। এতে দেশব্যাপী সংক্রমণের হাত থেকে ভারতকে অনেকটাই রক্ষা করা যাবে। আবার অন্যদিকে এই ৩ সপ্তাহ কোটি কোটি মানুষ গৃহবন্দি থাকার কারণেই খাদের কিনারে পৌঁছে যাবে অর্থনীতিও। ফিচ রেটিংস অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি গিয়ে ঠেকতে পারে সর্বাধিক ২ শতাংশে। যা গত ৩০ বছরে সর্বনিম্ম। এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল রেটিংস সহ এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কেরও আশঙ্কা, বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা বিপদে ফেলবে ভারতকেও। এই পরিস্থিতিতে দেশের কী করণীয়? রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের পরামর্শ, “গোটা দেশকে দীর্ঘসময় লকডাউন করা সম্ভব নয়। যে যে অঞ্চলে করোনা সংক্রমণ নেই বা থাকলেও তা খুবই সামান্য, সেখানে পর্যাপ্ত সতর্কাতার সঙ্গেই মানুষকে কাজে ফেরাতে হবে।”
পড়ুন: করোনা সংক্রমণের সংবাদ পরিবেশন করায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সাংবাদিকদের হুমকি
২০১৬ পর্যন্ত একটানা ৩ বছর আরবিআইয়ের গভর্নর ছিলেন রাজন। এছাড়াও ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো বুথ স্কুল অব বিজনেস-এ অর্থনীতি বিষয়ে অধ্যাপনাও করেন এই অর্থনীতিবিদ। সম্প্রতি করোনা আবহে দেশের অর্থনীতি যেভাবে থমকে যাচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন রাজন নিজের ব্লগে লিখেছেন, দরিদ্র এবং রোজগারহীন নিম্ন-মধ্যবিত্ত, যারা লকডাউনের কারণে কাজে যেতে পারছে না, তাদের বাঁচার বন্দোবস্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে ঘরে ঘরে সরাসরি পণ্য ও অর্থ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হলেও সকলের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। আর সেটা সম্ভব হলেও পর্যাপ্ত কিনা, সে নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
পড়ুন: 'বিক্রি আছে 'স্ট্যাচু অফ ইউনিটি', টাকা খরচ হবে করোনা-চিকিৎসায়', 'আপত্তিকর' বিজ্ঞাপন শপিং সাইটে
এই সামগ্রিক পরিস্থিতিতে যে স্রেফ প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সমাধান করা যাবে না, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজন। তাঁর মতে, ২০০৮-০৯ সালের আর্থিক মন্দার সঙ্গে এই পরিস্থিতির তুলনা করাও ঠিক হবে না। কারণ তখন অর্থনীতির গতি স্লথ হলেও শ্রমিক কাজে যেতে পারত। পরবর্তী সময়ে কৃষিক্ষেত্রেরও বিকাশ হয়েছে এবং আমাদের সরকারও সুস্বাস্থ্যকর অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে অতীতের কোনও মিল নেই। এখন করোনার মতো মহামারীর বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। এই সময়ে কী করণীয়?
পড়ুন: একদিকে মানুষ খেতে পাচ্ছে না, আর আপনাদের খাবারের পোস্ট বন্ধ হচ্ছে না! ট্যুইটারে সোচ্চার সানিয়া
রাজনের পরামর্শ, সরকারের উচিত দক্ষ ও ক্ষমতা রয়েছে এমন লোকজনকে সমবেতভাবে কাজে নিয়োগ করা। বিশ্ব মন্দার বাজারে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও এতে সামিল করতে হবে যারা অতীতে আপতকালীন সময়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন। সঙ্কট মোকাবিলায় অনেক কাজ করতে হবে, মত রাজনের।