মোদীর ‘ব্যক্তিগত দুর্নীতি’: রাহুলের অভিযোগ ঘিরে শুরু রাজনীতির বাক-যুদ্ধ
নয়াদিল্লি: নরেন্দ্র মোদীর ‘ব্যক্তিগত দুর্নীতি’ নিয়ে রাহুল গাঁধীর অভিযোগকে ঘিরে সরগরম কেন্দ্রীয় রাজনীতি।
বুধবার মোদীর রাজ্য গুজরাতে দাঁড়িয়ে প্রধানমমন্ত্রীর ‘ব্যক্তিগত দুর্নীতি’ নিয়ে মুখ খোলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি। এরপরই কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়ে দিয়েছে তীব্র বাদানুবাদ। আর সেই দোষারোপ-পাল্টা দোষারোপের মধ্যে যোগ দিয়েছে তৃণমূল, বাম ও আম আদমি পার্টি।
এদিন মেহসেনায় রাহুল অভিযোগ করেন, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ৬ মাসে ৯ বার সহারা ও বিড়লাদের থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন মোদী। তাঁর দাবি, আয়কর দফতরের কাছে সব তথ্য রয়েছে।
রাহুলের এই দাবির কিছুক্ষণের মধ্যেই কংগ্রেসের ‘যুবরাজ’-কে একহাত নেয় বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের মতে, বিভিন্ন রাজ্যে রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস ভরাডুবি হয়েছে। যার ফলে হতাশায় এই সব ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ করছেন তিনি।
মোদীকে ‘গঙ্গাজল’-এর সঙ্গে তুলনা টেনে বিজেপি সাংসদ রবি শংকর প্রসাদ দাবি করেন, মোদী একেবারে ‘পবিত্র’। তিনি আরও জানান, অগুস্তা কাণ্ড থেকে সকলের নজর ঘোরানোর জন্যই এই অভিযোগ করছেন রাহুল।
যদিও, এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিজেপিকে পাল্টা দিয়েছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা জানান, প্রধানমন্ত্রীর উচিত স্বাধীন তদন্তের সামনে দাঁড়ানো।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের প্রচণ্ড শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু, এখানে তাঁর সততা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই সময়ে মন্ত্রীদের আড়ালে না থেকে তাঁর সামনে এসে তদন্তের মুখোমুখি হওয়া উচিত।
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ও প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর প্রসঙ্গে টেনে আনেন সুরজেওয়ালা। তিনি বলেন, অভিযোগ ওঠায় সনিয়া গাঁধী ও লালকৃষ্ণ আডবাণীও লোকসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।
শুধু কংগ্রেস নয়। রাহুলের অভিযোগকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে শুরু করে আম আদমি পার্টি। রাহুলের তোলা অভিযোগকে স্বাগত জানিয়ে এই প্রসঙ্গে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েন।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল আবার সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে গঠিত প্যানেল দিয়ে তদন্তের দাবি জানান। বলেন, শীর্ষ আদালতের উচিত এই বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযোগ খতিয়ে দেখা।
বাদ যায়নি বামেরাও। এদিন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, একদিকে প্রধানমন্ত্রী কালো টাকা ও দুর্নীতি বিরুদ্ধে লড়াই করার ডাক দিচ্ছেন। অন্যদিকে, তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠছে। ইয়েচুরির দাবি, এটাই মোদীর ‘পরিচিত দ্বিচারিতা’। আরেক বাম দল সিপিআই-ও রাহুলের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের দাবি তুলেছে।