১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে ২০০৮ সালের গুজরাত বিস্ফোরণের মুলচক্রী কুরেশি
নয়াদিল্লি: ২০০৮ সালের গুজরাতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ মামলার প্রধান কুচক্রী আব্দুল সুভান কুরেশিকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠাল আদালত।
এক দশক নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে শনিবার সন্ধ্যায় দিল্লি পুলিশের জালে ধরা পড়ে কুরেশি। পূর্ব দিল্লির গাজিপুর থেকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল।পুলিশের কাছে গোপন সূত্রে খবর পৌঁছয় যে, ঘনিষ্ঠ সহযোগীর সঙ্গে দেখা করতে আসছে ৪৬ বছরের কুরেশি। সেইমতো ফাঁদ পাতে তারা। অল্প কিছুক্ষণের গুলির লড়াইয়ের পর কুরেশিকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল।
২০০৮ সালের ২৬ জুলাই পরপর একুশটি বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল আমদাবাদ। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সহ স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়ার সক্রিয় জঙ্গি কুরেশি ২০০৮ সালে গুজরাত বিস্ফোরণের অন্যতম মাথা ছিল।
তার পরের দিন থেকেই পুলিশ কুরেশির খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। কুরেশির নামটি প্রথম ঘোষণা করা হয় গুজরাত পুলিশের তরফে বিস্ফোরণ সংক্রান্ত একটি ই-মেলকে কেন্দ্র করে। প্রসঙ্গত, বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে ই-মেল করা হয় গুজরাত পুলিশকে।
সেই ই-মেল ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ই-মেলটি এক মার্কিন নাগরিকের। এরপরই সন্দেহ জাগে পুলিশের মনে। বিস্ফোরণে যোগ রয়েছে, এই সন্দেহপ্রকাশ করে কুরেশির নাম সন্দেহভাজনের তালিকায় ঘোষণা করা হয়।
তবে শুধু গুজরাত বিস্ফোরণ নয়, কুরেশি বা তৌকিরকে এনআইএ খুঁজছিল দিল্লি এবং বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণ ও ২০০৬ সালে মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনে বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে। কুরেশিকে গ্রেফতার করার জন্যে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রেখেছিল গুজরাত এটিএস এবং আমদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
কুরেশিকে ভারতের বিন লাদেন বলা হয়। যেকোনও ছদ্মবেশ ধরতে সক্ষম কুরেশি একাধিক ভাষায় স্বচ্ছন্দে কথা বলতে পারত। আর সেইজন্যেই একাধিকবার নাগালের মধ্যে পেয়েও পুলিশের হাত ফসকে বেরিয়ে যায় কুরেশি।
পুলিশ জানিয়েছে, ভুয়ো পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন নেপালে আত্মগোপন করেছিল কুরেশি। এর মাঝে ২০১৫-২০১৭ সাল এই সময় সে সৌদিতেও ছিল। শুধু বেশভূষা বা কথায় বার্তায় নয়, তথ্যপ্রযুক্তিতেও বিশেষজ্ঞ ছিল কুরেশি। বোমা বানাতে এক্সপার্ট কুরেশি বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদের বিভিন্ন নামী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজও করেছে।