সেনা-সংঘর্ষে খতম মাসুদ আজহারের ভাইপো তলহা রশিদ সহ ৩ জয়েশ জঙ্গি, উদ্ধার পাক সেনা ব্যবহৃত অত্যাধুনিক এম-৪ কার্বাইন
শ্রীনগর: দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সোমবার বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত জয়েশ-ই-মহম্মদ পান্ডা মাসুদ আজহারের ভাইপো তলহা রশিদ সহ তিন জঙ্গির দেহের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে এম-৪ কার্বাইন। এই প্রথম জঙ্গিদের থেকে এমন অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হল। যা দেখে সেনাবাহিনীর দাবি, এই অস্ত্রই প্রমাণ করছে পাক সেনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে জয়েশের।
জয়েশ জঙ্গিদের থেকে মার্কিন-নির্মিত এম-৪ কার্বাইন উদ্ধার হওয়ার ঘটনাকে ‘উল্লেখজনক’ বলেই মনে করছে ভারত। গতকাল জঙ্গিদমন অভিযানে অংশ নিয়েছিল সেনার ভিক্টর ফোর্স। এই ইউনিটের প্রধান মেজর জেনারেল বি এস রাজু জানান, পাক সেনার স্পেশাল ফোর্স (কম্যান্ডোবাহিনী) এই বিশেষ কার্বাইন ব্যবহার করে থাকে। ফলে, এটা ধরে নেওয়া যেতেই পারে যে, পাক সেনাই এই হাতিয়ার জঙ্গিদের সরবরাহ করেছে।
তিনি বলেন, আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন সেনা এই আগ্নেয়াস্ত্র বিপুুলভাবে ব্যবহার করেছে। এর পাশাপাশি, ন্যাটো-গোষ্টীভুক্ত বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীর কাছেও এই অস্ত্র দেখা যায়। বিশেষ করে, এই অস্ত্র স্পেশাল ফোর্সই ব্যবহার করে থাকে। যেমনটা করে পাক সেনার স্পেশাল ফোর্স। পাক সেনার সঙ্গে জয়েশের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, তা এই বিষয়টি থেকেই পরিষ্কার।
তিনি যোগ করেন, এই প্রথমবার কাশ্মীরে জঙ্গিদের থেকে এই ধরনের অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হল। বলেন, সেনার কাছে খবর ছিল, এধরনের ১০টি রাইফেল জঙ্গিরা সীমান্তের ওপার থেকে এনেছে। এখন একটি উদ্ধার হল। বাকিগুলির জন্য জোর তল্লাশি-অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল পুলওয়ামার কান্দি বেল্টের আগলার গ্রামে সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে খতম হয় তিন জঙ্গি। অভিযানে শহিদ হয়েছেন ব্রহ্মপাল সিংহ নামে ৪৪ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের এক সেনা জওয়ানও। রাজ্য পুলিশ বা সেনার তরফে কেউ মৃত জঙ্গিদের পরিচয় না জানালেও, এদিন সকালে হাসান শাহ নামে এক ব্যক্তি নিজেকে জয়েশ মুখপাত্র বলে দাবি করে বিবৃতি জারি করে বলে, নিহত জঙ্গিদের একজন মৌলানা মাসুদ আজহারের ভাইপো তালাহ রশিদ। বাকি দুজন হল জয়েশ কম্যান্ডার ওয়াসিম আহমেদ গনি ও মেহমুদ ভাই।
এরপরই, কাশ্মীর রেঞ্জের আইজি মুনীর খান তলহা রশিদের পরিচয় স্বীকার করার জন্য জয়েশকে ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, এই প্রথমবার ওরা কোনও জঙ্গির পরিচয় সনাক্ত করল। নিজেদের বলে দাবি করল। পাকিস্তানকে অনুরোধ করা হচ্ছে, তলহার দেহ যেন তারা এবার স্বীকার করে। তিনি যোগ করেন, শীঘ্রই, যথাযথ মাধ্যম মারফত তলহা রশিদের বিষয়টি পাক প্রশাসনের সামনে তোলা হবে।